পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
'পরিবেশ, পুষ্টি ও আর্থসামাজিক ক্ষমতায়নে টেকসই ডেইরী সেক্টর' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশে আজ বুধবার (১ জুন) পালিত হবে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২২।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দুগ্ধ দিবস পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ দিনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে অর্থাৎ দেশের ৬১টি জেলায় প্রচারণা, র্যালী, আলোচনা সভা, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, টক শো, মেলা, শিক্ষার্থীদের দুগ্ধ পান, ডেইরী আইকন-২০২১ পুরষ্কার দেযা হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দুধের মূল উৎস গরু। ৯০ শতাংশ দুধ আসে গরু থেকে, আট শতাংশ আসে ছাগল থেকে এবং দুই শতাংশ আসে মহিষ থেকে। ১৯৮৯-৯০ থেকে ২০০১-০২ অর্থবছর পর্যন্ত দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ২.৪ শতাংশ, ২০০৯-১০ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ১৬.৪৪ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে দুধের উৎপাদন ছিল ২৩.৭০ লাখ টন, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে উন্নীত হয়েছে ১০৬.৮০ লাখ টনে।
বর্তমানে মাথাপিছু দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ১৯৩.৩৮ মিলিলিটার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৫২.০২ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে দুধ উৎপাদন হয় ১০৬.৮০ লাখ টন।২০২০-২০২১ অর্খবছরে৷ মোট চাহিদা ১৫৪.৯৪ লাখ মে.টন বিপরীতে উৎপাদন ১১৯.৮৫ লাখ মে.টন। জন প্রতি প্রাপ্যতার দিক দিয়ে দিনে ১৯৩.৩৮ মিলি. এহিসেবে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩.০৫ লাখ মে.টন।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে ক্রমবর্ধমান জিডিপিতে প্রাণিসম্পদের অবদান ৩ দশমিক ২১ শতাংশ। দুধ থেকে বিভিন্ন উপায়ে আধুনিক প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে নানা ধরনের দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদন করা হচ্ছে যার সাথে জড়িত আছে বিশাল শ্রমশক্তি। দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রত্যক্ষভাবে ২১ শতাংশ এবং পরোক্ষভাবে ৫০ শতাংশ প্রাণিসম্পদের উপর নির্ভরশীল।
মোট আমিষের ৮ শতাংশ আসে দুগ্ধ সেক্টর থেকে। গত দশ বছরে দেশে দুধ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় পাঁচগুণ। ডেইরি ইন্ডাস্ট্রি এখন দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্প। এই ইন্ডাস্ট্রি দেশের মানুষের পুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনে যে অবদান রাখছে, তা অনস্বীকার্য।
এ দিবসকে কেন্দ্রকরে সারা দেশেই নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। কর্মসূচির মধ্যে দেশের প্রকল্পভূক্ত ৬১টি জেলায় জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের নেতৃত্বে ১লা জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালনে র্যালী, প্রচার প্রচারণা, এক বা একাধিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়/এতিমখামানায় ছাত্রদের দুধ বা দুধের পণ্য খাওয়ানো, সভা/সেমিনার আয়োজন করা, রচনা বা কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা, পুরস্কার বিতরণ করা ইত্যাদি কার্যক্রম রয়েছে।
আজ ১লা জুন সকালে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২২ উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী আয়োজন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রতিনিধিগণ উক্ত র্যালীতে অংশ নেবেন। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ঢাকায় কেআইবি কনভেনশন হলে (নীচ তলায়) দিনব্যাপী প্রাণিজাত পণ্য প্রদর্শনী আয়োজন করা হবে। যেখানে দেশের খ্যাতনামা ও অন্যান্য নতুন নতুন উদ্যোক্তাগণ অংশ নেবেন এবং দিনশেষে মূল্যায়ন সাপেক্ষে তিনটি স্টলকে পুরস্কৃত করা হবে।
কেআইবি অডিটোরিয়ামে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২২ উদযাপন ও ডেইরী আইকন সেলিব্রেশন উপলক্ষে ১টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শ ম রেজাইল করিম মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় প্রধান অতিথি, ড. মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, সম্মানিত সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় বিশেষ অতিথি, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এগ্রিকিালচার এক্সপার্ট ক্রিশ্চিয়ান বার্জার এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন গেস্ট অব্ অনার হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ডাঃ মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।
ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্পটে রোডসাইড ব্রান্ডিং করা, বিজ্ঞাপণ প্রচার, ১টি টেলিভিশনে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস বিষয়ে টকশো আয়োজন করা হবে।
ডেইরী আইকন-২০২১ পুরস্কার
ডেইরী আইকন-২০২১ হিসেবে ৩৯ জন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কৃত দেয়া হবে। চারটি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটেগরীতে সর্বমোট ৩৯ জন উদ্যোক্তা এই পুরস্কার পাবেন। প্রতিটি পুরস্কারের মূল্যমান এক লক্ষ টাকা। এছাড়াও ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হবে।
গরু ও ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। দুধ উৎপাদনের বৈশ্বিক সূচকেও কয়েক বছর ধরে এ দেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বেশ কয়েক বছর ধরে ছাগলের দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে মোট দুধ উৎপাদনে দেশের অবস্থান বিশ্বে ২৩তম। গরুর দুধ উৎপাদন গত ১০ বছরে বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ।
খামারিরাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের অভাব, মানসম্পন্ন দুধ সরবরাহ না করা, ভেটেরিনারি চিকিৎসক সংকট, দুধ প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষণ করতে না পারা, ন্যায্য মূল্য না পাওয়া এবং বিদ্যুতের মূল্য, গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি দুগ্ধ উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) মহাসচিব শাহ এমরান বলেন, প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুধের চাহিদা। ভারতে খামারিরা সরকারি ভর্তুকি পায়। বাংলাদেশে খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ, বিপণন ও ভর্তুকি দিলে এ শিল্পে বিপ্লব ঘটবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।