পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বহু সাংবাদিকই নিজেকে প্রশ্ন করছেন যে রিপাবলিকানদের বিজয়ের পথে অগ্রযাত্রা দেখতে তারা কিভাবে ব্যর্থ হলেন এবং বার্তা সংস্থাগুলোর সাথে তার বিরোধই কি ট্রাম্পকে জনগণের আস্থাহীন মিডিয়ার ক্ষেত্রে তাকে শক্তি জুগিয়েছে? কয়েক মাস ধরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চারপাশে ভিড় করা আমেরিকার নিউজ মিডিয়া এখন ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কিভাবে সামাল দিয়েছে সে ব্যাপারে আত্মানুসন্ধান করছে। খবর এএফপি।
রিপাবলিকানদের বিজয়ের পথে যাত্রা সাংবাদিকরা দেখতে কিভাবে ব্যর্থ হলেন? ফ্রি পাবলিসিটি নামে পরিচিত একটি অনুরাগী মিডিয়া ট্রাম্পকে কি গতিশীলতা অর্জনে আগাম সাহায্য করেছিল? এবং বার্তা সংস্থাগুলোর সাথে বিরোধ কি বিপুলভাবে জনগণের আস্থা হারানো মিডিয়ার বিরুদ্ধে তাকে চাঙ্গা রেখেছিল?
ওয়াশিংটন পোস্টের মিডিয়া কলমনিস্ট মার্গারেট সুলিভান ২০১৬-র নির্বাচনী প্রচারণাকে নিউজ মিডিয়ার জন্য এক ‘মহাকাব্যিক ব্যর্থতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি লিখেছেন, খোলাখুলি কথা যে মিডিয়া ঘটনাটি মিস করেছে। তিনি বলেন, শেষে বিপুল সংখ্যক আমেরিকান ভোটাদাতা আলাদা কিছু চেয়েছিল । যদিও এ সব ভোটদাতারা চিৎকার-চেঁচামেচি করে তা বলছিল কিন্তু অধিকাংশ সাংবাদিকই তা শুনছিলেন না।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের মিডিয়া রাইটার জিম রুটেনবার্গ বলেন, অধিকাংশ বার্তা সংস্থা আমেরিকার ‘জটিল নাড়ি’র ভুল ব্যাখ্যা করেছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতের মিসফায়ার নির্বাচনে ব্যর্থতার চেয়েও প্রায় বেশী কিছু ছিল।
তিনি বলেন, এটা ছিল আমেরিকার নির্বাচকদের এক বিরাট অংশের ফুটন্ত ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থতা যারা মনে করে নির্বাচনী পুনরুদ্ধারের দ্বারা তারা বঞ্চিত হয়েছে, বাণিজ্যিক চুক্তিগুলোর দ্বারা বিশ^াসঘাতকতার শিকার হয়েছে যেগুলোকে তারা তাদের চাকরির প্রতি হুমকি হিসেবে দেখে এবং ওয়াশিংটন প্রশাসন, ওয়ালস্ট্রিট ও মূলধারার মিডিয়া দ্বারা অসম্মানিত হয়েছে।
ট্রাম্প ও মিডিয়ার মধ্যে সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট পদে তার নির্বাচনী দৌড় শুরু করার সময় থেকেই জটিলতা সৃষ্টি হয়।
সুলিভান বলেন, ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রাইমারির আগে কয়েকমাস তার প্রতিটি উপস্থিতি ও কর্মকা-ের ক্ষেত্রে নিউজ নেটওয়ার্কগুলোর ব্যাপক ও উদার সাহায্য পান।
কিছু বিশ্লেষক দাবি করেন যে মিডিয়া কভারেজের জন্য বিজ্ঞাপনে ট্রাম্পের ২শ’ কোটি টাকা ব্যয় প্রাইমারিতে তার জয়লাভে সহায়ক হয়।
ওয়াশিংটন বিশ^বিদ্যালয়ে কম্যুনিকেশনস প্রফেসর ক্রিস ওয়েলস বলেন, উস্কানিমূলক ও উদ্ভট মন্তব্য করে ট্রাম্প নিজেকে মনোযোগের কেন্দ্রে নিয়ে আসেন এবং মিডিয়া সেগুলো দিয়ে তাকে দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেয়।
ওয়েলস ও তার সহকর্মীরা বলেন, ট্রাম্প সাফল্যের সাথে সংবাদের বিষয় হয়ে ওঠেন, সংবাদ চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ ও পুনঃপ্রবেশ করেন এবং নিজের সুবিধামত সংবাদ প্রচারের জন্য কাহিনী তৈরি করেন ও বিভিন্ন উদ্যোগ নেন।
কিছু রিপোর্টে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টিকে থাকার জন্য লড়াইরত সিএনএন, ফক্স ও এমএসএনবিসির মত কেবল নিউজ নেটওয়ার্কগুলো নির্বাচন প্রচারণাকালে, ব্যাপকভাবে ট্রাম্প ঘটনার কারণে আবার চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
নর্থইস্টার্ন বিশ^বিদ্যালয়ের ড্যান কেনেডি বলেন, ট্রাম্প অন্য যে কারো চেয়ে জনজীবনে আধুনিক মিডিয়ার প্রভাব বুঝতে সক্ষম হন এবং তিনি নিজেকে যে তারকা করে তোলার সুযোগটির সদ্ব্যবহার করেন। কেনেডি বলেন, তাকে নিয়েই মিডিয়ার মনোযোগ আবর্তিত হতে থাকে।
কেনেডি বলেন, ভোটদাতাদের ব্যাপারে ভুল ধারণার জন্য মিডিয়ার সমালোচনা করা ঠিক নয়। তিনি বলেন, ক্লিনটন জনভোটে সংকীর্ণ বিজয় পেলেও ইলেকটোরাল কলেজের সিদ্ধান্ত মূলক ভোটে হেরে যান।
মিডিয়ার কভারেজ ক্রমশ আগ্রাসী হয়ে উঠে তার আর্থিক লেনদেন ও যৌন অসদাচরণের খবর প্রকাশ করতে থাকলে ট্রাম্প মিডিয়াকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ করেন।
নির্বাচনী প্রচারণার চূড়ান্ত পর্যায়ে মূলধারার সংবাদপত্রগুলোর প্রায় সবগুলোই রিপাবলিকান প্রার্থীর সমালোচনা মুখর হয়ে ওঠে। আমেরিকান কোনো কোনো সংবাদপত্র তাদের পত্রিকার পাতায় তাকে মিথ্যাবাদী পর্যন্ত বলে।
তখনো ট্রাম্প তার সমর্থকদের শান্ত ও সম্ভবত তাদের চাঙ্গা রাখার জন্য সামাজিক মাধ্যম ও বিকল্প সংবাদ ক্ষেত্রগুলোতে পাল্টা বক্তব্য দিতে সক্ষম হন।
ওয়েলস বলেন, ট্রাম্প টুইটস্টর্ম সহযোগে প্রচলিত জনসংযোগ ব্যবহার করে তার ‘হাইব্রিড মিডিয়া সিস্টেম’ গড়ে তোলেন যা তার সমর্থকদের উৎসাহিত করে এবং সামাজিক মাধ্যমে কি ঘটছে সে ব্যাপারে নতুন কাহিনীর সৃষ্টি করে।
গণমাধ্যমের উপর আমেরিকানদের আস্থা যখন নতুন করে নিম্ন পর্যায়ে সে সময় তিনি এ পন্থা অবলম্বন করেন। এ বছর গ্যালাপ জরিপে দেখা যায়, মাত্র ৩২ শতাংশ আমেরিকান কোনো খবর পূর্ণাঙ্গরূপে, সঠিকভাবে ও সুষ্ঠু ভাবে দেয়ার ব্যাপারে মিডিয়ার সক্ষমতার উপর আস্থা রাখেন।
এনপিআর মিডিয়া রাইটার ডেভিড ফলকেনফ্লিক টুইটারে লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্প মিডিয়া সংবাদ মাধ্যমের খবরের উপর নির্ভরতা সত্ত্বেও সাংবাদিকদের প্রতি খোলাখুলি বৈরিতা নিয়ে হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন। তাহলে ট্রাম্প ও মিডিয়ার মধ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে? কেনেডি বলেন, এখানে কোনো ক্ষত উপশম হবে বলে আমি মনে করি না, কারণ ট্রাম্প ট্রাম্পই। আমি মনে করি না তিনি অন্যরকম ব্যবহার করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।