পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বরের বসতি হাউজিংয়ের বাসা থেকে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী ইফাজ আহমেদ চৌধুরী গত ১১ এপ্রিল বের হন। এরপর তিনি প্রথমে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডে অবস্থিত একটি প্রাণী হাসপাতালের ভেতর ৩০ মিনিট থাকেন। সেখান থেকে মিরপুর-২ নম্বরের সনি সিনেমা হলে যান। তারপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ ইফাজের সন্ধান চায় তার পরিবার। একে একে ২৭ দিন পার হলেও নিখোঁজ ইফাজের সন্ধান এখনও পায়নি পরিবার। পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ তাকে উদ্ধারে তদন্ত করছে। এ বিষয়ে ইফাজের মা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, র্যাব ও ডিবিসহ একাধিকবার মিরপুর থানায় গিয়েও ছেলের খোঁজ পাইনি।
এ ঘটনায় গত ১১ এপ্রিল মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ইফাজের মা। তিনি ধারণা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তার ছেলেকে তুলে নিয়ে যেতে পারে। তিনি নিখোঁজের দিনের সিসিটিভি ফুটেজে ছেলের আশপাশে একটি কালো মাইক্রোবাসকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন। তার ধারণা ওই কালো মাইক্রোবাসটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হতে পারে।
তিনি জানান, তার ছেলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই এবং সে অপরাধ জগতের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা নেই। তাহলে তার ছেলেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নেবে কেন, প্রশ্ন জান্নাতুল ফেরদৌসের।
তিনি বলেন, মিরপুর-২ নম্বরের বসতি হাউজিংয়ে গত ১৪ বছর ধরে থাকি। আমার স্বামী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। ইফাজ আমাদের একমাত্র ছেলে, তার বিইউবিটির কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করে তৃতীয় বর্ষে ওঠার কথা। গত ৯ মাস আগে ইফাজ বিয়ে করেছে, তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা।
ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে ইফাজের মা বলেন, গত ১১ এপ্রিল ১২টা ৪৫ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডের একটি প্রাণী হাসপাতালে যায় ইফাজ। সেখানে কেন কি গিয়েছিল আমরা তা জানি না। সেখানে ৩০ মিনিট থাকার পর সনি সিনেমা হলের সামনে এসে সে নিখোঁজ হয়ে যায়। বাসা থেকে বের হওয়ার পর ইফাজ যেখানে যেখানে গিয়েছে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা যায়, মিরপুর-১ নম্বর থেকে সনি সিনেমাহল পর্যন্ত তাকে একটি কালো মাইক্রোবাস অনুসরণ করেছে। পরে থানা, ডিবি ও র্যাবের কাছে যাই একাধিকবার। কিন্তু তারা আমার ছেলের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ট্র্যাকিং করে পাচ্ছে না আমার ছেলে কোথায় আছে, সেটা আমাকে জানানো হয়েছে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও দুই বার গিয়েছিলাম ছেলের সন্ধানের জন্য। থানা পুলিশ আমাকে বলেছে, ইফাজ নাকি স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে পারে। তবে স্ত্রীর সঙ্গে আমার ছেলের কোনো ঝামেলা ছিল না।
জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ডিবি আমার কাছে আকারে ইঙ্গিতে জানার চেষ্টা করেছে কোনো উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে আমারা ছেলে জড়িত কি না। তারা বলেছে, এ ধরনের কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলে একা একা বাসা থেকে চলে যেতে পারে। আর যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো ইউনিট নিয়ে থাকে তাহলে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেবে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে। আর থাকলে মামলা দিয়ে আদালতে তুলবে।
তিনি বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমাদের হাউজিং এলাকা থেকে আরও দুই জনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অফিসে গিয়েছি। সেখানে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা ওই কালো মাইক্রোবাসটির মতো অনেক গাড়ি দেখেছি। আমার ধারণা ওই মাইক্রোবাসটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হতে পারে এবং তারাই আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে।
জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছেলেটার ফোন নেই সঙ্গে। তাই তাকে ট্রেস করতে পারছি না। ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিখোঁজ ছেলেটির অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করছি আমরা। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত করার বিষয়টি অনেক সময় সাপেক্ষ। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছি, সে বাসা থেকে বের হয়ে সনি সিনেমা হলের সামনে দিয়ে রাইনখোলার একটি প্রাণী হাসপাতালে যায়। সেখান থেকে সে আবার সনি সিনেমা হল পর্যন্ত আসে। এরপর থেকে আর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ঈদের কারণে কয়েকদিন অফিস বন্ধ ছিল, আমরা আবার বিভিন্ন রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।