পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই যে কোনো সদস্যকে জাকাত বোর্ডের সদস্য পদ থেকে বাতিল করতে পারবে- এমন বিধানযুক্ত করে ‘জাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইন-২০২২ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় তোলা হচ্ছে। এদিকে ভিকটিমকে পুলিশের জেরার ক্ষমতা বাতিল করা হচ্ছে। ধর্ষিতার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন নয়, এমন বিধান যুক্ত করে এভিডেন্স (এমেন্ডমেন্ট) খসড়া আইন-২০২২-এর খসড়া মন্ত্রিসভায় উত্থাপন হচ্ছে।
বিচারপতিদের ১৮ মাসের ছুটি নগদায়ন সুবিধাযুক্ত করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২২ খসড়ার নীতিগত ও চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হচ্ছে। অন্যদিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির বাড়ি (সম্পূরক বিধানাবলি) আইন, ২০২২-এর খসড়ার নীতিগত/ চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের উত্থাপন করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেবেন। এবার সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের ১৩ তলায় মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে অবস্থান করবেন।
জানা গেছে, জাকাত আইনে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত নতুন প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালে এবং ১৯৮২ সালে জাকাত তহবিল গঠন করা হয়। পরে ২০১৩ সালে সরকার আইনটি নতুন করে সংশোধন করে। পরে সেই ধারাগুলো বাংলায় নতুন আইন প্রণয়নের জন্য ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে কিছু সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন আইনের খড়ায় বলা হয়, তহবিলের অর্থ সরকারিভাবে সংগৃহীত হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি, বিদেশি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত অর্থ যেকোনো তফসিলি ব্যাংকের জাকাত ফান্ডে জমা দিয়ে জাকাত আদায় করতে পারবেন। আর একটি বোর্ড থাকবে। ধর্মমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী এটার চেয়ারম্যান থাকবেন। সরকারিভাবে জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণ করা হবে এবং আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারিভাবে জাকাত দানে উদ্বুদ্ধকরণ, জাকাত সংগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন, জাকাত দানে আগ্রহী ব্যক্তিদের জাকাতযোগ্য সম্পদের বিষয় খসড়া আইনে রয়েছে। জাকাত বোর্ডে সদস্য থাকবে ১৫ জন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি করে দেবে ইসলামি ফাউন্ডেশন বা ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে।
বিচারপতিদের ১৮ মাসের ছুটি নগদায়ন সুবিধা বৃদ্ধি
এদিকে বিচারপতিদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০১৫ সালে আইনে সরকারি কর্মচারীরা ১৮ মাসের ছুটি নগদায়ন সুবিধাভোগ করে আসছে। সেই সুবিধা থেকে বিচারপতিরা বঞ্চিত হয়ে আসছিল। এরূপ সুবিধাদি অন্তর্ভুক্ত করে আইনের খসড়া প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত পাঠানো আইনের সার-সংক্ষেপে বলা হয়, সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আনিত ও বিচার বিভাগের আওতাধীন সুপ্রিম কোর্ট জাজ (লিভ, পেনসন এন্ড প্রিভিলেজ) অরডিনেন্স, ১৯৮২ সময়োপযোগী করে নতুন আইন আকারে বাংলা ভাষায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২২ খসড়া প্রস্তুত করা হয়। প্রস্তাবিত খসড়া আইনটি সময়োপযোগী করার উদেশ্যে পূর্বের আইনের কিছু বিধান সংশোধন করা হয়েছে। অর্থ বিভাগের ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখের স্মারকমূলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টেও বিচারকরা পেনশন পুনঃস্থাপন সংক্রান্ত সুবিধাদি ইতোমধ্যে প্রাপ্ত হওয়ায় এবং চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫ অনুসারে সরকারি কর্মচারীগণ ১৮ মাসের ছুটি নগদায়ন সুবিধাভোগ করায় বিচারকগণের জন্য এরূপ সুবিধাদি খসড়া আইন অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাছাড়া আইনজীবী হতে নিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণের ভবিষ্যৎ তহবিল সংক্রান্ত বিধান সংযোজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির অবসরোত্তর সুবিধা সংক্রান্ত বিধান অন্তর্ভুক্তি ও প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়া প্রস্তাব পর্যালোচনা বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত খসড়া আইনটির উপর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত এবং গত ২৫ মে ২০২১ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। ধারা ১৪-তে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইন অনুসারে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস হইতে বিচারক নিয়োগের বিধান থাকায় মূল আইনের সিভিল সার্ভিস শব্দগুলোর পরিবর্তে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস শব্দগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ধারা ১১ তে সরকারী কর্মচারীগণের পেনশন সহজীকরণ আদেশ ২০২০ অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য পারিবারিক পেনশনের বিধানাবলি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণের জন্য অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
ধর্ষিতার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন নয় এ আইন
ধর্ষণ মামলা আইনে পরিবর্তন আসছে। এ আইনে পরিবর্তন করতে একটি খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদান-সংক্রান্ত কমিটির সুপারিশের জন্য সারসংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জামা দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত পাঠানো আইনের সার-সংক্ষেপে বলা হয় ১৫০ বছরের পূর্বের এভিডেন্স (এমেন্ডমেন্ট) ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ধারার ৪ উপধারার ভিত্তিতে ধর্ষণের অভিযোগ মামলা হয়ে আসছে। এতে ধর্ষণের শিকার ভিকটিমকে তার নৈতিক চরিত্র হরণের শিকার হতে হয়েছিল। ধর্ষণ মামলার ভিকটিমকে চরিত্র এবং অতীত ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন করার সম্পর্কিত বিধান বাতিল করা হচ্ছে। পুলিশের জেরা করার ক্ষমতা আর আইনে থাকছে না।
দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য চিহিতকরণ ও গ্রহযোগ্যতা নির্ধারণ, প্রমাণের দায়ভার, অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি ও আদালতের সাক্ষ্য উপস্থাপনসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রাসঙ্গিকতা নির্ধারণ করা লক্ষ্যে এভিডেন্স (এমেন্ডমেন্ট)-১৮৭২ আইন প্রণয়ণ করা হয়। সাক্ষ্য সম্পর্কিত এরূপ বিধিবদ্ধ একক আইন এই উপমহাদেশ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই। ১৫০ বছরে পূর্বে প্রণীত আইনটি বর্তমান সময়ে কার্যকরভাবে প্রাসঙ্গিক হলেও বিচার ব্যবস্থায় ডিজিটাইজেশন একটি নতুন বাস্তবতা এবং এ বাস্তবতার নিরিখে এভিডেন্স (এমেন্ডমেন্ট)- ১৮৭২ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে।
বিদ্যমান এভিডেন্স (এমেন্ডমেন্ট) ১৮৭২ অনুযায়ী ধর্ষণ মামলার ভিকটিমকে জেরাকালে তার চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করার সুযোগ রয়েছে। যা নারীর জন্য মর্যাদাহানিকর ও আইনের চোখে সমতা নীতি পরিপন্থি। এমতাবস্থায়, বিদ্যমান এভিডেন্স (এমেন্ডমেন্ট) ১৮৭২ আইন সংশোধন করে ধর্ষণ মামলার ভিকটিমকে তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা সম্পর্কিত বিধানটি বিলুপ্ত করা আবশ্যক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।