Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

টাকার মান কমানো হচ্ছে

প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের : গত কয়েক মাস ধরে ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী থাকা স্থানীয় মুদ্রা টাকার মান কমানো উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে আবার ঘুরে দাঁড়াবে প্রবাসী আয়, বাড়বে রপ্তানি আয়ওÑ এমন আশা বিশ্লেষকদের। কারণ, টাকার মান কমানো হলে বেশি অর্থ পাবেন প্রবাসীদের স্বজন ও রপ্তানিকারকরা। ইতোমধ্যে এই উদ্যোগের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মুদ্রা বাজারে। গত কয়েক দিন ধরেই একটু একটু করে বাড়ছে ডলারের মান।
ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার ৮০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত কয়েক মাস ধরে প্রবাসী আয় হুন্ডির মাধ্যমে আসা বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত জুলাই মাস থেকে ডলারের বিনিময় হার ৭৮ টাকা ৪০ পয়সার আশপাশে অবস্থান করছে। অথচ কার্ব মার্কেটে (খোলা বাজারে) এই হার ৮২ টাকার ওপরে।
খোলা বাজারে বেশি অর্থ পাওয়ায় প্রবাসীরা গত চার-পাঁচ মাস ধরে অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ প্রেরণে উৎসাহিত করার জন্যই টাকার মান কমানোর উদ্যোগ। এতে রপ্তানিকারকরাও উপকৃত হবেন। কারণ তারা রপ্তানি থেকে বেশি অর্থ পাবেন যা বাড়াবে দেশের রপ্তানি আয়। গতকাল আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ৭৮ টাকা ৫১ পয়সায়। আগের দিন (সোমবার) এই রেট ছিল ৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। গত জুলাইয়ের শেষে এই দর ছিল ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা।
প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ চলতি অর্থ-বছরের শুরু থেকেই কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেমিট্যান্স সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রেমিট্যান্স এসেছে ৪২৫ কোটি ৫৭ লাখ (৪.২৫ বিলিয়ন) ডলার। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ কম। ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে ৫০৩ কোটি ২১ লাখ (৫.০৩ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১০০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। আগস্ট মাসে তা বেড়ে ১১৮ কোটি ৩৬ লাখ ডলার হয়েছিল। তারপর থেকেই কমছে রেমিটেন্স। সেপ্টেম্বরে তা কমে ১০৫ কোটি ৫৬ লাখ ডলারে নেমে আসে। অক্টোবরে তা আরও কমে ১০১ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ কমে যাওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও দায়ী করেছেন হুন্ডিকে। তবে ডলারের দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিটেন্সে আবার গতির আশা করছেন তিনি।
অর্থনীতিবিদরাও রেমিটেন্স (প্রবাসী আয়) কমার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন হুন্ডির কথা। অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতি গবেষক জায়েদ বখত বলেন, বিভিন্ন দেশে মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে লাভের আশায় হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।
আগে প্রবাসীরা ১ ডলার পাঠালে যে টাকা পাওয়া যেত, এখন ডলারের অবমূল্যায়নের কারণে কম টাকা পাওয়া যাচ্ছে। সে জন্যই একটু বেশি টাকার প্রত্যাশায় অনেক প্রবাসী এখন হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন। কারণ হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে বরাবরই দর ব্যাংকের চেয়ে বেশি বিনিময় মূল্য পাওয়া যায়।
তবে টাকার অবমূল্যায়ন করা হলে এই পসিস্থিতি পাল্টে যাবে বলে মত দেন তিনি। বলেন, শুধু প্রবাসী আয় নয়, এতে রপ্তানি আয়ও বাড়বে।



 

Show all comments
  • Azam Ali ১৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:০২ এএম says : 1
    অামিও অনেক ক্ষতির সম্মুখিন
    Total Reply(0) Reply
  • সিফাত ১৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০৫ পিএম says : 0
    দেখা যাক এতে লাভ হয় না ক্ষতি হয়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টাকার মান কমানো হচ্ছে

১৬ নভেম্বর, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ