Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় জীবন দিতে হয় রোহানকে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

এক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ইভটিজিং ও হট্টগোল করায় এলাকার অন্য ছেলেদের নিয়ে তার প্রতিবাদ করেছিল খুলনার ফুলতলা উপজেলার এমএম কলেজের অনার্স (সমাজকর্ম) প্রথম বর্ষের ছাত্র সৈয়দ আলিফ রোহান। সেটিই কাল হয় রোহানের। রোহানকে শায়েস্তা করতে শান্ত গাজী, তাছিন মোড়ল, সাব্বির ফারাজীরা মিলে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গতকাল মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, খুলনার ফুলতলা উপজেলার এমএম (মোজাম মহলদার) কলেজের অনার্স সমাজকর্ম বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দ আলিফ রোহান। তিনি খুলনা ফুলতলা পায়গ্রাম কসবার সৈয়দ আবু তাহেরের ছেলে। গত ৩১ মার্চ কলেজের উত্তর পাশের গেট সংলগ্ন কলেজ মাঠে কয়েক শিক্ষার্থীর হাতে হত্যার শিকার হন। ওই ঘটনার পরদিন রোহানের বাবা সৈয়দ আবু তাহের বাদী হয়ে তাছিন মোড়ল, সাব্বির ফারাজীসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪/৫জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফুলতলা থানার মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার প্রতিবাদে, হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারসহ বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ৩ এপ্রিল এমএম কলেজের সামনে খুলনা-যশোর মহাসড়কের পাশে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মুক্তা ধর বলেন, হত্যার ঘটনাটি রাজনৈতিক কোন্দল, কলেজের আধিপত্য বিস্তার, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ নাকি প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে তা খতিয়ে দেখতে সিআইডির এলআইসি শাখা তদন্ত শুরু করে।
ভিকটিমের পরিবার, ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে রি-ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র তাছিন মোড়ল, সাব্বির ফারাজীসহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এলআইসির একটি চৌকস টিম তাদের গ্রেফতারের জন্য সম্ভাব্য সব স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন গাজীরচট এলাকা থেকে তাছিন মোড়ল ও সাব্বির ফারাজীকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
মুক্তা ধর বলেন, সৈয়দ আলিফ রোহানের বাড়ির পাশে ফুলতলা থানাধীন পায়গ্রাম কসবার ‘রহমানিয়া এলিমেন্টারি স্কুল’ নামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে গিয়ে বিভিন্ন মেয়েকে উত্ত্যক্ত করাসহ অনুষ্ঠানে হট্টগোল করতে থাকে তাছিন-সাব্বিররা। রোহান এলাকার অন্যান্য ছেলেদের নিয়ে তার প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় তাছিন, সাব্বির ও শান্ত গাজীরা। তারা সুযোগ বুঝে আলিফ রোহানকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। গত ৩১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আলিফ রোহানকে এমএম কলেজ মাঠে একা পেয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে ভিক্টিমের বুকের ডান পাশে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী অন্য সদস্যরাও বিভিন্নভাবে তাকে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় কলেজের শিক্ষার্থীরা তাকে সিএনজিতে করে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় জীবন দিতে হয় রোহানকে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ