Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছেলেকে মুক্ত করতে এসে লাশ পেলেন মা

প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : গরু বিক্রির টাকা নিয়ে ছেলেকে মুক্ত করতে এসে লাশ পেলেন হতভাগিনী মা। তার কাছ থেকে টাকা পাবে এমন অভিযোগে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর  টেরিবাজার এলাকায়।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে কবির মার্কেটের দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা তাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মোঃ ফারুক (১৯) সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা রূপনগর গ্রামের নুরুল আলমের পুত্র। ফারুকের পরিবারের দাবি পাওনা টাকা আদায়ের কথা বলে তাকে ধরে এনে দোকান মালিক ও টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির এক  নেতা পিটিয়ে হত্যা করেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ জানান, মার্কেটে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মাটিতে শোয়া অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা নয়। গলায় দড়ি পেঁচিয়ে যুবকটিকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত ফারুকের ছোট ভাই মো. ছাদেক বলেন, তার ভাই নুর মার্কেটের জিএস ক্লথ স্টোর নামে একটি দোকানে চাকরি করতেন। প্রায় দুই বছর কাজ করার পর ফারুক ওই দোকান  থেকে কাজ ছেড়ে দিয়ে রেয়াজউদ্দিন বাজারে একটি জুতার  দোকানে কাজ নেন। পাওনা টাকা আদায়ের কথা বলে ফারুককে বুধবার রাতে রেয়াজউদ্দিন বাজার থেকে টেরিবাজার ধরে নিয়ে আসা হয় বলে অভিযোগ ছাদেকের।
যে দোকান থেকে ফারুকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সেটি জিএস স্টোরের গুদাম জানিয়ে ছাদেক আরও বলেন, বুধবার রাতে দোকান মালিক সমিতির নেতা মাহবুব আমাকে ডেকে জানায় ফারুক জিএস স্টোরে চাকরি করার সময় ৬৭ হাজার ৭০০ টাকা আত্মসাৎ করেছে। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত ফারুককে বেঁধে রাখা হবে। এ সময় ওই গুদামে মাহবুব ছাড়াও দোকান মালিক গিয়াস, ম্যানেজার নাছির, দোকান কর্মচারি তারেক, সাহেদকে দেখতে পেয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে ছাদেক।
ফারুকের মা ছেনুয়ারা বেগম বলেন, রাতে ছাদেক আমাকে জানায় ফারুকের কাছ থেকে তার দোকান মালিক ৬৭ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা দিতে না পারায় তাকে দোকানে এনে বেঁধে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সকালে গরু বিক্রি করে টাকা নিয়ে আমি দোকানে আসি। মালিকের কাছ থেকে ফারুকের খোঁজ জানতে চাইলে মাহবুবকে ডেকে আনেন।
পুলিশ কর্মকর্তা রউফ বলেন, শরীরে বড় কোন আঘাতের চিহ্ন দেখা না গেলেও গলার বাম পাশে দাগ রয়েছে। এ সময় দোকানের ছাদে একটি দড়ি টাঙানো ছিল। তিনি বলেন, আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালিয়ে পুলিশকে ‘বিভ্রান্ত’ করার চেষ্টা করেছে হত্যাকারীরা। নিহতের ভাই দোকান মালিক গিয়াস, সমিতির নেতা মাহবুবসহ যাদের নাম বলেছে তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
অভিযুক্ত মাহবুব টেরিবাজার দোকান মালিক সমিতির আইন বিষয়ক সম্পাদক বলে জানিয়েছে দোকান মালিক ও কর্মচারিরা। অভিযুক্ত মাহবুবের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছেলেকে মুক্ত করতে এসে লাশ পেলেন মা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ