Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মাশরুম চাষ শিখিয়েছে লকডাউন

আইন পেশা ছেড়ে হলেন সফল চাষি

এএম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২২, ১২:১৯ এএম

করোনাভাইরাসে লকডাউন এবং যোগাযোগ বন্ধে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছেদ পড়ে। জীবিকার উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। ঠিক তখনই বিকল্প জীবিকার সন্ধানে লড়াই শুরু করেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার যুবক সৌমিত্র মজুমদার শুভ। তিনি মাশরুম চাষ করে সফলতার মুখ দেখার পরই বাণিজ্যিকভাবে চাষের দিক দৃষ্টি দেন।

বর্তমানে সৌমিত্রের খামারে রয়েছে এক হাজার খড়ের স্পন প্যাকেট। আর এ স্পন থেকে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো মাশরুম বিক্রি করে মাসে আয় করছেন কমপক্ষে ৬০ হাজার টাকা। এমন সফলতা পুরো এলাকায় সাড়া ফেলেছে। তার বাড়ি কলাপাড়ার দক্ষিণ কালিকাপুর এলাকায়। বাবার নাম সুশান্ত মজুমদার। ২০১৭ সালে এলএলবি পাশ করে ঢাকায় এক আইনজীবির সহকারি হিসেবে কাজ শুরু করেন।

করোনাকালীন সময়ে আদালত বন্ধ থাকায় এলাকায় ফিরে আসেন তিনি। বেশ কিছুদিন বেকার থাকার পর জার্মানিতে থাকা খালাতো বোনের পরামর্শে আগ্রহী হন মাশরুম চাষে। পরে সাভারের জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টারে দুই মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।

গত বছরের এপ্রিলে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির নবাবগঞ্জ গ্রামে খালার বাড়িতে ৫০টি স্পন প্যাকেট দিয়ে শুরু করেন মাশরুম চাষ। ফলন ভালো হওয়ায় ওই বাড়ির ২০ শতাংশ জমিতে দুটি সেডের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন মাশরুম খামার। বর্তমানে খামার থেকে প্রতিদিন ১৫ কেজি করে মাশরুম পাচ্ছেন তিনি। তাতেও মেটাতে পারছেন না স্থানীয় চাহিদা।

সৌমিত্র জানান, খড়, কাঠের গুড়া, গমের ভ‚ষি, তুষ ও চুন দিয়ে নিজেরাই মাশুরুমের বীজ তৈরি করেন। পরে বীজের সঙ্গে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টার থেকে আনা টিস্যু কালচার যুক্ত করে সঠিক পরিচর্যা ও দিনে তিনবার পানি স্প্রের মাধ্যমে ২০ দিনের মাথায় শুরু হয় ফলন। এ কাজে তেমন একটা পরিশ্রম নেই। প্রতিদিন ৩০ কেজির মতো অর্ডার আসে। বেশির ভাগ অর্ডারই অনলাইনেই আসে। খামার আরো বড় করতে পারলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করার আশা তার।

খামার পরিদর্শনে আসা বরগুনার কৃষি খামারি মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, এলাকায় ড্রাগনসহ কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। মাশরুম চাষের খবর পেয়ে দেখতে এসেছেন। খামার দেখে মনে হচ্ছে মাশরুম চাষ করা মোটামুটি সহজ। তিনি নিজেই এলাকায় এই খামার গড়ে তুলতে চান।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, মাশরুম চাষ একটি লাভজনক পেশা। এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। কলাপাড়া কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাশরুম চাষি শুভকে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া এই এলাকার কোন যুবক মাশরুম চাষে আগ্রহী হলে সহযোহিতা করা হবে। আমরা চাই কলাপাড়ায় মাশরুম চাষের বিপ্লব ঘটুক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাশরুম চাষ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ