Inqilab Logo

বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সন্ধ্যা হলে ভোট গণনা শুরু করে জিন-ভূত

সংলাপে সাবেক সিইসি-ইসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মনে করেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারগণ (ইসি)। এ ছাড়া দিনের ভোট দিনেই গণনা শেষ করার পরামর্শও তারা দিয়েছেন। তা হলে সন্ধ্যার পর জিন-ভূতে ভোট গণনা শুরু করে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সাবেক সিইসি, ইসি ও ইসি সচিবেরা গতকাল সংলাপে অংশ নিয়ে এ মতামত দেন। মতবিনিময় সভায় সাবেক ২৮ জন সিইসি, ইসি ও ইসি সচিব-অতিরিক্ত সচিবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁদের মধ্যে মাত্র ১০ জন অংশ নেন।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‹আপনারা যদি এজ ইট ইজ রাখেন, কোনো চেঞ্জ করতে সাহস না করেন, তাহলে প্রতি ৫০০ জনের জন্য ১টি পোলিং স্টেশন তৈরি করুন। এতে ভোটের সময় কমে যাবে, ৮টা থেকে ১২টার মধ্যে ভোট শেষ হবে। দিনে দিনে ভোট গণনা শেষ করতে পারবেন। যে জিনিসটা সবচেয়ে খারাপ, ভোট গণনার সময় শুরু হয় সন্ধ্যার পর। আর আমরা দেখি সন্ধ্যার পর জিন, ভূত যা কিছু আছে সব দেখা যায়। বাতি নিভতে শুরু করলে শুরু হয় তাদের আনাগোনা।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, এবারের নির্বাচনে সব দল যদি না আসে, তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং কীভাবে আনবেন, তা আপনারা কী অফার করবেন, তার ওপর নির্ভর করবে। আমার সময়ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ওয়াজ প্রবলেমেটিক (সমস্যা ছিল)। তাদের আনতে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। এখন তারা যেসব কথাবার্তা বলছে, তাতে তো মনে হয়, তারা নির্বাচনে যেতে রাজি নয়।
সদ্য সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ দরকার। আমি জিতব, অবশ্যই জিতব এই মানসিকতা থেকে বের হতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগের দরকার নেই। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী কোনো কাজে আসে বলে আমি মনে করি না।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ বলেন, সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সবাই মনে করবে, নির্বাচন ভালো হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ইনভলব (যুক্ত) হতে পারবে না। যদি তারা ইনভলব হয়ে যায়, তাহলে দেখবে যে কিছুই করা যাচ্ছে না। আমাদের সময় যারা নির্বাচন বর্জন করেছিল, তাদের আনার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেটা হয়নি। অনেক সহিংসতা হয়েছে। ওই সময় নির্বাচন না হলে ওই সময় সহিংসতা আরও হতো। যারা সরকারি দল, তারা চিন্তা করবে দলগুলোকে কীভাবে নির্বাচনে আনা যায়।
তবে যেকোনো মূল্যে সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এটা করতে সক্ষম হলে ৮০ ভাগ কাজ হয়ে গেল।

গতকাল সাবেক সিইসি, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের সঙ্গে সংলাপ শেষে এ কথা বলেন তিনি। সকালে হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সংলাপ শুরু হয়। এতে যোগ দেন সাবেক সিইসি বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ, ড. এ টি এম শামসুল হুদা ও কে এম নূরুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, মাহবুব তালুকদার, মো. শাহনেওয়াজ, আবু হাফিজ, সাবেক সচিব মোহাম্মদ সাদিক, জেসমিন টুলি ও মো. আবদুল্লাহসহ কয়েকজন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আইনে বলা আছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনী এলাকায় থেকে প্রত্যক্ষ ও পরেক্ষভাবে নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে পারবেন না। কিন্তু কুমিল্লার মাননীয় সংসদ সদস্য তেমনটি করেছিলেন বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এজন্য আমরা ওনাকে চিঠি দিয়েছি। আমরা ওনাকে স্থান ত্যাগ করতে বলেছি। তবে উনি এখনো স্থান ত্যাগ করেননি। এক্ষেত্রে একজন মাননীয় সংসদ সদস্যকে এলাকা ছাড়া করতে জোর করার ক্ষমতা তো ইসির নেই। আমরা ওনাকে বলতে পারি আইনে এটা আছে, আপনি এলাকা থেকে সরে থাকেন। তাহলে নির্বাচনটা ভালো হয়। একজন সংসদ সদস্য যদি সেটাকে সম্মান না দেখান, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না। ওনাকে চিঠি দিয়ে বলাটাই পর্যাপ্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিইসি-ইসি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ