পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের দুর্যোগপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে অবক্ষয়জনিত কারণে জমির (ভূমি) দাম কমে যাওয়া। এ সংক্রান্ত ক্ষতি ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। দুর্যোগে শস্য খাতের ক্ষতি ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ, প্রাণিসম্পদে ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ, পোলট্রিতে এক দশমিক ৫১ শতাংশ ও মৎস্য খাতে ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া বসতঘর, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, অবকাঠামো প্রভৃতি খাতে ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং খানাভিত্তিক সামাজিক বনসহ উঠানের গাছ-পালায় ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে বৃহৎ কৃষি খাতে (শস্য, প্রাণিসম্পদ, পোল্ট্রি, মৎস্য ও বন মিলিয়ে) মোট ক্ষতি হয়েছে ৭১ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ক্ষতির ৪০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘বাংলাদেশ ডিজ্যাস্টার রিলেটেড স্ট্যাটিস্টিকস (বিডিআরএস) ২০২১: ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ন্যাশনাল ডিজ্যাস্টার পারসপেকটিভ’ শীর্ষক জরিপের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ পরিসংখ্যান শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ জরিপটি পরিচালনা করা হয়।
গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে ৬ বছরে বন্যায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে মোট প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ক্ষতির ৫৬ দশমিক ৪১ শতাংশ, নদী ও উপকূলীয় ভাঙ্গনে ক্ষতি ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে, ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে খানাভিত্তিক আর্থিক ক্ষতি হয় এক লাখ ৮৪ হাজার ২৪৭ মিলিয়ন টাকা। এর মধ্যে শস্য খাতে ৩৬ দশমিক ২০ শতাংশ, প্রাণিসম্পদে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, পোল্ট্রিতে এক দশমিক ২১ শতাংশ, মৎস্য খাতে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ, জমিতে ২৬ দশমিক ৭২ শতাংশ, বসতঘর, রান্নাঘর ও গোয়ালঘর ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং উঠানের গাছপালায় ৮ দশমিক ১০ শতাংশ ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
ওই ছয় বছরে বৃহৎ কৃষি খাতে (শস্য, প্রাণিসম্পদ, পোল্ট্রি ও মৎস্য) মোট ৮৮ হাজার ৪১৪ মিলিয়ন টাকা (৪৮ শতাংশ) ক্ষতি হয়েছে। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে বন্যায় আর্থিক ক্ষতি ৪২ হাজার ৮০৭ মিলিয়ন টাকা (২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ), নদী উপকূলীয় ভাঙনে ৩৬ হাজার ৪০৯ মিলিয়ন টাকা (১৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ) ও ঘূর্ণিঝড়ে ২৮ হাজার ৩৮৫ মিলিয়ন টাকার (১৫ দশমিক ৪১ শতাংশ) ক্ষতি হয়েছিল।
বিডিআরএস ২০২১ জরিপে ২০১৫-২০২০ সময়কালে অর্থাৎ ৬ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত অসুস্থতা, আহত হওয়া প্রভৃতিতে বিভিন্ন পরিবারের ২৪ লাখ ১২ হাজার ৩৮৯ জন সদস্যদের চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩৯ হাজার ৪২০ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন টাকা। মাথাপিছু গড় চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৩৪১ টাকা। এছাড়া ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৪৯৮টি শিশুর মাথাপিছু গড় চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে ১৭ হাজার টাকা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ২০১৫-২০২০ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৯২৫ জন মানুষ অসুস্থ হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭২ হাজার ৪২৬ জন।
জরিপে দেখা গেছে, ৬৪ জেলার দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় ৭৫ লাখ ১৫ হাজার ৯৭৭টি পরিবার রয়েছে। এগুলোতে ৩ কোটি ৪১ লাখ ১২ হাজার ৯১০ জন মানুষ বসবাস করেন। এর আগে ২০১৫ সালে জরিপে ৬৪ জেলার দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় ৪৩ লাখ ৬১ হাজার ২৬১টি পরিবার ছিল। জনসংখ্যা ছিল ২ কোটি ২০ লাখ ৪ হাজার ৩৬৭ জন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আগে বাংলাদেশকে দুর্যোগপ্রবণ, বন্যাপ্রবণ— এরকম নানা প্রবণ উপাধির দেশ বলা হতো। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। মানুষ পরিশ্রম করে ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে অবদান রাখছে। অভিজ্ঞতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মানুষের টিকে থাকার সক্ষমতা বেড়েছে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, এই জপির প্রতিবেদন এসডিজি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৯৩টি সূচকের তথ্য ঘাটতি পূরণ করবে। তবে তথ্যের ওভারলেপিং যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডাটা সঠিক না হলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।