রআগামী লংমার্চ হবে ‘চূ‚ড়ান্ত যুদ্ধ’
পিটিআই (পাকিস্তান তারিখে ইনসাফ) চেয়ারম্যান ইমরান খান বলেছেন, ইসলামাবাদে আসন্ন লং মার্চ হবে তার দলের ‘চ‚ড়ান্ত যুদ্ধ’ তারপর অনুুষ্ঠিত হবে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ সাধারণ নির্বাচন।
ইসলাম শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম। যুগে যুগে এ পৃথিবীতে নবী-রাসুলগণ (দ.) মহান আদর্শ নিয়ে মানবতার সেবার মাধ্যমে পথহারা মানুষকে শান্তির পথে এনেছেন। নবী ও রাসূলগণের (দ.) পর তাদের অনুসারীগণ এই কাজটুকু করেই দুনিয়াব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমাদের উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশে কোন নবী-রাসূল আসেননি, এমনকি আমরা যারা তাসাউফ, তরিকা বা সূফীবাদে বিশ্বাস করি, আমাদের তরিকার যেসকল প্রসিদ্ধ ইমাম বা বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন তারাও কেউ আমাদের দেশে আসেননি। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, হযরত শাহজালাল, হযরত শাহ পরান, হযরত মাহি ছওয়ার, হযরত খান জাহান আলীসহ যারাই এদেশে ইসলামের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেছেন তারা সকলেই এসেছেন বাগদাদ, ইয়েমেন, খুরাসান কিংবা আরবীয় কোন না কোন দেশ থেকে। জানা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্ব পুরুষগণও এদেশে ইসলাম প্রচারের কাজে আগমন করেন। বংশ পরম্পরায় শেখ লুৎফর রহমনের ঔরসে ও সায়েরা খাতুনের গর্ভে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা-মা দুজনেই ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক ও সূফীবাদে বিশ্বাসী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শিশু, কিশোর, যুবক বয়সের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে অনেক বই-পুস্তক রচিত হয়েছে, আমি সেই দিকে আলোকপাত না করে তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধর্মীয় সেবার বিষয়টি পাঠকদের খেদমতে তুলে ধরতে চাই।
ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন ধার্মিক। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই মানবতার সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি জীবনের অনেকটুকু সময় পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন। জেল-জুলুম স্বীকার করেছেন বহুবার। তাঁর মানব সেবা ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখেই দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্বভার নিয়ে বাঙালি জাতিকে বিশ্বের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলন। তিনি বাঙালি জাতিকে সুখী, সমৃদ্ধ, শিক্ষিত, ধর্মীয় জীবন যাপনে অভ্যস্থ উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে সরকারি করে জাতিকে শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছিলেন। সর্বজনশ্রদ্ধেয় মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ সাহেবের নেতৃত্বে মাদরাসা শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মাদরাসা শিক্ষক ও আলেম-ওলামাদের সম্মেলনে ১৯৭৩ সালে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা আলীয়া মাদরাসা মাঠে অংশ গ্রহণ করে এ দেশে মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়নে নীতি নির্ধারণী নির্দেশনা দিয়ে মাদরাসা শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করেছিলেন। শুধু তাই নয়, মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশকে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে স্বায়ত্ত¡শাসিত মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের যাত্রা শুরু করেছিলেন।
ইসলামের সেবা, চর্চা ও গবেষণার জন্য বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদ নিয়ে ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ এক অধ্যাদেশ বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং একজন প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন ও ইসলামিক স্কলার, মেশকাত শরীফের বাংলা অনুবাদক মাওলানা ফজলুল করিমকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রথম মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয়। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হিসেবে দুইজন আলেমকে নিয়োগ দিয়ে তিনি আলেমদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও আস্থার পরিচয় দিয়েছিলন। ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি তাঁর কতটুকু ভক্তি-শ্রদ্ধা, তাঁর অনেক বক্তৃতায়ই তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে বেতার ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমরা বিশ্বাসী ইসলামের বিশ্বাসে, আমাদের ইসলাম হযরত রাসূলে কারিম (দ.) এর ইসলাম, যে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অনেক মন্ত্র। ইসলামের প্রবক্তা সেজে পাকিস্তানের মাটিতে বারবার যারা অন্যায়, অত্যাচার, শোষণ, বঞ্চনার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, আমাদের সংগ্রাম সেই মুনাফিকদের বিরুদ্ধে। দেশের শতকরা ৯৫ জন মুসলমান সে দেশে ইসলাম বিরোধী আইন পাসের ভাবনা ভাবতে পারে তারাই, ইসলামকে যারা ব্যবহার করে দুনিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য।’
১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্ত বাতাসে এসে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল এক জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, জীবন দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, তোমরা আমাকে মারতে চাও, মেরে ফেলো। আমি বাঙ্গালী, আমি মানুষ, আমি মুসলমান। মুসলমান একবার মরে বারবার মরে না।’ বঙ্গবন্ধুর ন্যায় মহান নেতা বাঙালির স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করলেও দেশ শাসনের সুযোগ বেশিদিন পাননি। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশে ইসলামের প্রসার ও কল্যাণে যা করেছেন, তা বিশ্বের ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড স্থাপন: বঙ্গবন্ধু বর্ষীয়ান আলেমে দ্বীন মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ’কে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে মাদরাসা শিক্ষার যাত্রা শুরু করেছিলেন, যার ফলে আজকে বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার দাখিল, আলিম, ফাযিল, কামিল মাদরাসা ও ১৭ হাজার ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীগণ দেশ ও ইসলামের সেবার সাথে সাথে সমাজ উন্নয়ন, জঙ্গিবাদসহ সকল অনৈতিক কাজ থেকে দেশের মানুষকে বিরত থাকার মত কাজটিই করে যাচ্ছে। মাদরাসা থেকে সৃষ্টি হচ্ছে লক্ষ লক্ষ আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, নীতিনৈতিকতাসম্পন্ন আদর্শ নাগরিক।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা: বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে ইসলামের সেবায় যে কাজটি করে গেছেন কিয়ামত পর্যন্ত এর নেকী অবশ্যই তিনি পাবেন। আজ ইসলামিক ফাউন্ডেশন সরকারি অর্থে পরিচালিত একটি সংস্থা। এর মাধ্যমে কুরআনের বাংলা তরজমা, তাফসির, হাদিস গ্রন্থের অনুবাদ, রাসূল (সা.) এর জীবন ও কর্মের উপর রচিত ও অনূদিত বই পুস্তক, ইসলামের ইতিহাস, ইসলামি আইন ও দর্শন, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সাহাবী ও মনীষীদের জীবনী ইত্যাদি নানা বিষয়ে হাজার হাজার বই-পুস্তক প্রকাশ, ৬৪ জেলা কার্যালয় ২৮টি ইসলামিক মিশন, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মসজিদভিত্তিক মক্তব, মসজিদ পাঠাগারসহ নানাবিধ কাজের মাধ্যেমে ইসলামের মহান সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
মদ, জুয়া, হাউজি, ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধকরণ: বঙ্গবন্ধু সদ্য স্বাধীন দেশের নাগরিকদের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য ও সুন্দর একটি ইসলামি পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে মদ, জুয়া, হাউজি ও ঘোড়ার দৌড় নিষিদ্ধ করেন। বঙ্গবন্ধু মহানবী (সা.) এর শিক্ষায় অনুপ্রাণীত হয়ে এসব বন্ধ করে রেসকোর্স ময়দানে অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধ করে সে যায়গায় ফলবৃক্ষ রোপণ করেন এবং রেসকোর্স ময়দানের নাম রাখেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
কাকরাইল মারকাজ মসজিদ ও বিশ্ব ইজতেমার জন্য টঙ্গীতে জায়গা বরাদ্দ: বিশ্ব মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ, ইসলাম প্রচার ও প্রসারের সুবিধার্থে বিশেষ করে ইসলামের পথে দাওয়াতি কার্যক্রমের সুবিধার্থে ঢাকার অদূরে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের জন্য সুবিশাল জায়গা বরাদ্দ করেন। যেখানে সারাবিশ্ব থেকে লক্ষ লক্ষ ইসলাম প্রিয় ভাইয়েরা সমবেত হয়ে ইসলামি জিন্দেগী পরিচালনার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন এবং সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তদ্রæপ তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় দপ্তর হিসেবে পরিচিত কাকরাইল মসজিদ স¤প্রসারণ এবং মসজিদের জায়গা বরাদ্দ দেন। বঙ্গবন্ধুই প্রথম কমিউনিস্ট দেশ হিসেবে পরিচিত সোভিয়েত ইউনিয়নে ইসলাম প্রচারে তাবলীগ জামায়াত প্রেরণের ব্যবস্থা করেন।
বেতার ও টিভিতে কুরআন তিলাওয়াত: বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই প্রথম বেতার ও টিভিতে কুরআন তিলাওয়াত ও কুরআনের তাফসির করা শুরু হয়, যা এখনও চালু রয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মুসলমানগণ পবিত্র কুরআনের মহিমায় মহিমান্বিত হচ্ছেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শব-ই-বরাত ও শব-ই-কদর উপলক্ষে সরকারি ছুটি: আমরা মুসলমান হিসেবে, হুজুর (সা.) এর খাঁটি অনুসারী হিসেবে বিশ্বাস করি, হুজুরে পাক (সা.) এর মিলাদ পালন করা অবশ্যই নেকের কাজ। কিন্তু সরকারিভাবে এই মহাপবিত্র দিবসটি উদযাপনের জন্য সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুই ব্যবস্থা করেন। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শব-ই-বরাত, শব-ই-কদরে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন এবং এই সকল পবিত্র দিনে সিনেমা হল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু নিজে ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে বায়তুল মোকাররাম চত্বরে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠানে সরকার প্রধান হিসেবে উপস্থিত থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করে নবীপ্রেমিক হিসেবে নিজেকে প্রমাণিত করেন।
হজ্জ পালনের জন্য সরকারি অনুদান: সদ্য স্বাধীন দেশের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুই প্রথম ইসলামের পবিত্র ইবাদাত হজ্জ পালনের জন্য ব্যবস্থা করেন এবং হজ্জযাত্রীদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন: বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সভায় যোগদান করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংস্থার সদস্য পদ গ্রহণ করেন এবং এই সম্মেলনের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং উক্ত সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সাথে সুদৃঢ় ভ্রাতৃত্ব গড়ে উঠে।
ইসলামের খেদমতে বঙ্গবন্ধু অনেক কাজ করে গিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমরা তাকে হারিয়েছি। তিনি স্বপরিবারে নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন। জাতি তাঁর এবং তাঁর পরিবারের কাছে চিরঋণী হয়ে আছে। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন। ইসলাম ও দেশের সেবায় তাঁর মরহুম পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত নীতি নিয়ে এগিয়ে চলছেন। বঙ্গবন্ধুর পরিবার ধার্মিক, সূফীবাদে বিশ্বাসী আলেম-ওলামা ভক্ত। বঙ্গবন্ধুর কন্যাদ্বয়ও পীর-আওলীয়াদের তথা সূফীবাদের অনুসারী। মানবতা ও ইসলামের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা ও উত্তরসূরী। তাঁর পিতার ইসলামের সেবায় অসমাপ্ত কাজগুলো পর্যায়ক্রমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, যার মাধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করছি মাত্র। তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েই দেশের মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীনে নেতৃত্বে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের কেন্দ্রীয় নেতা ও আলেম-ওলামার উদ্দেশ্যে মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়নে তাঁর সু-উচ্চ ইচ্ছেগুলো প্রকাশ করেন এবং পর্যায়ক্রমে তিনি আলেম-ওলামার অন্তরে স্থান করে নেন। তাঁর প্রতি দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখের অগাধ আস্থা রয়েছে। তিনি আলেম-ওলামার শত বছরের দাবি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন, কওমি সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাদরাসা শিক্ষার অনেক সমস্যার সমাধান তাঁর নির্দেশেই হয়েছে, আরো হচ্ছে। মাদরাসা শিক্ষকদের মান-মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে, শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর হয়েছে, নতুন জনবল কাঠামো হয়েছে, মাদরাসা শিক্ষায় অনার্স, মাস্টার্স চালু হচ্ছে, মাদরাসাগুলোতে দৃষ্টি নন্দন অবকাঠামো হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টিতে প্রায় ৭৮টি মাদরাসায় অনার্স, ২৮টি মাদরাসায় মাস্টার্স কোর্স চালু হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষার্থীগণ আজ মাদরাসায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছে। মাদরাসার ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে সরকারি বৃত্তি ছিল না, তাও হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের হাতে লিখে নির্দেশনা দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড। তার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার সাথে সাথে মাদরাসা শিক্ষার্থীগণও নানাবিধ সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।
মাদরাসার জীর্ণশীর্ণ অবকাঠামো ভেঙ্গে বহুতল দৃষ্টিনন্দন ভবন তৈরি হচ্ছে। যেখানে আনন্দের সাথে শিক্ষার্থীগণ লেখাপড়ার পরিবেশ পাবে। আল-কুরআনের ডিজিটালাইজেশন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্য্যবর্ধন ও স¤প্রসারণ, সু-উচ্চ মিনার নির্মাণ, উপজেলা পর্যায়ে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ, বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের লক্ষে বাংলাদেশ ও রাজকীয় সৌদি আরব সরকারের মধ্যে সমঝতা স্মারক স্বাক্ষর করে হজ্জ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, জেদ্দা হজ্ব টার্মিনালে বাংলাদেশ প্লাজা স্থাপন, রেকর্ড সংখ্যক হজ্বযাত্রী প্রেরণের ব্যবস্থা করেছেন। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাহ শাহী মসজিদ ও জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের উন্নয়ন তাঁরই সুদৃষ্টির ফসল। দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক শ্রদ্ধা, ভক্তি ও আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন তিনি যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান। ইসলামের প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে তার যুগান্তকারী অবদানের কথা বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।