পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সয়াবিন তেলের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ক্রেতা পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। সরকারের এই পদক্ষেপে বর্তমান বাজার মূল্য থেকে প্রতি লিটার তেলে দাম ৩০ টাকার মত কমতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন সয়াবিন তেলের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। রমজানে বাজার পরিস্থিতি সামাল দিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের পাশাপাশি সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই দুই মাসে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি করা হয়েছে প্রায় ৯৩ হাজার টন। চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেলের আমদানি যথেষ্ট সন্তোষজনক। সরকার ভ্যাট ১৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। তারপরও বাজারে তেলের কৃত্রিম সঙ্কট এবং মূল্য নিয়ে অরাজক অবস্থা চলছে। মূলত রমজান উপলক্ষে গত ২ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোগ্যতেলের দাম কেজিতে আরো ১২ টাকা বৃদ্ধির করার প্রস্তাব করে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন ভোজ্যতেলের দাম আর বাড়বে না। ফলে ৩ মার্চ থেকে মিলার সয়াবিনের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী গোডাউনে পণ্য মজুত করে বাজারে সয়াবিনের সংকট সৃষ্টি করে। এখনো বাজারে সয়াবিন তেলের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সামান্যই।
তেল কোম্পানি এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকায় এবং আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে সয়াবিন তেল কেনায় ক্রেতাদের হুড়োহুড়ি বেড়েছে বাজারে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে কোম্পানি, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরো বিক্রেতাদের কেউ কেউ। আবার বেশি লাভের আশায় অনেকে তেল মজুত করছেন। কোম্পানির পরিবেশকেরাও চাহিদা অনুযায়ী পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীদের তেল সরবরাহ করছে না। এতে মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি তেলের কৃত্রিম সঙ্কট দেখা দিয়েছে বাজারে। গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের চাহিদা মেটানো হয় দুইভাবে। অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি করে পরিশোধনের পর বাজারজাত করে ৬টি কোম্পানি। আর সয়াবীজ আমদানি করে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সয়াবিন তেল বাজারজাত করে থাকে। এই দুই পদ্ধতিতে দেশের বার্ষিক ১২ থেকে ১৩ লাখ টন সয়াবিন তেলের চাহিদা পূরণ করা হয়ে থাকে। সেই হিসাবে প্রতি মাসে সারা দেশে সয়াবিন তেলের চাহিদা এক লাখ টনের কাছাকাছি। কেবল রমজানের সময় বিভিন্ন রকমের ভাজা পোড়া ইফতারি তৈরির কারণে এর চাহিদা প্রায় দেড়গুণ হয়ে যায়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, গত বছর জানুয়ারি- ফেব্রæয়ারি মাসে সয়াবিন তেল বাজারজাত হয়েছিল ১ লাখ ২১ হাজার টন। একই সময়ে বর্তমান বছরে গত বছরের চেয়ে ৪৮ হাজার টন বেশি তেল আমদানি করা হয়েছে। সেই হিসাবে বাজারে কোনো ভাবে সয়াবিন তেলের সঙ্কট হওয়ার কথা নয়। অথচ বাস্তবে তাই দেখা যাচ্ছে।
দেশে সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েল এই ছয়টি প্রতিষ্ঠান দেশে সয়াবিন তেল আমদানি, পরিশোধন ও বাজারজাত করে থাকে।
জানতে চাইলে টিকে গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার বলেন, তেলের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে মিল রেখে আমাদের বাজারেও তেলের মূল্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। তাহলে চাহিদানুযায়ী যেমন আমদানি অব্যাহত থাকবে, তেমনি বাজারে সরবরাহ সঙ্কট বা হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দেবে না।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমদানিকারক ছয়টি প্রতিষ্ঠান ঠিক মতো তেল আমদানি করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। কারণ, সয়াবিন তেল আমদানি ও বাজারজাতকরণ এই ছয়টি প্রতিষ্ঠানের হাতে। এসব প্রতিষ্ঠান আমদানি ঠিক মতো না করলে, ভবিষ্যতে তেলের বাজারে সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, সয়াবিন তেলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমানো হলেও এতে ভোক্তারা কতটা সুফল পাবেন, আদৌ পাবেন কি না, সে বিষয়ে কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। তবে আমি মনে করি, এই ৬ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকার যদি তেল আমদানি করে বাজারে সরবরাহ করতে পারে, তাহলে ভোক্তারা এর সুফল পাবে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।