Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শাহজালালে অত্যাধুনিক রাডার স্থাপন সময়ের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১০:০৩ এএম, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬

দীর্ঘদিনের পুরনো রাডারের কারণে ভয়াবহ ঝুঁকিপুর্ণ ও বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। পুরনো এ রাডারের মাধ্যমে বাংলাদেশের আকাশসীমায় উড়োজাহাজ দেখতে সমস্যা হচ্ছে। রাডারে ধরা পড়ছে না আকাশে উড়ন্ত উড়োজাহাজ। জানা যাচ্ছে না এদের অবস্থান। প্রায় এমন ঘটনা ঘটছে। ফলে সার্বক্ষণিক আতঙ্কের মধ্যেই থাকতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষও। নড়বড়ে এবং ত্রুটিপূর্ণ  রাডারের মাধ্যম্যেই বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশের আকাশসীমায় উড়োজাহাজ চলাচল করছে। রাডার সংকটের কারণে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এমনটি জানিয়েছেন বিমানবন্দরে কর্মরত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, জরুরি ভিত্তিতে অত্যাধুনিক রাডার ও রাডার টাওয়ার স্থাপন করতে হবে। তা না হলে যে কোনো সময় বিমান অবতরণ উড্ডয়ন পরিস্থিতিতে বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে দ্রুত অত্যাধুনিক রাডার স্থাপন এখন সময়ের দাবি। গত তিন দশক পরেও নতুন রাডার স্থাপন না করায় বিমানবন্দর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান রাডার ও কন্ট্রোল টাওয়ার সিস্টেম বহু পুরনো। তাই এটি দিয়ে সব এয়ারলাইনসের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন সমুদ্রসীমায় কোনো এয়ারক্রাফট এলেও এই রাডার তা ধরতে পারে না। এ অবস্থায় দেশ যেমন নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে, তেমন বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার আকাশপথে চলাচল করা ভিনদেশি ফ্লাইট থেকেও বিপুল অঙ্কের ওভারফ্লাইং নেভিগেশন ফি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নতুন সমুদ্রসীমার ওপর দিয়ে যে কোনো এয়ারক্রাফট প্রবেশ করলেই বাংলাদেশ তার ওপর চার্জ আরোপ করতে পারবে। এতে সিভিল এভিয়েশনের আয় আরও ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়বে। সবচেয়ে বড় বিষয় পিপিপি প্রকল্পে এমন একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এডিএসবি চালু করা হবে, যা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়াও গোটা সমুদ্রসীমা এলাকার ছবি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ধারণ করা যাবে। তখন প্রতিটি উড়োজাহাজ চলাচলের নির্ভুল চিত্র পাওয়া যাবে।
সূত্র জানায়, বর্তমান রাডার সিস্টেম বর্ধিত সমুদ্রসীমার ওপর দিয়ে যেসব এয়ারক্রাফট যাচ্ছে সেগুলো ধরতে পারে না। এসব এয়ারক্রাফটের ওপর কোনো চার্জও ধরা যাচ্ছে না। বহুকালের পুরনো রাডারের কারণে এখন দেশের আকাশসীমার মধ্যেও অনেক এয়ারক্রাফটের অবস্থান ধরা যায় না। সিভিল এভিয়েশন বর্তমানে শুধু ওভারফ্লাইং খাত থেকে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা আয় করছে। নতুন সমুদ্রসীমার ওপর অ্যারোনটিক্যাল চার্জ আদায় কার্যকর হলে শুধু এ খাতের আয় বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। এ অবস্থায় দ্রুত দেশের বর্ধিত সমুদ্রসীমার ওপর দিয়ে যাওয়া বিদেশি উড়োজাহাজের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু অত্যাধুনিক রাডার না থাকায় বর্তমানে তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভারতের কাছ থেকে সাগরের নতুন যে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার অংশ বাংলাদেশ পেয়েছে, ওই এলাকা দিয়েই বিশ্বের অধিকাংশ এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সীমানার ওপর দিয়ে দিনে ৪০০ বিদেশি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করছে। ভারতের কাছ থেকে নতুন অংশ পাওয়ায় এ ফ্লাইট সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হবে। এতদিন ভারত ওইসব ফ্লাইটের কাছ থেকে ওভারফ্লাইং ফি আদায় করেছে। বাংলাদেশ এতদিন ধরেই বঞ্চিত এ আয় থেকে।
সিভিল এভিয়েশনের কমিউনিকেশন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রাডার ব্যবস্থা। দ্রুত প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি রাডার স্থাপন না করলে যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে শাহজালালের উড়োজাহাজ চলাচল ব্যবস্থা কিংবা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল। রাডারটি প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি রাডারের সমন্বয়ে গঠিত। ফরাসি সরকারের অনুদানে ১৯৮৪ সালে প্রাইমারি রাডার এবং ১৯৮৬ সালে সেকেন্ডারি রাডার (১০ বৎসর আয়ুষ্কাল সম্পন্ন) স্থাপন করা হয়। ১৯৮৭ সালে ৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং ১৯৯৪ সালে ৪ কোটি ৫ লাখ টাকা ও ২০০৮ সালে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্তমান রাডারটি আপগ্রেড করা হয়েছে। কিন্তু আধুনিক চাহিদার বিপরীতে বিদ্যমান রাডার ব্যবস্থাটি এখন আর চাহিদা পূরণ করতে পারছে না।   বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান রাডার মেরামত বা আপগ্রেড করা হলে অর্থের অপচয় করা ছাড়া আর কোনো লাভ বয়ে আনবে না, কারণ বর্তমান রাডার ব্যবস্থাপনা আন্তর্জাতিক চাহিদার চেয়ে পুরনো প্রযুক্তির হওয়ায় আমাদের আকাশসীমা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েই যাবে। এরই ধারাবাহিকতায় বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১৭/০৪/২০১২ তারিখে পিপিপি-এর মাধ্যমে রাডার ব্যবস্থাপনার প্রকল্প সম্পন্ন করার জন্য একটি প্রস্তাব পায়। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে এবং এককালীন বিপুল পরিমাণ আর্থিক ব্যয়ের সাশ্রয় বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অগ্রাধিধকার ভিত্তিতে নতুন রাডারসহ এয়ার ট্্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংস্কারের এই প্রকল্পটি পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী সিএএবি কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর দরপত্রের স্পেসিফিকেশন তৈরির জন্য পিপিপি অফিসের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক কয়েকটি কমিটি করে দেন। কমিটি আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন সংস্থার সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে দরপত্রের স্পেসিফিকেশন দাখিল করে। দীর্ঘ ৭ মাস সময়ব্যাপী সিএএবি, পিপিপি সেল ও আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন আইকাও এর প্রতিনিধিরা দরপত্রের ডকুমেন্ট প্রস্তুত করেন। ২০১৪ সালের ২৮ মার্চ রিকোয়েস্ট অফ ইন্টারেস্ট প্রকাশিত হয় এবং এতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায় এবং প্রায় ১০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করে। দরপত্র প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এবং গঠনমূলক করার জন্য এভারশেড, ইউকে দরপত্রটির ডকুমেন্টের লিগ্যাল ভেটিং করেন। গত ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন দরপত্রটির ডকুমেন্টের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এরপর ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে দরপত্র জমাকরনের তারিখ প্রায় সাতবার পেছানোর পর অবশেষে চলতি বছরের ২২ জুন সিএএবি নির্দিষ্ট দপ্তরে দরপত্র জমার তারিখ ধার্য করেন। দরপত্র আহবানের পর ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর   সম্ভাব্য ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে প্রি-বিড সভা অনুিষ্ঠত হয় এবং দেশী-বিদেশী প্রায় ১৭টি সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন। প্রি-বিড সভা শেষে সিএএবি সাইট ভিসিটেরও আয়োজন করে এবং এতে ১৬টি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এই দরপত্রের প্রাথমিক বাছাইয়ে ২টি দরপত্র প্রস্তাব অনুপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় বাকি ২টি প্রতিষ্ঠান কারিগরি মূল্যায়নের জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়। দরপত্রের বিধিমোতাবেক অপনীত হওয়ার কারণ সম্পর্কে তাদের আলোকপাত করার লক্ষ্যে সিএএবি ও পিপিপি সেল এর সমন্বয়ে গঠিত একটি ডি-ব্রিফিং সেশনে উপস্থিত হওয়ার জন্য অপনীত ২টি প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রন জানানো হয়। এই সেশনে অপনীত ১টি প্রতিষ্ঠান অনুপস্থিত থাকে। পরবর্তীতে ডি-ব্রিফিং সেশনে অনুপস্থিত সেই প্রতিষ্ঠান তাদের দরপত্র পূনর্বিবেচনার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে, সেটিও নাকচ হয়। বর্তমানে নিরাপদ আকাশসীমা নিশ্চিত করার স্বার্থে গৃহিত এই বৃহৎ প্রকল্পটির দরপত্র কারিগরি মূল্যায়নের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এই মূল্যায়ন সিএএবি এর বিভিন্ন শাখার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, অন্যান্য সরকারি সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা সম্পন্ন করেছেন। ৩ সদস্যবিশিষ্ট মোট ৯টি কারিগরি সাব কমিটির মোট ২৭ জন দক্ষ অফিসার এবং কমিটিসমূহ তাদের রিপোর্টও দাখিল করেছেন। আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন-এর ২ জন প্রতিনিধি দেশে এসে কারিগরি সাব কমিটিসমূহের রিপোর্টগুলোর পর্যালোচনাপূর্বক তাদের মতামত প্রদান করেছেন। কারিগরি মূল্যায়নে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান উত্তীর্ণ হওয়ায় এর আর্থিক প্রস্তাবও উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্ত এরপরেও রাডার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এজন্য বিমানবন্দরে ও বাংলাদেশের আকাশসীমা দিন দিন আরো ঝঁকিপূর্ণ হচ্ছে।
সিভিল এভিয়েশন জানায়, বর্তমানে কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নের রিপোর্ট সিএএবি-এর চেয়ারম্যান কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে এবং বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করা যায় ডিসেম্বর ২০১৬ নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে। পিপিপি অফিসও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে এ হিসেবেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রকল্পটিতে সিএএবি কে সহয়তার জন্য নভেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন থেকে ৩য় বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে।
২০১৭ সালের মধ্যে বিশ্বের সব বিমান বন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) এয়ার ট্রাফ্রিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম) ব্যবস্থাকে বাধ্যতামূলকভাবে যুগোপযুগী করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন গাইড লাইন্স অনুযায়ী সিএএবি এই প্রকল্প হাতে নেয়। এই প্রকল্পে প্রাইমারী ও সেকেন্ডারি রাডার স্থাপন, ওয়াইড এরিয়া মাল্টিলেটারেশন (ডব্লিউএএম) ও এডিএস-বি স্থাপন, এটিএস সেন্টার আপগ্রেড, নতুন কন্ট্রোল টাওয়ার বিল্ডিং স্থাপন, ভিএইচএস, এটেন্ডেট ভিএইচএস, এইচএফ, মাস্টার ক্লক, আরসিএজি, রেকর্ডিং সিস্টেম, ভিসিসিএস স্থাপন করা হবে।
একাধিক সূত্র জানায়, আকাশসীমায় ১০ হাজার ফুট ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া উড়োজাহাজের তথ্য পুরনো রাডার দিয়ে পাওয়া যায়। এর ওপর দিয়ে উড়ে গেলেই সে তথ্য আর পাওয়া যায় না। ইতিপূর্বে ফিলিপাইন থেকে আসা একটি উড়োজাহাজ শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে অবতরণ করলেও রাডারে তা ধরা পড়েনি। যখন ধরা পড়ল ততক্ষণে উড়োজাহাজটি অবতরণ করে ফেলে। এ ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বর্তমান রাডার ব্যবস্থা অনেক পুরনো। ফলে দিন দিন ঝুঁকি বাড়ছে।
সিভিল এভিয়েশন সূত্র জানায়, আগামী ৫০ বছরের জন্য নিরাপদ আকাশসীমা নিশ্চিতে সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নতুন রাডারসহ এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংস্কারের এ প্রকল্পটি পিপিপির মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত পিপিপি অফিস এবং সিএএবির তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের ২২ জুন এ-সংক্রান্ত দরপত্র জমা পড়ে। কিন্তু দরপত্র জমাদানের পরই দেশি-বিদেশি সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে। এমনকি আদালতের আশ্রয় নিয়ে একই বিষয়ের ওপর বার বার মামলা করে কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সিভিল এভিয়েশন জানায়, সর্বাধুনিক রাডার ও কন্ট্রোল টাওয়ার স্থাপনের এ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর দফতরাধীন পিপিপি সেলের প্রথম আনসলিসিটেড প্রকল্প। পিপিপির মাধ্যমে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে সিএএবির কোনো অর্থ ব্যয় হবে না বরং আগামী ২০ বছরে সরকার ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করতে পারবে। পিপিপির আওতায় ১০ বছর পর্যন্ত বিনামূল্যে রাডার রক্ষণাবেক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ ও রাডার অপারেটর এবং সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ আনুমানিক ১৫০ জনকে দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। যারা প্রকল্পটির কার্যাদেশ পাবেন তাদের আগামী ১০ বছরের মধ্যে তাদের খরচসহ লাভের একটি অংশ দেওয়া হবে। কারিগরি মূল্যায়নে উত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠান মেসার্স করিম অ্যাসোসিয়েটস তাদের আর্থিক প্রস্তাবে ১০ বছরের জন্য মোট ১ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করেছে, যার নিট মূল্য আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা। অথচ এ প্রকল্পটি সিএএবি কর্তৃপক্ষ পিপিপি ছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করলে ব্যয় দাঁড়াত ৮০০ কোটি টাকারও বেশি। পিপিপির মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সিএএবি তথা সরকারের প্রাক্কলিত অর্জন হবে ন্যূনতম ৩০০ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে সিএএবি প্রকল্পের এই ৭০০ কোটি টাকা ব্যাংকে এফডিআর হিসেবে গচ্ছিত রাখলে পিপিপি খাতে ১ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা খরচের পরও সিএএবির অর্জন হবে ২ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পে যে খরচ উল্লেখ করা হয়েছে, তার প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখতে ঢাকায় অবস্থান করছেন আইকাও টিসিবি এক্সপার্ট মি. নিকস গামভিবিস। তিনি এ প্রকল্পের প্রস্তাব মূল্যায়ন করে মতামত দেওয়ার পরই ফের পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে; যাতে এ নিয়ে কোনো বিতর্ক না থাকে। আন্তর্জাতিকভাবেও প্রকল্পটির স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্যই এমন উদ্যোগ নিয়েছে সিভিল এভিয়েশন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাহজালাল

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ