পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেছেন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) নেতা চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের নির্দেশে ব্লগারদের হত্যা করা হয়েছে। ওই মেজর জিয়া প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন, ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়সহ সব ব্লগার হত্যাকা-ের মূল হোতা। হত্যাকা-ের আগে সেই সব কিছু মনিটরিং করত। ব্লগার হত্যার প্রতিটি ঘটনাই জিয়ার নির্দেশে হয়েছে। হত্যাসংক্রান্ত বিভিন্ন দায়িত্ব সদস্যদের মধ্যে তিনিই ভাগ করে দিতেন। কমলাপুর থেকে গ্রেফতারকৃত খাইরুলকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। খাইরুল সরাসরি এসব হত্যাকা-ে জড়িত ছিল।
গতকাল শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, দেশে এ পর্যন্ত যত ব্লগার হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তার সব ক’টিই হয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের নেতা জিয়ার নির্দেশে। মেজর জিয়া দেশের ভেতরে আছেন বলেও তথ্য দিয়েছেন খায়রুল। গোয়েন্দাদের কাছে তিনি জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে ঢাকার আশপাশের কোনো এক জায়গায় তাদের সাক্ষাৎ হয়েছে। তবে মেজর জিয়া আত্মগোপনে রয়েছেন।
প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন ও ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় হত্যার ঘটনায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে গতকাল দুপুরের দিকে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে জিয়ার প্রসঙ্গ আসে।
আবদুল বাতেন জানান, শুক্রবার রাত ৯টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে খায়রুলকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তিনি জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতা। প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন ও ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন খায়রুল ইসলাম।
আবদুল বাতেন জানান, খায়রুল বিভিন্ন জায়গায় ফাহিম, রিফাত, জামিল ও জিসান নামে পরিচয় দিতেন। তিনি মূলত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার প্রধান।
চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখার নেতা। তিনি ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সেনা অভ্যুত্থানে প্ররোচনা চালিয়ে ব্যর্থ হন। এরপর থেকে তিনি পলাতক। তাকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।
ডিবি’র যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন আরো বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর কমলাপুর থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি দীপন ও নিলয় হত্যার সঙ্গে জড়িত।
ডিবির ভাষ্য, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম খাইরুল ইসলাম (২৪)। তিনি জামিল, রিফাত, ফাহিম ও জিসান নামেও পরিচিত। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার চন্ডীপুরে।
আবদুল বাতেনের ভাষ্য, খাইরুলকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে এক ‘বড় ভাই’ মেজর জিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তার মাধ্যমেই তিনি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দেন। ২০১৪ সাল থেকে সংগঠনের তথ্য-প্রযুক্তি (আইটি) বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করে আসছিলেন তিনি। তিনি ইন্টারনেটে নজরদারি করতেন। তথ্য বিশ্লেষণ করতেন। সম্ভাব্য টার্গেটের বিষয়ে বড় ভাইকে তথ্য জানাতেন। এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ‘টার্গেট’ ঠিক করতেন বড় ভাই। পরে টার্গেটের বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হতো। বড় ভাইকে তা জানানো হতো।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর অফিসে দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (আনসার আল ইসলাম) ওই খুনের দায় স্বীকার করে।
একই বছরের ৭ আগস্ট রাজধানীর গোড়ানে নিজ বাসায় ব্লগার নিলয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই দিনই এ হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ (একিউআইএস) শাখার নামে বিবৃতি দেওয়া হয়। এ হত্যাকা-ের পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।