Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দলের দুঃসময়ে মৌসুমী পাখিদের খুঁজে পাওয়া যাবে না : ওবায়দুল কাদের

প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলে বসন্তের কোকিল ও মৌসুমী পাখির দরকার নেই। দুঃসময়ে এদের হাজার ভোল্টের লাইট দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। দল করলে দলের নিয়ম-কানুন মানতে হবে। শৃঙ্খলা না মানলে দলে থাকা উচিত নয়। গুটিকয়েক ব্যক্তি দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল (শনিবার) বিকেলে নগরীর লালদীঘি ময়দানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে চট্টগ্রাম থেকে অন্তর্ভুক্ত নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের একথা বলেন।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মহানগরী ছাড়াও বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা বাসে-ট্রাকে মিছিল নিয়ে যোগ দেন। নেতাকর্মীদের ভিড় লালদীঘি ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কেও বিস্তৃত হয়। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান দৃশ্যত নির্বাচনী জনসভার রূপলাভ করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তার ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব থেকে ভারমুক্ত হতে ১০ বছর লেগেছে। আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল গণতান্ত্রিক উপায়ে সম্পন্ন হয়েছে। মির্জা ফখরুল কাউন্সিল নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। বিএনপি ভারত মিশন শেষে আমেরিকার নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে থাকার পর হতাশ হয়েছে। মরা গাঙ্গে জোয়ার আসেনি। সবকিছু হারিয়ে এখন উন্মাদ হয়ে গেছে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিদেশের দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতার উৎস জনগণ। বিদেশী শক্তি শুধু বন্ধু হতে পারে, তারা ক্ষমতায় আনতে পারে না।
নবীন-প্রবীণ নিয়ে চট্টগ্রামের নেতৃত্ব সাজিয়েছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ম্যাজিক পাওয়ার।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে শেখ হাসিনা চমক দেখিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কাউন্সিলে অনেক গুণী-জ্ঞানী ব্যক্তি বাদ পড়েছেন বলে তারা কি আলাদা লীগ করবে। দলের নেতাকর্মীদের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে ৮ বছরে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেন, অপশক্তির অপতৎপরতা সম্পর্কে দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। ২০১৯ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে যারা আসবে তাদের জয়যুক্ত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব আগামী দিনে দলকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করে এগিয়ে যাবে। তিনি সব বিভেদ ভুলে নেতাকর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
সিটি মেয়র ও নগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রামকে মূল্যায়ন করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সংকীর্ণতা পরিহার করে ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে এগিয়ে নিতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্য আয়ের দেশ। ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করতে হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মোঃ ইসহাক মিয়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক খালেক মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, কেন্দ্রীয় সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ, উত্তর জেলা সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।
চেয়ার ছোড়াছুড়ি
সংবর্ধনা সভায় চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেছে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। বিকেল পৌনে ৫টায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বক্তৃতা দেয়ার সময় সমাবেশের মাঝখানে হঠাৎ চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। বক্তব্যের মাঝেই ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তাদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দলের দুঃসময়ে মৌসুমী পাখিদের খুঁজে পাওয়া যাবে না : ওবায়দুল কাদের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ