পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে ফুসফুসের ক্যান্সার দিন দিনে মারাত্মক হয়ে উঠেছে। এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকলেও তামাকই মূল কারণ। প্রায় ৮০ শতাংশ রোগীই তামাকের কারণে আক্রান্ত হচ্ছেন। তামাকের মধ্যে থাকা নিকোটিন এবং টার ক্যান্সার সৃষ্টিতে বিশেষ ভ‚মিকা রাখে। ধূমপানের পর ফুসফুসে অবশিষ্ট থাকা নিকোটিন এবং টার ফুসফুসে ক্যান্সারের কোষ গঠন করে। ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্তদের মধ্যে ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ নারী। ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার গড় বয়স ৬০ বছর। তবে ৫০ বছরের নীচে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর হারও বাড়ছে। যা প্রায় ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ। এতে প্রতিয়মান হয়, অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এছাড়া ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী রোগ নির্ণয়ের সময় থেকেই অপুষ্টি সমস্যায় থাকেন। এছাড়া ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ রোগীর কোন ধরনের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ছিলোনা।
গতকাল মহাখালীর এস কে এস সেন্টারে বাংলাদেশ ক্যান্সার স্টাডি গ্রæপের ‘ডেমোগ্রাফিক ডিফারেনশিয়ালস অফ লাঙ্গ ক্যান্সার সারভাইভাল ইন বাংলাদেশী প্যাসেন্ট’ শীর্ষক প্রকাশনা ও গোলটেবিল আলোচনায় এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে গবেষকরা এসব কথা বলেন। ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ১ হাজার ৮৬৮ জন ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের উপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন ডা. এটি এম কামরুল হাসান, ডা. নাজরিনা খাতুন, ডা. ইসরাত নূর রিদি, মো. মামুন-অর রশিদ, ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম এবং ডা. মো. নাজমুল করিম।
গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ রোগীর (৫৫ দশমিক ৪ শতাংশ) প্রতি মাসে পারিবারিক আয় ছিল ১০ হাজার টাকার নীচে। সামগ্রিকভাবে, ৮০ শতাংশেরও বেশি রোগী ছিলেন ধূমপায়ী এবং প্রায় অর্ধেক রোগী ধোঁয়াহীন তামাক ব্যবহারকারী ছিলেন। এদের মধ্যে ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ রোগীরা উভয় ধরনের তামাক সেবনে অভ্যস্ত ছিলেন। স্বভাবতই পুরষেরা নারীদের তুলনায় বেশি মাত্রায় তামাকজাত দ্রব্যে আসক্ত ছিলেন। এছাড়া ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী ফুসফুস ক্যান্সারের পাশাপাশি অন্য একটি ক্রনিক রোগ যেমন- উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদিতে ভুগছিলেন। রোগ নির্ণয়ের সময়, দুই তৃতীয়াংশ রোগীদের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক কার্যক্ষমতার অর্ধেকে নেমে আসে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত ৪০শতাংশ রোগী অর্থনৈতিক কিংবা শারীরিক অক্ষমতার কারনে চিকিৎসা নেয়নি অথবা চিকিৎসা সম্পন্ন করতে পারেনি। বেশিরভাগ রোগীরাই শুধুমাত্র কেমোথেরাপীর মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়েছেন। ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি উভয় চিকিৎসা নিতে সক্ষম হয়েছেন। ফসুফুস ক্যান্সারে আক্রান্তদের মধ্যে যাদের বয়স ৫০ বছরের নিচে ছিলো, যারা তুলনামূলক শিক্ষিত ছিলেন তারা শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন। এছাড়া যারা অন্য কোন রোগে আক্রান্ত ছিলেন না অথবা যারা চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি নিয়েছেন, তারাই বেশি দিন বেঁচে ছিলেন।
গবেষনায় উঠে এসেছে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের ফুসফুস ক্যান্সার রোগীদের ১ বছর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ২৭ শতাংশ। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। একই সঙ্গে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক নিয়ামকগুলো ও সমান গুরুত্ব বহন করে। বিশেষ করে আমাদের মত সীমিত সক্ষমতার দেশগুলোর ক্ষেত্রে। তাই, এব্যাপারে আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে গকেষকরা উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১০ লাখের বেশি মানুষ মৃত্যু বরণ করেন। বর্তমানে রোগ নির্ণয় সুবিধা এবং ক্যান্সার চিকিৎসা পদ্ধতির যথেষ্ট উন্নতি সত্তে¡ও, এই মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্বব্যাপি মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি এশিয়া অঞ্চলে হয়ে থাকে। এর কারণ হিসাবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ে সক্ষমতা ও আর্থ-সামাজিক ভিন্নতাকেই দায়ী করা হয়।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।