Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

যে কেউ মিল থেকে তেল কিনতে পারবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৯ এএম

এখন থেকে যে কেউ মিল থেকে খোলা তেল কিনতে পারবে। তবে মিল থেকে ন্যূনতম এক গাড়ি (৫ টন) খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হবে। গতকাল বুধবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, ভোজ্যতেল আমদানিকারক এবং মিল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন। রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ভোক্তা অধিদফতরের এক বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর জানায়, ভোজ্যতেল সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভোক্তা অধিদফতরের নানামুখী উদ্যোগে নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। সরকার নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ বিক্রয় আদেশ বা এসও ১৫ দিনের মধ্যেই মিল থেকে তেল সরবরাহ করেছেন মিলমালিকরা। তবে মাঠ পর্যায়ে ডিলারদের সিন্ডিকেট ভাঙতে ইতোমধ্যে সব জেলা প্রশাসকের নিকট ভোজ্যতেল ডিলারদের তালিকা পৌঁছানো হয়েছে। ঢাকার মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দুই ডিলারকে ৪০ হাজার করে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সংস্থাটি।

সভার শুরুতে ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, আমদানিকারকরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন সরকার নির্ধারিত মূল্য এবং নির্ধারিত সময়ে বাজারে ভোজ্য তেল সরবরাহ ঠিক রাখবেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কয়েকবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ভোক্তা অধিদফতর থেকে তাদের কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। মিল মালিক বা পরিবেশকদের মধ্যে এখন আর সমস্যা নেই।
সফিকুজ্জামান বলেন, ভোজ্য তেলের বাজার বিশৃংখলার কারণ হিসেবে যেসব তথ্য উপাত্ত আমাদের নিকট এসেছে। এর মধ্যে মালিকপক্ষের সমস্যা চিহ্নিত করতে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করি। ইতোমধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে ডিলারদের মধ্যে যে সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে তা এখনো সমাধান হয়নি। এজন্য মিল মালিকদের সঙ্গে আলাপ করে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। যে কেউ চাইলেই মিল মালিকদের নিকট থেকে তেল কিনতে পারবেন। এখন আর ডিলারদের নিকট থেকে কিনতে হবে না।
বৈঠকে জানানো হয়, প্রতিদিন দেশে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। আর এর যোগান হিসেবে পর্যাপ্ত মজুদ মিল মালিকদের নিকট রয়েছে। তবে সরকারের নির্ধারিত মূল্য অর্থাৎ ভ্যাট প্রত্যাহারের সময় ১৬ মার্চ প্রতি টন অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম ছিল ১ হাজার ৪০৭ মার্কিন ডলার, তা এখন সময়ের ব্যবধানে ১ হাজার ৮৮০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে। বাড়তি দামে তেল আমদানির ফলে আমদানিকারকদের মধ্যে দাম বাড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা রোজার ঈদের পর মে মাসে সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক।

এ সময় ভোক্তা অধিদফতরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, দেশের ৯৫ ভাগ ব্যবসায়ী সাধু, আর ৫ ভাগ অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ভোক্তা অধিদপ্তর চাচ্ছে সুষম বাজারব্যবস্থা, যাতে সব আমদানিকারক এবং মিলমালিকরা আইনের মধ্যে থাকেন। যখন সরকার থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেন। এর মধ্যে অনেক সমস্যা থাকবে যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। আর যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈঠকে সিটি গ্রুপ, টি কে গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে ভোজ্য তেলের বাজার সমন্বয় করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান। দ্রুত সময়ে বাজার সমন্বয় না হলে বাজারে সমস্যা তৈরি হবে বলে তারা মত দিয়েছেন। তবে ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান জানান, সরকার ইতোমধ্যে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে, অন্যান্য সব ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। ফলে নতুন আমদানিতে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ ক্ষেত্রে প্রতি লিটার তেলে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনায় করে রোজার ঈদের পরে মে মাসে সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে ভোজ্য তেলের দাম সমন্বয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যে কেউ মিল থেকে তেল কিনতে পারবে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ