Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোজার আগেই পণ্যমূল্যে দিশেহারা

নিয়ন্ত্রণহীন বাজার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২২, ১২:০৯ এএম

ভোজ্যতেলে ১৫ দিনে এক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে : এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান ষ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে : ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য ষ দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে : গোলাম রহমান

এ যেন ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরেই অন্তরে’ কবিতার মতোই চিত্র। পবিত্র রমজান মাস শুরুর ২২ দিন আগে গতকাল রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ৬৯১ কোটি টাকার তেল, চিনি, ছোলা ও মসুর ডাল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করবে। যেখানে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে এক মাস থেকে ২ মাস লেগে যায়; তখন রমজানের নিত্যপণ্য ক্রয়ে এতো বিলম্ব কেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এতোদিন কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঘুমিয়ে ছিল?

এমনিতেই নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা মানুষ। বাণিজ্যমন্ত্রী ২ মার্চ ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হবে না’ ঘোষণা দেয়ার পর ৩ মার্চ থেকে বাজারে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাজারে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বেশি। নিত্যপণ্য মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তার ওপর রমজানে কয়েকটি নিত্যপণ্যের চাহিদা বেশি। এখন তড়িঘড়ি করে তেল, চিনি, ছোলা, মসুর ডাল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের মধ্যে ভীতি আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবছর কমপক্ষে ৩ থেকে ৬ মাস আগে রোজার প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের মজুত গড়ে তোলা হয়। অথচ রমজানের ২২ দিন আগে এবার ৬৯১ কোটি টাকার নিত্যপণ্য ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিল!

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহŸায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার পণ্যের দাম যে পর্যায়ে গেছে, তাতে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্রয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে সুরক্ষা দিতে হবে। আয় বাড়াতে হবে, জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের শুল্ক কর কমাতে হবে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া মানুষ বেশি ব্যবহার করে যেসব পণ্য, সেগুলোর আমদানি খরচ কমানোর উদ্যোগ দরকার।

বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সংসার চালাতে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। টিসিবির হিসাবে দেখা যায় ২০২০ সালে ফেব্রæয়ারির তুলনায় গত ফেব্রæয়ারিতে মোটা চালের দাম ৩২ শতাংশ, সরু চাল ২৮, বোতলজাত সয়াবিন তেল ৫৫, খোলা সয়াবিন তেল ৮২, মোটা দানার মসুর ডাল ৬৩, চিনি ৩২, ব্রয়লার মুরগি ২১, খোলা আটা ২২ ও এলপি গ্যাসের দাম ১৮ শতাংশ করে বেড়েছে। চাল, তেলের মতো বাজারে মাছ, গোশত, সবজির দামও বেড়েছে। ২ বছরের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২৫ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। অথচ সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২০ সালের অক্টোবরের এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় ওই সময় মানুষের আয় কমেছিল ২০ শতাংশ। ফলে মানুষ এমনিতেই পুঁজি ভেঙে সংসার চালাচ্ছেন।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এই দুঃসময়ে আমার একটাই পরামর্শ, কোনো অবস্থাতেই গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো যাবে না। বাড়ালে সাধারণ মানুষের ওপর ভয়াবহ পরিস্থিতি নেমে আসবে। রোজার আগে সরকারের পণ্যক্রয় নিঃসন্দেহে একটা ভালো উদ্যোগ। সরকার আসলে কোন রেটে কিনছে সেটাও দেখার বিষয়। সরকার যদি ম্যাক্সিমাম রিটেইল প্রাইসেই কিনে, তাহলে ভোক্তাদের কোনো কাজে আসবে না। এছাড়া ঠিকমতো বণ্টন করতে পারাটাও একটা চ্যালেঞ্জ।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় রমজানের চাহিদা মেটাতে ১ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৬৫২ লিটার সয়াবিন তেল, ১৪ হাজার টন চিনি, ১০ হাজার টন ছোলা এবং ১৯ হাজার ৫০০ টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯১ কোটি ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৩৬ টাকা।

পুরো বছরজুড়ে নিত্যপণ্য মূল্য সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই ৮ দিন থেকে। গত ৯ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোজ্য তেল মিল মালিক ও ডিলারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান তথ্য দিয়েছেন যে, ভোজ্যতেলের বাড়তি দাম নিয়ে ১৫ দিনে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। প্রতিদিনের ভোজ্য তেলের চাহিদার সাথে তুলনা করে তারা আনুমানিক এই পরিসংখ্যান পেয়েছেন। তার মতে, প্রতিদিন যদি ৫০০০ টন ভোজ্য তেলে চাহিদা থাকে, তাতে লিটারে ১০ টাকা করে বাড়লে মোট অংক অনেক বড় হয়। তবে তিনি জানান, বৈঠকে মিল মালিকরা গত তিন মাসের সরবরাহের তথ্য বা তালিকা দিয়েছেন। দেশে বছরে ভোজ্য তেলের চাহিদা ২০ লাখ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী তিন মাসের চাহিদা ১ লাখ ৫০ হাজার টনের মতো। মিল মালিকরা যে তথ্য বা তালিকা আমাদের দিয়েছে, তাতে তারা চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের দাবি করেছে। ভোজ্যতেল উধাওয়ের মধ্যেই বাজারে পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা ও মসুর ডালের দাম আকাশচুম্বি। সবশেষে বেড়েছে আলুর দাম। সংসারের অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দেশের বেশিরভাগ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এতোদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দাবি করা হচ্ছে রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য মজুত রয়েছে। এমনকি বাণিজ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন রোজার সময় ২ কোটি মানুষকে টিসিবির মাধ্যমে ২ কোটি মানুষকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য দেয়া হবে। এ জন্য ছোলা, মসুর ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি ও খেজুর মজুদ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টন। এর মধ্যে ছোলা রয়েছে দেড় হাজার টন, খেজুর একশ টন, ভোজ্যতেল প্রায় আড়াই হাজার টন, ২ হাজার টন চিনি ও মসুর ডাল মজুদ রয়েছে ১ হাজার টন।

গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, রমজানে পণ্যের দাম যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেজন্য যেসব পণ্যের ওপর ভ্যাট ছিল সেগুলো তুলে নিয়েছি। ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। মূলত আমাদের রমজান মাসে যেসব পণ্য বেশি প্রয়োজন সেসব পণ্য, কারণ সবাই এগুলো ভোগ করে। ভোজ্যতেল সয়াবিনের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা ১ কোটি পরিবারকে টিসিবির আওতায় নিয়ে আসতে যাচ্ছি। সেখানে ভোজ্যতেল থেকে শুরু করে অন্যান্য যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে, সেসব জিনিস আমরা টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে তাদের কাছ পৌঁছে দেব।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রমজান মাসে কয়েকটি পণ্যের চাহিদা বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা ১৮ লাখ টন। তার মধ্যে রমজান মাসে চাহিদা থাকে ৩ লাখ টনের। সারা বছরজুড়ে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২১ লাখ টন। তার মধ্যে রমজান মাসে চাহিদা ৪ লাখ টন। মসুর ডালের বছরজুড়ে চাহিদা ৫ লাখ টন। তার মধ্যে রমজান মাসে চাহিদা ৮০ হাজার টন। সারাবছর ছোলার প্রয়োজন হয় প্রায় দেড় লাখ টন। এর মধ্যে রমজান মাসে চাহিদা ৮০ থেকে ৯০ হাজার টন। বছরজুড়ে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টন। এর মধ্যে রমজানের এক মাসে চাহিদা ৫ লাখ টন।

ইউক্রেট-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর আগেই আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলার দাম টনে ২৫০ থেকে ৫০০ ডলার বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকারকরা ধীরগতিতে পণ্য আমদানি করেছে। আমদানি হওয়া পণ্য সঙ্গে সঙ্গেই চট্টগ্রামবন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সরকারিভাবে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করা পণ্য দেশীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। এখন ইউক্রেট-রাশিয়া যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ায় সব পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। ফলে রমজান মাসে এসব পণ্যের দাম ক্রেতাদের সহনীয় পর্যায়ে থাকবে কি-না তা নিয়ে ব্যবসায়ীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, রমজানে ছোলা, চিনি, ভোজ্য তেল, মসুর ডাল, খেজুরের বেশি চাহিদা থাকে। এবার ছোলা প্রচুর মজুত ও আমদানি হচ্ছে। ফলে ছোলার দাম বাড়বে না। তবে মসুর, চিনি ও মটর ডালের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সয়াবিন তেল গুদামে রেখে বিক্রি বন্ধ করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। ফলে ভোজ্যতেলের দামও রোজাদারদের ভোগাবে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার ভোগ্যপণ্যের বাজার বাড়তি মূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গেছে। গত এক মাস ধরে ছোলা, মসুর ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেলের মধ্যে ছোলা ছাড়া বাকি পণ্যের দাম কয়েক দফায় বেড়েছে। বিশেষ করে ভোজ্যতেলের দাম বেশি বেড়েছে। দেশের শীর্ষ স্থানীয় ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক আবুল বশর চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল, চিনি, মসুর ডাল ও মটর ডালের দাম টনে ২৫০ থেকে ৫০০ ডলার বাড়তি। ফলে দেশীয় বাজারে সামনে তার প্রভাব পড়বে।

টিসিবি সূত্র জানায়, রমজান মাসে যাতে ভোগ্যপণ্যের বাজার বাড়তে না পারে সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আড়াই কোটি লিটার ভোজ্য তেল, ৬০০ টন ছোলা, ১৭ হাজার টন মসুর ডাল ও ১৩ হাজার টন চিনি কেনার প্রস্তুতি চলছে। ডিলারদের মাধ্যমে খোলা বাজারে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। টিসিবি’র একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারিভাবে ছোলা ও মসুর ডাল আমদানি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৭২০ টন ছোলা চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। আরো পাইপলাইনে রয়েছে। চিনি ও ভোজ্য তেল স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হবে। সামনে খোলা বাজারে ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি বাড়ানো হবে। এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ২৫ হাজার টন ছোলা, ৩০ হাজার টন মসুর ডাল ও ১০ হাজার টন খেজুর আমদানির আইপি নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে ঢাকায় প্রধান কার্যালয় থেকেও আইপি ইস্যু করা হচ্ছে। বর্তমানে ১ লাখ টন ছোলা বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।

রোজার ২২ দিন আগে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ সেনা ভোজ্যতেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সুপার অয়েল রিফাইন্ড লিমিটেড, মেঘনা ভোজ্যতেল শোধনাগার লিমিটেড, সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড, বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং শুন শিং এডিবল অয়েল লিমিটেডের কাছ থেকে মোট ১ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৬৫২ লিটার সয়াবিন তেল ২৮৭ কোটি ৫৪ লাখ ২৯ হাজার ৫৩৬ টাকায় সরাসরি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, টিসিবি মেঘনা সুগার রিফাইন্ড লিমিটেড ও সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ১৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি সর্বমোট ১১০ কোটি ৬০ লাখ টাকায় সরাসরি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে মেঘনা সুগার রিফাইন্ড লিমিটেডের কাছ থেকে ৭ হাজার টন চিনি ৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকায় এবং সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ৭ হাজার টন চিনি ৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকায় কেনা হবে। এছাড়া টিসিবি সেনাকল্যাণ সংস্থা, এম/এস বøু স্কাই এন্টারপ্রাইজ ও রুবি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের কাছ থেকে ১০ হাজার টন ছোলা সর্বমোট ৮১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় সরাসরি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সেনাকল্যাণ সংস্থার কাছ থেকে ২ হাজার মেট্রিক টন ছোলা ১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকায়, এম/এস বøু স্কাই এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে ৪ হাজার টন ছোলা ৩২ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় এবং রুবি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের কাছ থেকে ৩২ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় ৪ হাজার টন ছোলা কেনা হবে। শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইজ সার্ভিসেস লিমিটেড, পোরবো ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স রায় ট্রেডার্স, প্লান্টিক ইনকর্পোরেশন, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড এবং বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কাছ থেকে মোট ১৯ হাজার ৫০০ টন মসুর ডাল ২১১ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সরাসরি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছে মানুষ। সংসার চালাতে হিমসীম খাচ্ছেন। সামনে রমজান কীভাবে রোজার ইফতার সেহরির জন্য বাজার করবেন, তা ভেবে চোখে ঘোর অন্ধকার দেখছেন। অথচ এসব নিয়ে যাদের চিন্তা করার কথা সেই নেতারা এখনো একে অপরকে দোষারোপের প্রতিযোগিতা চালাচ্ছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ব্যসসায়ীরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত থাকায় পণ্যের মূল্য বেড়েছে। সরকারি দলের নেতারা পণ্যমূল্য থেকে বখরা নেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপির দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত। অবশ্য গতকাল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পবিত্র রমজান মাসে পণ্য সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। পর্যাপ্ত পণ্য মজুদ থাকা সত্তে¡ও কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজান ও বিশেষ বিশেষ সময়ে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে। এসব অসাধুচক্রের বিরুদ্ধে সরকার সোচ্চার রয়েছে। রমজান মাসে কোনো অসাধু চক্রের কারসাজি ও কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে মূল্য বাড়ানোর অপচেষ্টাকে সফল হতে দেয়া হবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে।

 



 

Show all comments
  • Mohammad Abul Mamun ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
    নিত্যপণ্যের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে সাধারন মানুষের জীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় মনে হয় কারো জানা নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Irfan Hossain ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
    দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এ দেশের নিয়মে পরিনত হয়েগেছে। অজুহাত সবসময় প্রস্তুত থাকে সর'কারের মন্ত্রী যখন বলেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ৩ গুণ বেড়েছে তখন ব্যবসায়ীরা ১ থেকে ৩ গুণ দাম বাড়িয়ে দেয়। এখানে সর'কারের ইচ্ছায় দাম বাড়ছে।বেশী মুনাফার আশায় খাদ্যশস্য মজুদকারীদের উপর আল্লাহর লা'নত ব'র্ষিত হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Umar Faruk ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১১ এএম says : 0
    জীবন ধারণের উপযোগী সব কিছুরই অগ্নিমূল্য। চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, তরিতরকারি, চিনি, লবণ, গম, আটা, রুটি, ঔষধ সহ সকল দ্রব্যের মূল্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের জন্যই সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD A Hakim ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১১ এএম says : 0
    জানেন কি? করোনা মহামারিতে অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছে, অনেক বে-সরকারি চাকরিজীবির আয় কমেছে, শ্রমিকদের মজুরি তেমন বাড়েনি,প্রতি নিয়তো দরিদ্র মানুষ অতি দরিদ্র হচ্ছে, চাল, ডাল, সোয়াবিন,জ্বালানি সহ নিত্য পন্যের দাম যে পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এতে আর আমাদের বাজারে যাওয়া বা বাজার করার প্রয়োজন হবে না!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Jaherul Islam ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১১ এএম says : 0
    ইউরোপ আমেরিকার দ্রব্যমূল্য নিয়ে কিছু লিখ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Jamal Uddin ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১২ এএম says : 0
    সরকারের লাগামহীন দুনির্তীর কারনে দেশে নিরব দূভির্ক্ষ চলছে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Niaz Morshed ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১২ এএম says : 0
    হে আমাদের প্রতিপালক!! হে আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা। আপনি আমাদের ভিতরে মনুষ্যত্ব বোধ দান করুন। পৃথিবীর সকল মানুষকে বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করুন। সেই প্রার্থনা করি আপনার কাছে প্রিয় প্রভু আমার!!
    Total Reply(0) Reply
  • MD AR Somun ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১২ এএম says : 0
    আমদানীতে/উৎপাদনে শুল্ক কমালে দাম এমনিতেই কমবে,,,
    Total Reply(0) Reply
  • Shimu Talukder ১১ মার্চ, ২০২২, ৭:১৩ এএম says : 0
    দেশ ধনী হলে দ্রব্যমূল্য একটু বাড়েই। এটা নিয়ে হৈচৈ না করে নিজেকে ধনী ভেবে ছেঁড়া খ্যাতা গায়ে দিয়ে শান্তিতে ঘুমান।
    Total Reply(0) Reply
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১১ মার্চ, ২০২২, ৯:১২ এএম says : 0
    পবিত্র রমজান উপলক্ষে মুসলিম দেশে জিনিস পত্রের খাদ‍্য সামগ্রীর দান কমিয়ে দেন রমজানের রোজার সম্মানাত্বে। কিন্তু পৃথিবীর মাঝেই বাংলাদেশের চিত্র বিন্ন। এখানে রমজানের কি ঈদ কি। সওয়াব কি। গুনাহ চিন্তা করার সম্মান করার মানুষ নেই। এদের মানুষের কাতারে হিসাব করলে গুনাহ হবে। এরা ধর্ম কর্ম মানবতার হিসাব বুঝেনা। এরা বুঝেন লাভ। রমজান রোজাদারদের মর্যাদা সম্পর্কে মহান আল্লাহর বাণী গুরুত্বপূর্ণ রোজা আমার জন‍্য আল্লাহ্ বলেন। এর প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকেই নিদ্ধারীত আছেন। আলহামদুলিল্লাহ্। মুসলমানদের মাঝে ইসলামের মর্মবাণী পবিত্র রমজানের তাফসীর রমজানের নিয়ামত বরকতপূর্ণ ফজিলতপূর্ণ বাণীর কি মর্যাদা নেই কেন? এগারো মাস ব‍্যবসা করুন একমাস পবিত্র রমজানের সম্মানে রোজাদারদের সম্মানে লাভবান হতে বিরত থাকা কর্তব্য ছিল। দায়িত্ব ছিল। এখানে রমজান কে ব‍্যবসা করার পরিকল্পনায় রমজানের আগেই জিনিসের দাম বৃদ্ধির নতুন নতুন কৌশল করেন। সবাই যার যার মতো করে ইচ্ছে মতো করেই যাচ্ছেন রাষ্ট্র কে আইন কে ইসলাম কে মর্যাদা সম্মান দিচ্ছেন না।এই হলো মুসলমান নামদারী বাংলাদেশের কিছু ব‍্যবসায়ী সমাজ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ