Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মসজিদে উপচেপড়া ভিড়

রমজানের দ্বিতীয় জুমা-তারাবি’র নামাজে ঠাঁই নেই রাজধানী ঢাকার বাইরেও সারা দেশের মসজিদগুলোতে দেখা গেছে একই দৃশ্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজানের দ্বিতীয় জুমায় গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মসজিদগুলোতে ছিল মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়। রাজধানীর প্রতিটি মসজিদে মুসল্লিদের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। মসজিদের ভিতরে যায়গা না হওয়ায় সব মসজিদের বাইরে, ছাদে, কোথাও কোথাও রাস্তায় মাদুর বিছিয়ে মুসুল্লিদের নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। রাতে তারাবি’র নামাজেও মসজিদে মসজিদে মুসুল্লিদের ভিড় দেখা যায়। এবার বেশিরভাগ মসজিদে খতম তারাবি’র নামাজ পড়ানো হচ্ছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ, বগুড়াসহ বিভিন্ন শহর থেকে ইনকিলাব প্রতিনিধিরা জানান, প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও মানুষের মধ্যে রোজা রাখার সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষিত তরুণ-তরুণী এবং ছোট ছোট বাচ্চারাও রোজা রাখছেন। তারা সকলেই রাতে তারাবির নামাজ আদায় করছেন। এর আগে করোনার কারণে ২০২০ সালের রমজানে মসজিদের মাত্র ১২ জনের নামাজ আদায়ের সীমারেখা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। ২০২১ সালেও ইমাম, মোয়াজ্জেন, মুতাওয়াল্লিসহ ৬ জনের নামাজ আদায়ের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।

শুক্রবার ছিল পবিত্র রমজানের ১৩তম দিন। শুক্রবার জুমার আজান দেয়ার আগেই মুসল্লিরা ছুটতে থাকেন মসজিদের দিকে। জামাত শুরুর আগেই রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বগুড়াসহ বড় বড় শহরগুলোর প্রত্যেকটি মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মসজিদের ভেতরে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় নামাজের জামাত রাস্তায় অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদের ভেতরে জায়গা না পেয়ে মসজিদের ছাদ, খোলা জায়গা, খেলার মাঠ ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। শুক্রবার রমজানের দ্বিতীয় জুমায় নগরীর প্রত্যেকটা মসজিদেই এমন দৃশ্য দেখা গেছে। রমজানের জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে প্রত্যেক জুমার দিনই অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। পবিত্র রমজানের জুমার দিন হওয়ায় এর ফজিলত আরো অনেকগুণ বেশি। পবিত্র কোরান ও হাদিসে জুমার দিনের বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি হওয়ায় অধিক সওয়াবের আশায় রোজাদারগণ প্রথম রমজান থেকেই তারাবিহ এবং ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে মসজিদে ভিড় জমান। জুমার নামাজের আজান শুরু হতেই মুসল্লিদের জায়নামাজ হাতে নিয়ে মসজিদপানে ছুটতে দেখা যায়। অনেক মসজিদে খতম তারাবি’র নামাজ পড়ানো হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ছাড়াও মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজম, লালবাগ শাহী মসজিদ, চকবাজার শাহী মসজিদ, গুলশান সেন্ট্রল আজাদ মসজিদ, শেওড়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ডেমরা দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা মসজিদ, মতিঝিল ওয়াপদা জামে মসজিদ, মতিঝিল পীরজঙ্গী মাজার জামে মসজিদ, খিলগাঁও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, সদরঘাট পাটুয়াটুলি জামে মসজিদ, লক্ষ্মীবাজার জামে মসজিদ, ফরিদাবাদ মাদরাসা মসজিদ, গেন্ডারিয়া জামে মসজিদ, ধানমন্ডি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও কলাবাগান জামে মসজিদসহ পাড়া মহল্লার মসজিদগুলোতে শিশু, বয়স্ক থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সী রোজাদারদের জুমার নামাজে শরীক হতে দেখা গেছে। শুধু ঢাকা মহানগরী নয় ঢাকার বাইরে অন্যান্য মহানগরী ও বড় শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদগুলোতেও মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জুমার নামাজে রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে খুৎবা পাঠ করেন খতিবরা। এছাড়া নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং আল্লাহর দরবারে গুনাহ থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এদিন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে গতকাল জুমায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। নামাজের আগেই মুসল্লিদের মসজিদ অভিমুখে যেতে দেখা যায়।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন জাতীয় মসজিদে নামাজ আদায় করেন এদিন। মসজিদের ভেতরে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় নামাজের জামাত মসজিদের গণ্ডি ছাড়িয়ে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর গেটে পল্টনের রাস্তায় বসে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। আর দক্ষিণের গেট পার হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে জামাত ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় মসজিদের খতিব তার বয়ানে মাহে রমজানের ফজিলত ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। রমজান বিষয়ে হাদিস উদ্ধৃত করে রমজানে ধৈর্য ও সহানুভূতির শিক্ষা গ্রহণ করতে তিনি মুসল্লিদের আহ্বান জানান। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ছাড়াও ঢাকার অন্যান্য মসজিদে একই ধরনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মহাখালিস্থ সমজিদে গাউছুল আজমে রমজানের দ্বিতীয় জুমায় মুসল্লিদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। হাইকোর্ট জামে মসজিদেও ছিল মুসুল্লিদের উপচেপড়া ভিড়।

যাত্রাবাড়ি, ওয়ারি, বাংলাবাজার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ, উত্তরা, গুলশান, বনানী, মিরপুরের রোকেয়া সরণির মসজিদগুলোতে একই ধরনের চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। প্রত্যেক মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় মূল রাস্তায় চলে আসে। নামাজের সময় এসব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মসজিদে নামাজের খুৎবায় রমজানের বিশেষ গুরুত্ব তুলে ধরে বয়ান করেন খতিবরা। এছাড়া নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, পবিত্র মাহে রমজানে বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামের মসজিদগুলোতে মুসল্লির ভিড়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি তারাবির নামাজেও বিপুল সংখ্যক মুসল্লি শরিক হচ্ছেন। প্রতিটি মসজিদে চলছে খতমে তারাবি। গতকাল দ্বিতীয় জুমায়ও নগরীর মসজিদগুলোতে ছিল মুসল্লির উপচেপড়া ভিড়। জুমার জামাতে মসজিদগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। প্রায় প্রতিটি মসজিদে নামাজের কাতার মসজিদ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। সব শ্রেণি পেশা ও বয়সের মানুষ এক কাতারে সামিল হয়ে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেন। খুৎবায় মাহে রমজানের ফজিলত বর্ণনা করা হয়। বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগির পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়নোর আহ্বান জানান ইমাম খতিবগণ। নামাজ শেষে ইমাম ও খতিবগণ দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।

মাহে রমজানের প্রথম দিন থেকে মসজিদে মসজিদে মুসল্লির ঢল নামছে। কোনো কোনো মসজিদে মহিলারাও নামাজ আদায় করছেন। চট্টগ্রামে পবিত্র শবে বরাতের দিন থেকে মসজিদে মুসল্লির সমাগম বাড়ে। রমজানে সবশ্রেণি পেশা ও বয়সের মানুষ জামাতে নামাজ আদায় করে। মুসল্লির চাপ সামাল দিতে প্রতিটি মসজিদে নেয়া হয় নানা ব্যবস্থা। মসজিদের ছাদ, বারান্দা এমনকি পাশের সড়কেও সামিয়ানা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।
নগরীর ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ, লালদীঘি জামে মসজিদ, হযরত শাহ আমানত খান দরগাহ মসজিদ, এনায়েত বাজার শাহী জামে মসজিদ, ধনিয়ালাপাড়ার বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, মুরাদপুর মসজিদে বেলাল, বহদ্দারহাট জামে মসজিদ, মেহেদিবাগ সিডিএ আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, কাজির দেউড়ি জামে মসজিদ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, সিজিএস কলোনী জামে মসজিদ, বন্দরটিলা হযরত আলী শাহ জামে মসজিদসহ নগরীর বেশিরভাগ মসজিদে মুসল্লির ব্যাপক সমাগম হয়।

বগুড়া ব্যুরো জানায় : রমজানের ২য় জুম্মায় বগুড়ার ছোট বড়ো মসজিদ সমুহে মুসল্লীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে বগুড়ার মহাস্থান গড়ের হযরত মাহী সওয়ার শাহ সুলতান বলখী রহ. এর মাজার মসজিদ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল জামে মসজিদে ঢল নেমেছিল নামাজিদের। এছাড়াও তারাবির জামাতগুলোতেও বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর উপস্থিতি ছিলো।

সিলেট ব্যুরো জানায় : ওলী-আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত সিলেট নগরীসহ প্রত্যন্ত এলাকার মসজিদগুলোতে সরব উপস্থিতি ছিল মুসল্লীদের। অনেক মসজিদে দীর্ঘ মাসব্যাপী এতেকাফে রয়েছেন মুসল্লীরা। নগরীর হযরত শাহজালাল (রহ.) শাহ পরান (রহ.) দরগা মসজিদসহ অন্যান্য মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। নামাজ শেষে মুসল্লীরা দেশ ও জাতির শান্তি কামনা করে আল্লাহ পাকের দরবারে মোনাজাত করেন। এছাড়া দিনভর রোজা রাখার নিয়তে রাতে তারাবিহর নামাজে শরীক হন ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা। বিশেষ করে সিলেটের বেশিরভাগ মসজিদে খতমে তারাবিহ নামাজে শরীক হচ্ছেন মুসল্লীরা। কোরআন নাজিলের মাসে তারাবিহ মাধ্যমে খতমে কোরআনের বরকত লাভে মুসল্লীদের এমন আগ্রহ। তারাবিহর নামাজকে কেন্দ্র করে এক ভিন্ন আমেজ চলছে সিলেটের সর্বত্র। মনে হচ্ছে সব মানুষ এক রুটিনের মধ্যে দিয়ে পার করছে যাপিত জীবনের ধারাবাহিকতা। মানুষের মধ্যে নিয়ন্ত্রিত এক স্বভাবও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একান্ত কাজ না হলে ঘর থেকে বের হচ্ছে না, বের হলেও ঘরে ফিরছে যথাসময়ে। অজানা এ তাগিদ মানুষকে আচ্ছন্ন করেছে, এর মধ্যে দিয়ে সষ্ট্রার অনুগ্রহ প্রাপ্তি যেন মানুষের চাওয়া পাওয়া।

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কাজির বাজার মাদরাসা সিনিয়র মুহাদ্দিস শাহ মাওলানা মমশাদ আহমদ বলেন, এমনিতেই ধর্মপ্রাণ সিলেটের মানুষ। সেই ভাবটা রমজানে আরো পরিলক্ষিত হয়। সবকিছুতেই নিয়ন্ত্রিত এ পরিবেশ লক্ষণীয় হয়ে উঠে। এছাড়া রমজানের বরকত লাভে মানুষের মধ্যে নীরব এক প্রতিযোগিতাও দেখা যায় সিলেটের জনজীবনে।
রংপুর থেকে হালিম আনছারী জানান, রমজান মাসের দ্বিতীয় জুমায় মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল। রংপুর মহানগরীসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মসজিদগুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বয়স্ক থেকে শুরু করে শিশু-কিশোর পর্যন্ত মসজিদে জুমআর নামাজ আদায় করতে এসেছিল। প্রায় সব মসজিদেই ভেতরে জায়গা না হওয়ায় বাইরে পাটি, পলিথিন বিছিয়ে কিংবা মাটির উপরে বসে খুৎবা শুনেছেন এবং নামাজ আদায় করেছেন। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে নামাজ আদায় করতে পেরে সকলেই শুকরিয়া আদায় করেছেন।

গরম এবং তাপদাহ একটুকু কাহিল করতে পারেনি মুসল্লিদের। নগরীর প্রায় প্রতিটি মসজিদেই সোয়া বারোটা থেকে সাড়ে বারোটায় আযান হয় এবং দুপুর দেড়টায় জুমআর নামাজের জামাত শুরু হয়। রমজানের শুরু থেকেই প্রায় প্রতিটি মসজিদ বেলা ১টার মধ্যে কানায় কানায় ভরে যায়। গতকালও নগরীর মসজিদগুলো বেলা ১টার আগেই ভরে যায়। স্থান সংকুলানের আশঙ্কায় অনেকেই আযানের পর পরই মসজিদে উপস্থিত হন। দুপুর ১টা বাজতে না বাজতেই মসজিদগুলো ভরে গিয়ে লোকজন সামনের রাস্তায় বসে খুৎবা শুনেন এবং নামাজ আদায় করেন। তবে গত জুমআর চেয়ে গতকাল জুমআর নামাজে মুসল্লিদের ভিড় ছিল উল্লেখ করার মতো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর প্রতিটি মসজিদে খতম তারাবির নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সব বয়সি রোজাদারগন খতম তারাবি পড়ার চেষ্টা করছেন। ফলে তারাবির নামাজেও মসজিদগুলোতে উল্লেখযোগ্য ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

খুলনা ব্যুরো জানায় : রমজানের দ্বিতীয় জুমার নামাজে খুলনার প্রতিটি মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় নগরীর বায়তুন নুর মসজিদ, টাউন হল মসজিদ, বায়তুন নাজাত মসজিদ, পিটিআই মসজিদ কেডিএ মসজিদ, বায়তুল ফালাহ মসজিদ, তারা মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এর আগে, প্রতিটি মসজিদে রমজানের জুমা উপলক্ষে বিশেষ বয়ান করা হয়। অনেক মসজিদে মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় রাস্তায় চলে আসে নামাজের কাতার। নামাজের পর মোনাজাতে কান্নায় মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। শুধু খুলনা মহানগরী নয়, জেলার ৯ উপজেলার মসজিদগুলোতেও জুমার নামাজে মুসল্লিদের ঢল নামে।

কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, রমজানের দ্বিতীয় জুমা নামাজেও কুমিল্লার নগর, গ্রাম-গঞ্জের মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে। কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় জামে মসজিদ, মোগলটুলিতে ঐতিহাসিক শাহ সুজা মসজিদ, বজ্রপুর রোডে দারোগাবাড়ী মসজিদ, নতুন চৌধুরী পাড়া জামে মসজিদ, পুলিশ লাইন্স জামে মসজিদ, কালেক্টরেট জামে মসজিদ, বাগিচাগাঁও বড় মসজিদ, রাণীর বাজার জামে মসজিদ, কাসেমুল উলুম মাদরাসা মসজিদ, দ্বিতীয় মুরাদপুর জানুমিয়া জামে মসজিদ, চকবাজার আমীর মাহমুদ জামে মসজিদ, গর্জনখোলা জামে মসজিদ, শুভপুর জামে মসজিদ, ছোটরা কলোনি জামে মসজিদ, কালিয়াজুরি জামে মসজিদসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার জামে মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের তিল ধারণের জায়গা ছিল না। অনেক মসজিদের বাইরে সামিয়ানা টাঙিয়ে জুমার নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। কোনো কোনো মসজিদের আঙিনা ছাপিয়ে রাস্তায় জায়নামাজ বিছিয়ে মুসল্লিরা জুমার নামাজ আদায় করেন।

একইভাবে প্রতিদিন তারাবিহ নামাজেও মুসল্লিদের ভিড় অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে গত বৃহস্পতি ও গতকাল শুক্রবারে তারাবিহ নামাজে মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে যায়।
রাজশাহী ব্যুরো জানায় : রমজানের দ্বিতীয় জুমায়ও মসজিদগুলোতে ছিল মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়। প্রায় বিয়াল্লিশ ডিগ্রী তাপমাত্রা মাথায় নিয়েই আজানের পর থেকেই মসজিদের দিকে মুসল্লিরা যেতে থাকেন। অল্প সময় মসজিদগুলো মুসল্লিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। অতিরিক্তি জায়নামাজ ও সামিয়ানা টানিয়ে নামাজের ব্যবস্থা করতে হয়। সাহেববাজার বড় মসজিদের বাইরে প্যান্ডেল টানানো হয়। হযরত শাহ মখদুম (র.) দরগা মসজিদসহ সব মসজিদেই মুসল্লিতে ছিল ঠাসা। নামাজের শেষে প্রচণ্ড তাপদাহে আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়। গরমের মধ্যেই নামাজ শেষে কবরস্থানগুলোতে ভিড় করেন জিয়ারতকারীরা।

দিনাজপুর অফিস জানায়, রমজান মাসের দ্বিতীয় জুমায় দিনাজপুরের মসজিদগুলো কানায় কানায় মুসল্লিতে ভরপুর হয়ে যায়। জুমার আজান পড়ার আগে থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মসজিদে যেতে শুরু করেন। শহরের প্রধান প্রধান মসজিদগুলো ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের মসজিদগুলোতে অনেক বেশি ভিড় দেখা গেছে। একদিন আগেই পহেলা বৈশাখের আমেজ এবার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মসজিদমুখি হওয়ার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে বলে অনেক মুসল্লি মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে বাঙালি নববর্ষের তুলনায় রমজানের পবিত্রতা অনেককেই আকৃষ্ট করেছেন। এদিকে পবিত্র রমজানের সালাতুত তারাবির নামাজে এবার মুসল্লির সংখ্যা অনেক বেশি লক্ষ করা গেছে। গত দুই বছর করোনার কারণে অনেকেই মসজিদমুখি না হলেও এবার এবার অনেকেই জামায়াতের সঙ্গে নামাজ আদায় আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তারাবির আগে শহরের রাস্তাঘাটগুলো অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা জানান, মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।



 

Show all comments
  • Yousman Ali ১৬ এপ্রিল, ২০২২, ৯:০০ এএম says : 0
    আল্লাহ আমাদের কবুল করুন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মসজিদে ইফতার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ