Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সহিংস হয়ে উঠছে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শতাধিক গ্রেফতার, পুলিশের উপর হামলা : ঘটেছে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মতো ঘটনাও : ২৫টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষোভ
ইনকিলাব ডেস্ক : রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তা ক্রমশ তীব্র হয়ে সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। ট্রাম্পের বিরোধিতাকারীরা বিক্ষোভকে আরও ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন। টানা বিক্ষোভে ডেনভার, মিনিয়াপোলিস, মিলওয়াউকি, পোর্টল্যান্ড, ওকল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি শহর অচল হয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটেছে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা। তবে ট্রাম্প এসব বিক্ষোভকে ভাড়াটে বিক্ষোভকারীদের কাজ ও মিডিয়ার সৃষ্টি বলে উল্লেখ করেছেন।
সাম্প্রতিক মার্কিন ইতিহাসে নজিরবিহীনভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষজন বিক্ষোভে নেমেছেন। এমনকি মার্কিন প্রশাসনের কেন্দ্র হোয়াইট হাউসের সামনেও বিক্ষোভ করেন ট্রাম্পবিরোধীরা। ওয়াশিংটন ডিসিসহ অন্য অঙ্গরাজ্যতেও এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ওয়েস্ট কোস্ট, নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, অস্টিন, সিয়াটল, ওকল্যান্ড, কালিফ, ফিলাডেলফিয়াসহ বিভিন্ন শহর। বিক্ষোভ তীব্র হয়ে অন্তত ২৫টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক স্থানে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। অকল্যান্ড পুলিশের দাবি, বেশকিছু বিক্ষোভকারী ব্যাট ও পাথর দিয়ে নিজেদের সশস্ত্র করে রাস্তায় নামে। তারা এগুলো পুলিশের দিকে ছুড়ে মারে। জবাবে পুলিশও পিপার স্প্রে ও রাবার বুলেট ছুড়ে। মিনিয়াপোলিসে কয়েকশ’ মানুষ মিছিল করে এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরাতে পারেনি। একদল বিক্ষোভকারী লস অ্যাঞ্জেলেস হাইওয়েতে অল্প কিছুক্ষণ বিক্ষোভ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের খবর প্রকাশের পরপরই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে। বিভিন্ন স্থানে নট মাই প্রেসিডেন্ট, টাইম টু রিভল্ট, ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প, রেজিস্ট রেসিজম, নো ট্রাম্প ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ট্রাম্পের মালিকানাধীন বিভিন্ন স্থাপনার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন ট্রাম্পবিরোধীরা। দুপুরে দু’শরও বেশি ট্রাম্পবিরোধী ম্যানহাটনের ইউনিয়ন স্কয়ার এলাকা থেকে ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্ক এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। ট্রাম্প ও পেন্সের বোধশক্তি নাইসহ এমন আরও অনেক স্লোগানসম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করতে থাকেন তারা। ট্রাম্পের মালিকানাধীন ভবন ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে বিক্ষোভ করেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে হিলারির সমর্থক এবং পপ তারকা লেডি গাগাও ছিলেন। অকল্যান্ডে গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে একটি কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বেশকিছু জায়গায় ভাঙচুর শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার সকালে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় ৪০টি জায়গায় লাগানো আগুন নেভান জরুরি কর্মীরা। বিশৃঙ্খলা তৈরি, পুলিশ কর্মকর্তাদের হয়রানি করা, বেআইনি কর্মকা- সংঘটিত করা ও আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অভিযোগে অন্তত ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাল্টিমোর পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত ৬০০ মানুষ সেখানে বিক্ষোভ করেছেন। রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এখানে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে ডেনভারে। কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের রাজধানীতে অন্তত ৩ হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভ আয়োজনকারীদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কয়েকটি গ্রুপ দাবি করছে আরও কার্যকর কর্মসূচির। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব কলোরেড পিপল (এনএএসিপি)-এর সাবেক প্রধান বেনজামিন জেলাস বলেন, আমাদের তরুণদের অসহিংস অসহযোগ আন্দোলনের প্রশিক্ষণ নেয়ার এখন সময়। ক্ষোভকে শৃঙ্খলা ও লক্ষ্যে ধাবিত করাতে হবে। একটি ফেসবুক গ্রুপ ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। গত বৃহস্পতিবার তাতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যোগ দেয়ার কথা জানিয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় হাজারখানেক মানুষ যোগ দিচ্ছেন। গ্রুপটি গঠন করা ত্রিশ গিলবার্ট জানান, ট্রাম্পের উগ্রনীতির বিরুদ্ধে জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দেবে। কয়েক হাজার মানুষ চেঞ্জ ডটওআরজিতে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। এতে হিলারি ক্লিনটনের কাছে প্রেসিডেন্সি হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, চলমান ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে মুখ খুলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটারে নিজের প্রতিক্রিয়ায় এসব বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের ভাড়াটে হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেবল তাই নয়, এ বিক্ষোভের পেছনে মিডিয়ার উস্কানি রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ট্রাম্প। সূত্র : লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস, বিবিসি, গার্ডিয়ান।



 

Show all comments
  • Mehedi Hasan ১৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:১৮ এএম says : 1
    লাভ নাই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সহিংস হয়ে উঠছে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ