Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আড়াই লাখ ইঁদুর মেরে রেকর্ড ৮৪ বছরের আতশ আলীর

প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : ফসলের যম ইঁদুর, কাপড়ের যম ইঁদুর, বইয়ের যম ইঁদুর, খাবারের যম ইঁদুর। আর ইঁদুরের যম হচ্ছে আতশ আলী। ইঁদুর খুবই চালাক প্রাণী। কিন্তু ইঁদুরের চেয়ে চালাক হচ্ছে আতশ আলী। এই আতশ আলী হচ্ছেন নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী গ্রামের একজন কৃষক। তিনি তার ৮৪ বছর বয়সে আড়াই লাখ ইঁদুর মেরে রেকর্ড গড়েছেন। নরসিংদীতে সরকারি ইঁদুর নিধন কর্মসূচিকে বারবার সফলতা দিয়েছেন এই আতশ আলী। সদ্যাতীত নরসিংদী জেলার ইঁদুর নিধন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আতশ আলীর ইঁদুর নিধনে সফলতার বিশাল তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
আতশ আলী জানিয়েছেন, তার বাড়ি মেঘনা তীরবর্তী আলোকবালী ইউনিয়নের কাজীরকান্দী গ্রামে। মেঘনা নদী হচ্ছে ইঁদুরের নদী। বর্ষা মৌসুমে সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে মেঘনার পানিতে ভেসে আসা কচুরিপানার সাথে বড় বড় পাহাড়ি গেছো ইঁদুর ভেসে আসে। আর এসব ইঁদুর মেঘনার তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ঢুকে বংশ বিস্তার করে।
এসব ইঁদুরই বাংলাদেশের ফসল ও বাড়ি-ঘর, গাছ-গাছালির জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে। বিশেষ করে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চলের ধানসহ বিভিন্ন শস্য খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। এসব ইঁদুরই আস্তে আস্তে বংশ বিস্তার করে সারা জনপদে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ শাসনামলে মেঘনা তীরবর্তী একটি জমি থেকে ধান কাটার সময় কচুরিপানার সাথে ভেসে আসা একটি পাহাড়ি ইঁদুর আতশ আলীর এক বড় ভাইয়ের পেটে কামড় দিয়েছিল। তীব্র যন্ত্রণায় তার বড় ভাই কান্নাকাটি শুরু করলে সকলেরই ধারণা জন্মে যে, তাকে সাপে কেটেছে। পরে আতশ আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে তার ভাইকে একটি পাহাড়ি ইঁদুর কামড় দিয়েছে। সাথে সাথেই সে ইঁদুরটিকে কুপিয়ে মেরে ফেলে এবং এরপর থেকেই শুরু হয় আতশ আলীর ইঁদুর নিধন অভিযান। এরপর সরকারিভাবে যখন ইঁদুর নিধন অভিযান শুরু হয় তখন আতশ আলী ব্যক্তিগতভাবে উৎসাহী হয়ে ইঁদুর মারা শুরু করেন। ধান ক্ষেতে ইঁদুরের গর্তের মুখে সার দিয়ে তাতে পানি ঢালতে থাকেন। যতক্ষণ পর্যন্ত ইঁদুর গর্ত থেকে বেরিয়ে না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত আতশ আলী ক্ষান্ত হন না। গর্ত থেকে বের করে ইঁদুর মেরেই বাড়িতে যান আতশ আলী। রাতের বেলায় টর্চলাইট নিয়ে ক্ষেতের আইলে গিয়ে ইঁদুর খোঁজাখুঁজি করেন আতশ আলী। ইঁদুর সামনে পড়লেই টেঁটা মেরে ইঁদুর সাবাড় করে দেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ইঁদুর মারার কল ব্যবহার করে আতশ আলী ইঁদুর মারেন। প্রতি বছর সরকারিভাবে ইঁদুর নিধন অভিযান ঘোষণা করা হলে তিনি শত শত ইঁদুর মেরে লেজ সংগ্রহ করে জমা দেন জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অফিসে। এমনিভাবে ইঁদুর মেরে দু’বার জেলাভিত্তিক পুরস্কার পেয়েছেন আতশ আলী। আতশ আলীর বয়স এখন ৮৪ বছর। এই বয়সেও তিনি ইঁদুর মারা থেকে বিরত হন না। তিনি প্রতিদিনই ইঁদুর মারেন। ইঁদুরগুলো বিভিন্ন কায়দায় ধরে খাঁচায় বন্দী করে রাখেন। পরে আস্তে আস্তে সেগুলো পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলেন। এ বছরও আতশ আলী বহুসংখ্যক বড় বড় ইঁদুর মেরেছেন। আতশ আলী যেসব ইঁদুর মারেন তার বেশিরভাগই থাকে বিড়ালের চেয়ে বড় আকারে। ইঁদুর মারায় তার ভীষণ আনন্দ। আতশ শব্দের অর্থ আগুন। ইঁদুর দেখলে আতশ আলী আগুনের মতোই জ্বলে ওঠেন। আর সে মনের আগুন দিয়েই আতশ আলী নিধন করে চলছেন ইঁদুরের বংশ।
আতশ আলীর ইঁদুর নিধনের ব্যাপারে নরসিংদী কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক লতাফত হোসেন জানিয়েছেন, আতশ আলী ইঁদুর নিধনে একজন সিদ্ধহস্ত ব্যক্তি। ইঁদুর মারার প্রতি তার একটি আন্তরিকতা রয়েছে। চরাঞ্চলে ইঁদুর নিধন এখনো শুরু হয়নি। সেখানে ইঁদুর নিধন শুরু হয় শীত মৌসুমে। আতশ আলী এর মধ্যে ইঁদুর নিধন শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই কয়েকশ’ ইঁদুর তিনি মেরেছেন এবং জীবিত ধরে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরে জমা দিয়েছেন। এবারের শীতে সে দ্বিগুণ উৎসাহে ইঁদুর নিধন করবেন।
নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হাই তরফদার জানান, আতশ আলীর মতো ইঁদুর নিধনে এত আন্তরিক ও সিদ্ধহস্ত ব্যক্তি থাকলে নরসিংদীতে ইঁদুর নিধন কার্যক্রম শতভাগ সফল হতো। শুধু তাই নয়, ইঁদুর নিধনে জাতীয় পুরস্কার অর্জনও সম্ভব হতো। ৮৪ বছর বয়সেও আতশ আলী যেভাবে ইঁদুর নিধন করেন তা একটি বিরল দৃষ্টান্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আড়াই লাখ ইঁদুর মেরে রেকর্ড ৮৪ বছরের আতশ আলীর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->