পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশজুড়ে চলছে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সঙ্কট। খোলা সয়াবিন ও পাম তেল পাওয়া যাচ্ছে হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে। অথচ ভোক্তাকে কিছুটা স্বস্তি দিতে গত বৃহস্পতিবার ভোজ্যতেল আমদানি ও খুচরা মূল্যে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে সরকার, তবে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি বাজারে। দোকানগুলোতে তেলের সরবরাহ এখনও কম। পাইকারি দোকানিরা বলছেন, মিল থেকে সরবরাহ দেয়া হচ্ছে না এখনও। অবশ্য মিল মালিকরা এই অভিযোগ কখনও স্বীকার করেননি।
বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির কথা বলে স্থানীয় বাজারে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে সয়াবিনের মূল্য। গত ১ মার্চ থেকে লিটারে আরও ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করে সরকারকে চিঠি দিয়েছিল ভোজ্যতেল পরিবেশকরা। তবে সরকার এতে সায় দেয়নি। দাম বাড়াতে না পারার পর তেলের বাজারে দেখা দেয় অস্থিরতা। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না পাওয়ার অভিযোগ করতে থাকেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ফলে খুচরা বিক্রেতারাও চাহিদা অনুযায়ী তেল পাচ্ছিলেন না।
সরকারের ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণায় তেলের বাজারজাতকরণ খরচ কমায় স্বাভাবিকভাবে ব্যবসায়ীরা আগের দাম নিলেও তাদের মুনাফা বাড়ার কথা। তবে ভ্যাট প্রত্যাহারের ঠিক পরের দিন গতকাল শুক্রবার বাজারগুলোতে তেলের সরবরাহ নিয়ে আগের যে অভিযোগগুলো পাওয়া যাচ্ছিল, তার কোনো হেরফের হয়নি।
রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারের মুদি দোকানিরা জানান, নতুন করে তেল সরবরাহ করা হয়নি। পণ্যের দাম কমানোর অন্যতম অস্ত্র শুল্ক প্রত্যাহার। সেই কৌশলই নিয়েছে সরকার, তবে এর সুফল কবে পাবে ক্রেতা, তার দিনক্ষণ নেই। টিসিবির তথ্য বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচ লিটার বোতলে দাম বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ।
হাতিরপুল বাজারের ভাই ভাই স্টোরের হালিম জানান, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ লিটার তেলের দরকার হলেও দেয়া হচ্ছে ৫ থেকে ১০ লিটার। চাইলেই বলে দাম বাড়বে। তাই সরবরাহ বন্ধ আছে। তিনি জানান, সব কোম্পানি তেল দেয় না। আগে ৪ থেকে ৫টি কোম্পানি তেল সরবরাহ করলেও এখন দেয় ১ থেকে ২টি কোম্পানি।
পাইকারি বাজারেও তেলের সরবরাহ কম। কারওয়ান বাজারের দ্বিতীয় তলার তেল ব্যবসায়ী শওকত মিয়া বলেন, দোকান ফাঁকা, তেল নেই। চাইলে দেয় না, বলে দেরি হবে। তিনি বলেন, তেলের দোকানগুলো ফাঁকা। সপ্তাহখানেক ধরে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। মিল মালিকরা সরবরাহ না করলে, তেলের সঙ্কট দূর করা সম্ভব না। কারওয়ান বাজারের অন্য এক ব্যবসায়ী বলেন, দিনে দরকার ২০০ লিটার তেল। সরবরাহ করা হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ লিটার।
ব্যবসায়ীরা জানান, তেল চাইলে তার সঙ্গে গছিয়ে দেয়া হচ্ছে অন্য পণ্য। মোহাম্মদপুর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, তেল দিলে তার সঙ্গে পোলাওয়ের চাল, চা পাতা, হালিম মিক্স, আটা-ময়দা নেয়ার শর্ত জুড়ে দেয়া হচ্ছে। না নিতে চাইলে তেল দেয়া হচ্ছে না। তারা জানান, তেলের সঙ্কট সৃষ্টির পর থেকে এমন আচরণ করা হচ্ছে। অনেক সময় অপ্রচলিত পণ্য নেয়ার শর্ত জুড়ে দেয়ার কারণে সমস্যা হচ্ছে। দোকানিদের ক্রেতা ধরে রাখতে তেল নিতেই হচ্ছে।
শুধু সয়াবিন তেলের বাজারেই নয়, গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে সবজির বাজারও ছিল চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে গোশত, সবজি, মাছ, পেঁয়াজ, আটাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা পযর্ন্ত বেড়েছে। লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এতে একদিকে যেমন বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয় অপরদিকে বাড়ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের দুর্দশা।
বাজারে প্রতিপিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে টমেটো ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, করলা কেজিপ্রতি ১২০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, ফুলকপি আকারভেদে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, মটরশুঁটি ৮০ টাকা। এছাড়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, গতসপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া আলু (পুরনো) ২০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পযর্ন্ত বেড়েছে গোশতের দাম। বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা। গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৬২০ থেকে ৬৫০ টাকায়, গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৬২০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায়।
বাজারে প্রতিকেজি চাষের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজনের কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, শিং ও টাকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাঙ্গাস। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। এছাড়া আকারভেদে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে চালের দাম। প্রতিকেজি চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৭০ টাকা, মাঝারি আকারের চাল ৫২ থেকে ৫৮ টাকা এবং মোটা চাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায়। প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। খোলা ময়দা ৪৮ থেকে ৫০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৫২ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। গতসপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকায়, হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়, শুকনা মরিচ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে খোলা আদা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।