Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধ্যবিত্তের ভরসা ফুটপাথ

ঈদ কেনাকাটা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নামিদামি বিপনিবিতানগুলোতে যেতে পারছেন না মধ্যবিত্তরা। তাই স্বদ ও সাধ্যের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা করার জন্য তাদের একমাত্র ভরসা রাজধানীর ফুটপাথের দোকানগুলো। ঈদ উপলক্ষে জমজমাট হয়ে উঠেছে ফুটপাথের বেচাকেনা। ঈদকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ কেনাকাটা করছেন রাজধানীর ফুটপাথ থেকেই। কম দামে পোশাক কিনতে সবাই বিশেষ করে মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তরা ফুটপাথের দারস্থ হচ্ছেন। সকাল থেকে ভিড় জমে রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে। বিকেলে ভিড় একটু কম হলেও সন্ধ্যার পর শুরু হয় ক্রেতাদের জনসমাগম।
এদিকে, ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন দিন পর খুলেছে রাজধানীর নিউমার্কেট ও এর আশপাশের সব দোকানপাট। দোকানপাট খুলে দেয়ায় উৎসাহ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। যদিও বিক্রেতারা বলছেন- কিছুটা আতঙ্ক থাকেলেও সকাল থেকেই ক্রেতারা আসছে। বিক্রি শুরু হয়েছে পুরোদমে। ঢাকার নিউমার্কেট ও এর আশপাশের এলাকার মার্কেটগুলো জমে উঠেছে ঈদের পোশাকের বেচাবিক্রি। সকাল থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। যদিও নিউমার্কেটে দোকানের চেয়ে ফুটপাথেই আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। বেচাকেনা বাড়ায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদেরও। যদিও দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে হাঁকডাক দেখা গেলেও মার্কেটটির প্রতিটি দোকানের সামনে থাকা চৌকির ওপর গড়ে ওঠা ফুটপাথে বেচাবিক্রি ছিলো জমজমাট। রাজধানীর নিউমার্কেটসহ পাশের গাউছিয়া মার্কেট, চাঁদনি চক ও নুরজাহান মার্কেটে দুপুরের পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফুটপাথে সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুদের রঙ-বেরঙের জামা-কাপড় বিক্রির ধুম পড়েছে। সালোয়ার-কামিজ, থ্রি-পিস, টপস, বোরকা, শাড়ি, ব্যাগ, নেইলপলিশ, লিপস্টিক, কাজল, চুড়ি, ফিতা, ক্লিপ, শার্ট, টি-শার্টসহ সব ধরনের পোশাক মিলছে এখানে। ফুটপাথে কেনাবেচা চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। রোজার শুরু থেকেই এখানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ফুটপাথগুলোতে দেখা যায়, বাচ্চাদের পাঞ্জাবি ২৫০- ৩০০ টাকা, শার্ট ২০০-৪৫০ টাকা, প্যান্ট ২০০-৩৫০ টাকা, গেঞ্জি ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বড়দের পাঞ্জাবি ৩০০-৪৫০ টাকা, শার্ট ২৫০-৩৫০ টাকা ও প্যান্ট ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। মেয়েদের থ্রি-পিস ৩০০-৫০০ টাকা, ওড়না ১০০ টাকা ও হিজাব ১০০ টাকা করে বিক্রি করছেন এখানের দোকানিরা। তবে রঙ ও কাপড়ভেদে পোশাকের দাম ভিন্ন ভিন্ন।
রাজধানীর মতিঝিল, ফার্মগেট, নিউমার্কেট, পুরান ঢাকা, গুলিস্তান, খিলগাও, ফুলবাড়িয়া, ও কারওয়ান বাজার এলাকার ফুটপাথের দোকান মালিকরা বলেছেন, তারা আশায় আছেন রমজানের শেষের দিকে বিক্রি বাড়বে। সব বয়সী নারী-পুরুষের জন্য রং-বেরঙের বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যায় ফুটপাথে। সারি সারি এসব দোকান থেকে প্রতিনিয়তই পছন্দমতো জামা-কাপড় ও শার্ট রাখা হয়েছে। পোশাকের পাশাপাশি রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা রকমের জুতা। পণ্য ভেদে দামও রয়েছে কম-বেশি। এখানে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে শার্ট বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। শিশুদের ফ্রক, টি-শার্ট ছাড়াও বাহারী ডিজাইন ও নানা রঙের পোশাক পাওয়া যায় যেগুলোর দাম ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার প্রভার এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের কাছে টাকা কম থাকায় দোকানে গ্রাহকের উপস্থিতিও কম। তবে ঈদ কাছে আসলে ফুটপাথের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়বে। বিক্রিও বাড়বে। গত দুই বছর ধরে ঈদের সময় বেশি বিক্রয় করতে পারেননি। তাই এবার বেশি বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়িরা।
মতিঝিল এলাকার ফুটপাথ থেকে শার্ট কিনলেন শাহিন। তিনি বলেন, ৪০০ টাকা দিয়ে শার্ট কিনলাম। এই শার্টই যদি কোন বড় মার্কেট থেকে কিনতাম তাহলে লাগতো ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। আর এতো টাকা দিয়ে বড় মার্কেট থেকে শার্ট কেনা সম্ভবনা।
মতিঝিলের ফুটপাথের দোকানদার সিদ্দিক বলেন, রমজানের প্রথম দিকে তেমন একটা বিক্রি ছিলো না। কিন্তু আস্তে আস্তে দিন দিন বিক্রি বেড়েছে। তবে এখন আগের তুলনায় মালের দাম বেশি থাকার কারণে ক্রেতারা অনেক দেখে শুনে জামা কাপড় কিনছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মধ্যবিত্তের ভরসা ফুটপাথ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ