পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : ঢাকার চার দিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালুর উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে। ডুবতে বসেছে ওয়াটার বাস। লোকসান জেনেও রহস্যজনক কারণে ওয়াটার বাসের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। একপর্যায়ে সেগুলো ভাড়া দেয়া হলেও বিপর্যয় কাটেনি। রাজধানীর যানজট নিরসন এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে নেয়া বৃত্তাকার নৌপথ চালুর প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দখলমুক্ত করা যায়নি ঢাকার চার দিকের চার নদীকে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, লোকসান হলেও আগামীতে আরো ওয়াটার বাস নামানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগে সুফল না এলে বিপুল অঙ্কের অর্থ অপচয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মিশা বলেন, ঢাকার চার নদী বাঁচানোর জন্যই ওয়াটার বাস চালু রাখা জরুরি। এ জন্য আগামীতে আরো অত্যাধুনিক ওয়াটার বাস নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
জানা গেছে, রাজধানীর যানজট নিরসনে এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য ২০০৪ সালে ঢাকার চার দিকের চার নদীপথে ওয়াটার বাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরীক্ষামূলকভাবে শুরুতে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাদামতলী থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত ওয়াটার বাস নামানো হয়। শুরুতে এ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই উৎসাহে ভাটা পড়ে। ল্যান্ডিং স্টেশনে নিরাপত্তার অভাব, নদীপথে চলাচলে নানা প্রতিকূলতা ইত্যাদি সমস্যার কারণে ওয়াটার বাসে যাত্রী সঙ্কট দেখা দেয়। বন্ধ করে দেয়া হয় ওয়াটার বাস সার্ভিস। ২০১০ সালের আগস্টে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে আরো দু’টি ওয়াটার বাস নামানো হয়। সে সময় ১১ মাস যেতে না যেতেই লোকসানের মুখে পড়ে বিআইডব্লিউটিসি। ২০১৩ সালে আগের ঘাট বাতিল করে আবার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আরো ৪টি ওয়াটার বাস নামানো হয়। সে সময় প্রতিদিন ৪০ হাজার টাকা লোকসান দেখিয়ে ওয়াটার বাস সার্ভিসটি তুলে দেয়া হয় বেসরকারি মালিকানায়। সেখানেও টেকেনি ওয়াটার বাস সার্ভিস। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আরো ছয়টি বাস নামানো হয়। এবার মোট ৮টি ওয়াটার বাস ইজারা দেয়া হয় ব্যক্তিমালিকানাধীন ইমরান ট্রেডার্স নামের এক প্রতিষ্ঠানকে। যারা ওয়াটার বাসে চলাচল করেন তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওয়াটার বাসগুলো সময়মতো ছাড়ে না। যাত্রীর অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। আবার চলতে গিয়ে এত ধীরে চলে যে, ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে দ্বিগুণ বা তারও বেশি সময় লাগে। এছাড়া পথিমধ্যে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে বাসগুলো। আমিনবাজারের বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, ওয়াটার বাসগুলো কখন আসে, কখন ছাড়ে তা কেউ জানে না। তিনি বলেন, আমি ব্যবসার প্রয়োজনে বাদামতলী যাই প্রতিদিন। এক সময় ওয়াটার বাসে যাতায়াত করতাম। এখন করি না। কারণ এগুলোর টাইমটেবিলের কোনো ঠিক নেই। গাবতলীর বাসিন্দা আব্বাস উদ্দিনও একই রকম অভিযোগ করে বলেন, বাসগুলোতে সেবার মান বলে কিছু নেই। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে সেবার মান বাড়াতে হবে। তা না হলে সেটা টিকবে না এটাই স্বাভাবিক।
জানা গেছে, নানা কারণে ওয়াটার বাস ইজারা নিয়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান হিমশিম খাচ্ছে। ৮টি বাসের মধ্যে চারটি বিকল। বাকি চারটির মধ্যে দু’টি বড়, দু’টি ছোট। বড়গুলোতে জ্বালানি খরচ বেশি বলে ছোট দু’টিই চালানো হয়। এতে করে ইজারাদারকে প্রতি মাসে গড়ে ৩ লাখ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। ইজাদার কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়াটার বাসগুলোতে অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যয় করতে হয়। এগুলোর ইঞ্জিন বিকলসহ প্রায়ই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এছাড়া যাত্রাপথে ধীরগতি, সিডিউল বিপর্যয়ের কারণে সময়মতো যাত্রী পাওয়া যায় না। এসব কারণেই ওয়াটার বাস চালাতে গিয়ে বারবার লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিসির এক কর্মকর্তা গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, ইজারাদার ঠিকমতো চালাতে না পেরে এখন বিআইডব্লিউটিসির নামে বদনাম করছে। অথচ তারা জেনেশুনেই বাসগুলো ইজারা নিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগে আমরা কিছু তরুণ ক্যাপ্টেনকে দিয়ে ওয়াটার বাস সার্ভিস চালাচ্ছিলাম। তখন নানাভাবে ডিসটার্ব করা শুরু করে প্রভাবশালীরা। সে কারণেই তাদের ভাড়া দেয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, তারা চালাতে না পারলে সারেন্ডার করুক। আমরা এখন চাচ্ছিও তাই। আমরা যে কোনো উপায়ে ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু রাখব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।