Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হোয়াইট হাউজ দখলের লড়াই

প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫৭ পিএম, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

স্টালিন সরকার : বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ। গোটা বিশ্বের দৃষ্টি এখন নির্বাচন নামক হোয়াইট হাউজ দখলের লড়াইয়ের দিকে। রেভারে- মার্টিন লুথাং কিংয়ের দেশে ভোট হচ্ছে ৫০টি অঙ্গরাজ্য এবং একটি ফেডারেল টেরিটরিতে। সাধারণ মানুষের ভোটের পাশাপাশি রয়েছে ৫৫৮টি ইলেক্টোরাল ভোট। ভোটে জেতার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট হতে হলে পেতে হবে ২৭৯টি ইলেক্টোরাল ভোট। আগাম ভোট দেয়ার সিস্টেম থাকায় ইতোমধ্যে শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ ভোট দিলেও এখন চলছে ভোট গ্রহণের ক্ষণগণনা। প্রেসিডেন্ট পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও হোয়াইট হাউজ দখলের লড়াই হচ্ছে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী সাবেক ফাস্টলেডি হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান দলের প্রার্থী নিউইয়র্কের রিয়েল এস্টেট মুঘল ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে। শেষ মুহূর্তে শ্বাসরুদ্ধকর প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচারণায় জরীপে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তার পারদ উঠানামায় উত্তেজনা-স্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও দুই প্রার্থীই বিভিন্ন ইস্যুতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। ট্যাক্স ফাঁকি, নারী কেলেঙ্কারী, মেয়েদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য, ইসলামবিদ্বেষী, মেক্সিকো সীমান্তে বেড়া দেয়া এবং অভিবাসীদের বের করে দেয়াসহ কয়েকটি ইস্যুতে ট্রাম্প বিতর্কিত হন। আবার ক্লিনটন ফাউন্ডেশন, হঠাৎ অসুস্থতা, উইকিলিক্সের গোপন তথ্য ফাঁস, ই-মেইল বার্তা ও এফবিআইয়ের রিপোর্ট প্রকাশ হিলারিকে ফেলে দেয় বিব্রতকর অবস্থায়। কোনোটা সামলে উঠেছেন; আবার কোনোটায় হয়েছেন নাস্তানাবুদ। অপ্রীতিকর বক্তব্যের কারণে ডোনাল্ড ট্যাম্পকে ভোট না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারই দল রিপাবলিকানের কয়েকজন জাঁদরেল নেতা। ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া এ দুই প্রার্থীর ব্যক্তিগত আক্রমণ ও উত্তেজনা সংক্রমিত হয় সমর্থকদের মধ্যেও। হিলারি এবং ট্রাম্পকে নিয়ে দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। উত্তেজনার ঢেউ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাপিয়ে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও পৌঁছেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় নানা নাটকীয়তা ঘটলেও ইলেক্ট্রোরাল ভোটসহ প্রায় সব সূচকেই এগিয়ে রয়েছেন হিলারি। তবে গোপন ভোট বলে কথা। আমেরিকার নির্বাচনী জ্বরে আক্রান্ত বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে হোয়াইট হাউজে কে যায় তা দেখতে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন তথা হোয়াইট হাউজ প্রবেশের নির্বাচনী যুদ্ধে ভোট হচ্ছে ৫০টি অঙ্গরাজ্য এবং একটি ফেডারেল টেরিটরিতে। কিন্তু হিলারি ও ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় তাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করছেন মাত্র ১১টি অঙ্গরাজ্যে। এগুলোকে বলা হয় ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটস’। যুগের পর যুগ ধরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এ রাজ্যগুলো এই বিশেষণে পরিচিত। বাকি ৩৯ রাজ্যে কোন দলের প্রার্থী কোথায় বিজয়ী হতে পারেন সে ব্যাপারে মোটামুটি একটা ধারণা প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোতে কোন প্রার্থী কোথায় জিতবেন তার কোনোই গ্যারান্টি নেই। আর তাই শেষ মুহূর্তের সব চেষ্টা কলরাডো থেকে ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে ওহাইয়ো কিংবা উইসকনসিন থেকে নেভাদায় এবং ওহাইও এমন রাজ্য যে সেখানে যে প্রার্থী বিজয়ী হবেন তিনিই হোয়াইট হাউজ প্রবেশের সুযোগ পাবেন। এটা আমেরিকার মানুষের মধ্যে বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে। হোয়াইট হাউজের গত ৩০ জন প্রেসিডেন্টের মধ্যে ২৮ জনই ওহাইও অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। অনেকটা বাংলাদেশের সিলেট-১ আসনের মতোই। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে দলের প্রার্থী সিলেট-১ আসনে বিজয়ী হয়েছেন; সে দলই সরকার গঠন করেছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফলাফল নির্ধারনকারী ১৩ ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটস’ হলো অ্যারিজোনা, কলোরাডো, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, আইওয়া, মিশিগান, নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও, পেনসিলভ্যানিয়া, ভার্জিনিয়া এবং উইসকনসিন। গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই পরিচালক জেমস বি কমি রোববার ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে নির্দোষ ঘোষণার আগ পর্যন্ত পলিটিকো’র সমন্বিত জরিপে দুই প্রার্থীর তুমুল লড়াইয়ের ১১টি রাজ্যে গড় জনপ্রিয়তায় হিলারি ক্লিনটন এগিয়ে রয়েছেন প্রায় ৩ শতাংশ অধিক জনসমর্থন নিয়ে। তবে রাজ্য হিসেবে ৩টিতে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরমধ্যে ২৯টি ইলেক্টোরাল ভোটের ফ্লোরিডায়ও তিনি এগিয়ে। এ জন্য ফ্লোরিডা নিয়ে বিশেষ তৎপর ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি। দুই প্রার্থীই ঘুরেফিরেই গেছেন সেখানকার ভোটারদের কাছে। গত ৪৮ ঘণ্টার সবগুলো জনমত জরিপে গড় জনপ্রিয়তায় স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন হিলারি ক্লিনটন। তবুও স্বস্তিতে নেই ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ও প্রেসিডেন্ট বারাক হোসাইন ওবামা। ফেডারেল তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের গত ৯ দিনের ভূমিকা এবং রিপাবলিকান নেতৃত্বের নানা তৎপরতায় কিছুটা শংকিত তারা। যদিও এফবিআইয়ের রিপোর্ট প্রকাশের পর সে ফাঁড়া কেটে গেছে। তারপরও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেহেতু ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোট বাধ্যতামূলক; সে জন্য ১১ রাজ্যের ভোট নিয়ে দৌড়ঝাঁপ চলছেই। ব্যাটলগ্রাউন্ড খ্যাত ১১ রাজ্যে আছে ১৪৬টি ইলেক্টোরাল ভোট। যদিও হিলারি ইলেক্টোরাল ভোটে ট্রাম্পের চেয়ে অনেক এগিয়ে হিলারি। তারপরও ব্যাটলগ্রাউন্ড খ্যাত ১১ রাজ্যের মধ্যে ফ্লোরিডা, ওহাইয়ো এবং আইওয়া অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প এগিয়ে। এসব রাজ্যে রয়েছে ৫৩টি ইলেক্টোরাল ভোট। এই তিন রাজ্যে তিনি জিতে গেলেও চূড়ান্ত জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট থেকে তিনি অনেক দূরে থাকবেন। সে জন্যই নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার ও আইওয়ার মতো ছোট রাজ্যগুলোও চষে বেড়াচ্ছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে ফ্লোরিডায় নিজের অবস্থানের উন্নতি এবং একই সঙ্গে অধিক ইলেক্টোরাল ভোটের লক্ষ্যে নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান ও ভার্জিনিয়ার মতো রাজ্যগুলোতে চষে বেড়িয়েছেন হিলারি ক্লিনটন। এছাড়া উইসকনসিন এবং কলরাডোও ছাড় দিতে নারাজ দু’প্রার্থীর কেউই।
ঐতিহ্যগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যেগুলোর মধ্যে অধিকাংশের ডেমোক্রেট বা রিপাবলিকান প্রভাবিত অঙ্গরাজ্য হিসেবে চিহ্নিত; এসব অঙ্গরাজ্যগুলোতে সাধারণত যে দলের প্রভাব বেশি সেই দলের প্রার্থীই বিজয়ী হন। যেমন, টেক্সাসকে রিপাবলিকান প্রভাবিত অঙ্গরাজ্য ধরা হয়, নির্বাচনী প্রচারণার সময় রিপাবলিকান প্রার্থী টেক্সাসে প্রচারণা চালিয়ে তার অর্থ ও সময়ের অপচয় করেন না। তিনি এখানে জিতবেন বলেই ধরে নেন। আবার, ক্যালিফোর্নিয়াকে ডেমোক্রেট প্রভাবিত অঙ্গরাজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে এ দলটির প্রার্থীই জিতবেন বলে ধরে নেয়া হয়। এ ধরনের অঙ্গরাজ্যগুলো ছাড়াও দেশটির আরও কয়েকটি অঙ্গরাজ্য আছে, যেখানে কোনো দলেরই সুস্পষ্ট প্রাধান্য নেই, এসব অঙ্গরাজ্যগুলোকে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য বা প্রচলিত কথায় ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অতীতের নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে এসব অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা হোয়াইট হাউজে যাওয়ার পথ সুগম করে দেন।
এদিকে রোববার হিলারি ক্লিনটনকে নির্দোষ ঘোষণা করে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই পরিচালক জেমস বি কমি বলেছেন, হিলারির নতুন যেসব ইমেইল পাওয়া গেছে তাতে কোনো অপরাধমূলক কিছু পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ আনা যায় না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে এমন ঘোষণা দিলেন জেমস কমি। অথচ গত ২৯ অক্টোবর তিনি ঘোষণা করেছিলেন হিলারির বিরুদ্ধে নতুন বেশ কয়েক হাজার ইমেইল পাওয়া গেছে। তা তার সংস্থা তদন্ত করছে। ইমেইল ইস্যুতে হিলারিকে ঘায়েল করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল ইস্যু হলো ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির চেয়ে বড়। এরপর তর তর করে নীচে নামতে থাকে হিলারির জনসমর্থন। পাল্টে যেতে শুরু করে নির্বাচনী বাতাস। জরীপের জনপ্রিয়তায় হিলারির কাছাকাছি চলে আসেন ট্রাম্প। উল্লসিত হয় রিপাবলিক্যান ক্যাম্প। এমনকি রিপাবলিক সমর্থিত এক মিডিয়ার জরীপে দেখানো হয় ট্রাম্প হিলারির চেয়ে এক পয়েন্ট এগিয়ে গেছেন। যদিও কয়েক ঘণ্টা পর সে জরিপ মিথ্যা প্রমাণ করে এগিয়ে যান হিলারি। ভোটের আগে এ ধরণের রিপোর্ট প্রকাশ করায় এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় ডেমোক্রেট দল থেকে। কেমির কড়া সমালোচনা করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। মার্কিন সিনেটে ডেমোক্রেট নেতা হ্যারি রেইড কড়া করে চিঠি লেখেন জেমস কমির কাছে। তাতে তিনি দাবি করেন জেমস কমি ‘হ্যাচ অ্যাক্ট’ নামের আইন লঙ্ঘন করেছেন। হিলারি ক্লিনটন অভিযোগ করেছেন এফবিআই দ্বিমুখী অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচনের মাত্র দু’সপ্তাহেরও কম সময় আগে হিলারির ইমেইল ইস্যু প্রকাশ নিয়ে সারা দুনিয়ায় সমালোচনা হয়। সংস্থাটি যখন পুরো রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তখন এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা সুর তোলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, এটা জালিয়াতি (ইট ইজ রিগড)। তার অভিযোগ হিলারিকে বিচার না করার জন্য এমনটা করা হয়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্য হলোÑ সত্যিকার অর্থেই এই নির্বাচন জালিয়াতিতে ভরা। হিলারির সব ইমেইল পর্যালোচনা করা হয়েছে কিনা তা নিয়েও তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন। অবশ্য এর আগে তিনি নিজেকে বিনা ভোটে প্রেসিডেন্ট ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে যারা পর্যবেক্ষণ করছেন তাদের অভিমত হলো সব সূচকে হিলারি এগিয়ে রয়েছেন। তবে বিপদ এখনো কাটেনি। অন্যদিকে হোয়াইট হাউজে দখলের যুদ্ধে জিততে হলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নেভাদা ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য নিজ দখলে আনতে হবে। কিন্তু আগাম ভোটের হিসাব যদি সঠিক হয়, ট্রাম্প সম্ভবত এই দুই রাজ্যই হারাচ্ছেন। এই হার হয়তো তাকে মানতে হবে হিস্পানিক ভোটারদের কারণে; যাদের তিনি ধর্ষক ও মাদক ব্যবসায়ী বলে গালমন্দ করেন। মার্কিনী সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে ট্রাম্পের বক্তব্য ভালভাবে নেননি হিস্পানিকরা। তাই নেভাদায় হিস্পানিকদের আগাম ভোটের পরিমাণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার বেশি। ‘পলিটিকো’ জানিয়েছে, এই রাজ্যের সবচেয়ে জনবহুল ক্লার্ক কাউন্টিতে হিস্পানিকদের কারণে হিলারি কমপক্ষে ৭২ হাজার ভোটে এগিয়ে আছেন। এই রাজ্যের একজন নির্বাচনী বিশ্লেষক গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, নেভাদাকে হিলারির ভোটের খাতায় এই সংখ্যা পর্যাপ্ত। ২০১২ সালে ওবামা নেভাদা জিতেছিলেন ৭ পয়েন্টে। সেবার এই কাউন্টিতে ডেমোক্রাটদের পক্ষে আগাম ভোট পড়েছিল ৭১ হাজার। আগাম ভোট দিয়ে এসে একজন ভোটার মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প চেয়েছিলেন মেক্সিকোর সঙ্গে দেয়াল তুলতে। নেভাদায় ট্রাম্প হিস্পানিক ভোটারদের তোলা দেয়ালে আটকে যাচ্ছেন। সিএনএনে খবরে বলা হয় ফ্লোরিডা রোববারে সমাপ্ত আগাম ভোটে ৬২ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন; যার ১০ লাখ ভোটার হলেন হিস্পানিক। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নির্বাচনী পরিসংখ্যান বিশারদ জানিয়েছেন, তাঁর হিসাব অনুযায়ী এই হিস্পানিক ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশই এ বছর প্রথমবারের মতো ভোটে অংশ নিচ্ছেন। ট্রাম্প অপ্রীতিকর মন্তব্য না করলে তারা হিলারিকে ভোট দিতেই যেতেন না। রোববার প্রকাশিত এনবিসি/ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের গৃহীত সর্বশেষ জাতীয় জনমত জরিপে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন হিলারি। অন্যান্য জরিপে এগিয়ে থাকার সংখ্যা ৫ পয়েন্ট। এই ব্যবধান যদি বজায় থাকে, তাহলে ডেমোক্রাটরা সিনেটে তাদের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবেন।
এফবিআইয়ের রিপোর্টে হিলারিকে নির্দোষ হিসেবে ঘোষণার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবির বসে নেই। ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত উইকিলিকস ডেমোক্রেটিক পার্টির আরো ৮ হাজার ই-মেইল ফঁস করেছে। এসব ই-মেইলে ডেমোক্রেটিক পার্টির অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের বিষয়াদি রয়েছে। যেখানে দলীয় প্রাার্থী বাছাই পর্বে বার্নি স্যান্ডার্সের বিপক্ষে এবং হিলারি ক্লিনটনের পক্ষে দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের সমঝোতার কথা উঠে এসেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে প্রতিদিনই কিছু না কিছু ই-মেইল ফাঁস করছে উইকিলিক্স। সবশেষ ৮ হাজার নিয়ে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি ই-মেইল ফাঁস করলো জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।
হোয়াইট হাউজে প্রবেশের জন্য প্রার্থীদের মধ্যে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ। ডেমোক্রেটিক পার্টির হিলারি ক্লিনটন এবং রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প দু’জনই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মিডিয়া জরিপের সব সুচকে এগিয়ে থাকা সাবেক ফাস্টলেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে নিউ ইয়র্কের রিয়েল এস্টেট মুঘল ডোনাল্ড ট্রাম্পের লড়াই হবে। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটিতে অতীতে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন মুচির ছেলে থেকে শুরু করে সিনেমার নায়ক পর্যন্ত। কিন্তু নারী-পুরুষের সমঅধিকার থাকার পরও কোনো নারী প্রেসিডেন্ট হননি। এবার নির্বাচিত হলে হিলারি ক্লিনটন হবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। বিশ্বজোড়া পরিচিতির পাশাপাশি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে জনগণের সঙ্গে আছেন ডেমোক্রেট প্রাথী হিলারি ক্লিনটন। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গেও রয়েছে তার সুসম্পর্ক। আর রিপাবলিক্যান প্রার্থী নিউ ইয়র্কের রিয়েল এস্টেট মুঘল ও জুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প মাত্র দেড় বছর আগে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। হোয়াইট হাউজ প্রবেশের ভোটযুদ্ধে কে বিজয়ী হবেন? হিলারি ক্লিনটন নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প? এ প্রশ্নের উত্তর নির্ধারণী ব্যালট যুদ্ধ শুরু হবে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়। বিশ্বজুড়ে মার্কিন নির্বাচন ইস্যুতে সবচেয়ে দামি প্রশ্ন হলো-মার্কিনীরা কি আড়াইশো বছরের ইতিহাস বদলাবেন? শেষ পর্যন্ত কি তারা একজন নারীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবেন? নাকি একজন বর্ণবিদ্বেষী, জাতিবিদ্বেষী, ইসলামবিদ্বেষীর জন্য হোয়াইট হাউজের দরজা খুলে দেবেন?



 

Show all comments
  • সুবাহ সাবিহা ৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম says : 0
    strong connection
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah Al Noman ৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০৭ পিএম says : 0
    শুভ কামনা হিলারির জন্যে
    Total Reply(0) Reply
  • Mehedi Hasan Meraj ৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:২৯ পিএম says : 0
    ট্রাম্প
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হোয়াইট হাউজ দখলের লড়াই

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ