Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইনের চেয়ে প্রয়োগকারী ও বিচারব্যবস্থার দোষ বেশি

ঘাদানিকের সেমিনারে মোস্তফা জব্বার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম

গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হয়নি বলে দাবি করছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের কোথায়, কোন জায়গায় আমরা বাধা দিয়েছি? আইন নয় বরং আইনের চেয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার ব্যবস্থার দোষ বেশি। গতকাল শনিবার জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভুক্তভোগী ও প্রকৃত অপরাধী: ভিক্টিমদের সম্মেলন ও আলোচনা সভা’র প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘দেশের ২০৭ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি যদি অপরাধ করেন, মামলা হবে। আপনি যদি রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার বিরুদ্ধে কথা বলেন, তার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। এ আইন না করলে আপনার ডিজিটাল নিরাপত্তা কে দিতো?
দলীয় সমালোচনা ঠেকাতে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের যেকোনও নাগরিকের বিচার চাওয়ার অধিকার আছে। আইনের অপপ্রয়োগে আইনের চেয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার ব্যবস্থার দোষ বেশি। আমরা দেখতে পাই ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই ধর্মীয় অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত। আমাদের সিআরপিসিতে একটি ধারা আছে। সে ধারা অনুযায়ী আপনি যদি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেন তাহলে মামলা হতে পারে। সেই অনুপাতে আমাদের তৎকালীন আইন সচিব আইনটির (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) খসড়া দেখেছেন। সাংবাদিকদের একটু ক্ষোভ আছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এটি যৌক্তিক নয়। তিনি আরও বলেন, আইনটির যখন খসড়া হয়, তখন সংসদীয় কমিটি পর্যন্ত হুবহু গেছে। কিন্তু পুলিশ যখন আমাকে এসে জানায় যখন কোনও ঘটনা ঘটবে তার জন্য আদালতে গিয়ে গ্রেফতার আদেশ আনতে আনতে ঘটনা শেষ হয়ে যাবে। তখন একজন সংশোধনী আনেন এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে তা গ্রহণ করি। বলা হয়, পুলিশের এসআইয়ের ওপরে যিনি থাকবেন তিনি পরিস্থিতির আলোকে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এ আইনের মূল লক্ষ্য ছিল অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি যাতে না ঘটে সে ব্যবস্থা নেওয়া। বাকি সব আইন একই রয়েছে। সমস্যার মূলে আছে আইনের অপপ্রয়োগ। মন্ত্রী বলেন, অপপ্রয়োগের মূল কারণ রাজনৈতিক। আইন চিরস্থায়ী দলিল নয়। সংবিধান যদি বদলাতে পারি, তবে আইন পরিবর্তনও জটিল কিছু না।
‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমানে সমাজ সংস্কৃতি ধ্বংসের চেষ্টা করা হচ্ছে’ দাবি করে মন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্ট আলোকে বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি টিকটক অ্যাকাউন্ট আছে। এগুলো দিয়ে সমাজ সংস্কৃতিকে ধ্বংসের সব চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, আমরা সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও কমিশনের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারে থাকলেও তা এখনও প্রণয়ন হয়নি। আমরা আরও কিছুদিন দেখে আবার দাবি জানাবো। অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও কমিশন করবো। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানান শাহরিয়ার কবির।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি সামছুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ প্রমূখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট লেখক মারুফ রসুল প্রমূখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইনের চেয়ে প্রয়োগকারী ও বিচারব্যবস্থার দোষ বেশি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ