পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে ‘গণহত্যা’ মামলায় সাক্ষ্য
চট্টগ্রাম ব্যুরো : এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে বিনা উসকানিতে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের প্রবীণ সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরী। আলোচিত ‘গণহত্যা’ মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) আদালতে তিনি আরও বলেন, সেদিন পুলিশের গুলির নিশানা ছিল শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাক।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মীর রহুল আমিনের আদালতে ২৮ বছর আগের ওই ঘটনার সাক্ষ্য দেন তিনি। তখন তিনি দৈনিক আজাদীর সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে হিসেবে তিনি ছিলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। গতকাল একই আদালতে জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালাও সাক্ষ্য দেন।
বিভাগীয় বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী এবং সুভাষ চন্দ্র লালার সাক্ষ্যের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এই মামলায় ৪১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আদালত ৩১ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
আদালতে হেলাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঘটনার দিন তিনি রিপোর্টার হিসেবে তৎকালীন আট দলীয় জোটের নেত্রী শেখ হাসিনার লালদীঘি ময়দানের জনসভার সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। বিমানবন্দর থেকে শেখ হাসিনা জনসভাস্থলে আসার সময় অগ্রবর্তী দল হিসেবে তিনি স্কুটারে ছিলেন। এ সময় পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ছিল। কোতোয়ালি মোড়ে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাক পৌঁছানোর পর হেলাল উদ্দিন চৌধুরী স্কুটার থেকে নেমে যান। এ সময় কোতোয়ালি মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংকের আশপাশের এলাকায় কোনো ধরনের উত্তেজনা দেখেন নি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ট্রাকটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আসার পর পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল, পরে লাঠিচার্জ ও গুলি ছুঁড়ে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশের নালায় পড়ে যান। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ট্রাকটি ঘিরে রাখে। ট্রাকের হেলপার আব্দুল মান্নান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মরে যায়। বেশ কয়েকজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিল।
এ সময় শেখ হাসিনা বারবার মাইকে গুলি বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছিলেন। হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি কোতোয়ালির ওসি সাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞেস করি- শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গুলি চালালেন কেন? তিনি বলেন ওপরের অর্ডার আছে। পিআই জে সি ম-ল বলেন, পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে অ্যাকশনে গিয়েছেন তারা।
স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় নগরীর লালদিঘি ময়দানে সমাবেশে যাবার পথে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে নিহত হন ২৪ জন। আহত হন কমপক্ষে দুই শতাধিক মানুষ।
আদালত সূত্র জানায়, এরশাদ সরকারের পতন হলে ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে মরহুম আইনজীবী শহীদুল হুদা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন।
মামলায় হত্যাকা-ের সময় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারের দায়িত্বে থাকা মীর্জা রকিবুল হুদাকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলার আসামিরা সরকারি কর্মচারী হওয়ায় এবং মামলা চালানোর জন্য সরকারের অনুমতি না মেলায় আদালত মামলাটি ওই সময় খারিজ করে দেয়। পরবর্তীতে বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে রিভিশন মামলা করলে মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডির ওপর দায়িত্ব পড়ে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। আদালতের নির্দেশে সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রথম দফায় ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি সিএমপির তৎকালীন কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদাকে এবং পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে মীর্জা রকিবুল হুদাসহ ৮ পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।