Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বস্তি ফেরেনি বাজারে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৪ এএম

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তোষ রয়েই গেছে। এখনো বাজার পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে আসেনি বলে মনে করছেন তারা। যদিও চলতি রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বেড়ে যাওয়া বেগুন, শসা ও লেবুসহ অধিকাংশ সবজির দাম কিছুটা কমেছে। স্থিতিশীল রয়েছে চালের বাজার। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের মাছ ও গোশতের দাম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দুদিন আগে প্রতি হালি ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া লেবু গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। আর মাঝারি আকারের লেবু প্রতি হালি বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়। যা দুদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে লেবুর সরবরাহ বেশি তাই দাম কিছুটা কমেছে।
রাজধানীর বৃহত্তম কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারের লেবুর খুচরা বিক্রেতা হাফিজুল জানান, গত কয়েকদিন ধরে বাজারে অভিযান চালাচ্ছে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা। বেশ কয়েকজন পাইকারকে জরিমানাও করা হয়েছে। ফলে পাইকাররা দাম কমিয়েছে। একইভাবে কমেছে বেগুনের দামও। দ্বিতীয় ও তৃতীয় রোজায় প্রতি কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া লম্বা বেগুন এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। আর গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা কেজিতে।
কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, গত কয়েক দিন অতিরিক্ত দামের কারণে লেবু-েেবগুন কেনা সম্ভব হয়নি। আজ (শুক্রবার) দাম তুলনামূলক কম থাকায় কিনেছি। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলোতে একটি সেল থাকলে মনিটরিং ভালো হতো। ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফা করতে পারত না।
লেবু-বেগুনের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা কমেছে। রমজানের আগেই বেড়ে যাওয়া শসার দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, যা প্রথম রোজার দিন বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। দাম কমেছে টোমেটো ও লাউয়ের। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা, যা প্রথম ও দ্বিতীয় রোজায় বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকায়।
এ ছাড়া মাঝারি আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। ছোট আকারের মিষ্টি কুমড়া ৩০-৩৫ টাকা। পটোল প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৭০ টাকা। এ ছাড়া ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা এবং করলা কেজি প্রতি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সবজির দাম কমলেও সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির গোশতের দাম। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৬৫ টাকা দরে। সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়।
আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর গোশত। ভোক্তা অধিদফতরের নজরদারির কারণে বড় বাজারগুলোতে গরুর গোশত ৬৫০ টাকায় বিক্রি হলেও মহল্লায় বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। হাড়ছাড়া গরুর গোশত সাড়ে সাতশ থেকে আটশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।। সরকারি হিসাবেই গত এক মাসে গরুর গোশতের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি।
গবেষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর গোশত। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে জনপ্রতি গোশতের চাহিদা ১২০ গ্রাম। সে হিসেবে বছরে গোশতের চাহিদা ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার টন। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে গোশতের উৎপাদন ছিল ৮৫ লাখ ৪১ হাজার টন, যা চাহিদার চেয়েও বেশি।
সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের মাছের দামও। কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পাঙাশ ১৫০, বড় রুই ৩৫০-৩৮০, ছোট থেকে মাঝারি রুই ২৫০-৩০০, কাতলা ২৮০-৩০০ এবং পাবদা ৪৫০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় ইলিশ প্রতি কেজি ১৩০০-১৪০০, শিং ৪৫০-৫০০ এবং ছোট মাছ কেজিপ্রতি ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নতুন করে এই সপ্তাহে দাম না বাড়লেও একটু স্থিতিশীল আছে চালের বাজার, আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬৫-৭০, নাজিরশাইল ৭০-৭৫, ২৮-২৯ জাতের পাইজাম এবং মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি মসুর ডাল ১৩০ ও বড় মসুর ডাল কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটা ৩৮, প্যাকেটজাত ৪৫ এবং খোলা ময়দা ৫০, প্যাকেটজাত ৬৫ টাকা। এ ছাড়া খোলা চিনি ৮০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বস্তি ফেরেনি বাজারে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ