Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জীবিতকে বাদ দিয়ে পুলিশ মৃতের উপর দায় চাপাল

চট্টগ্রামে আলোচিত ধর্ষণ-হত্যা মামলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২২, ১২:১২ এএম

নিহত যুবকের উপর দায় চাপিয়ে জীবিত মূল আসামিকে বাদ দিয়ে আদালতে আলোচিত হত্যা মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেয় পুলিশ। তবে দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত জীবিত আসামির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগটি আমলে নিয়েছে। এখন আদালতেই প্রমাণ হবে ধর্ষক কে। জীবিত নির্মল চন্দ্র আইচ নাকি নিহত বেলাল হোসেন। গতকাল সোমবার অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার শুরুর জন্য আগামী ১৪ মে আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জামিউল হায়দার।

বাদিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, দুই বছর আগে নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। দরিদ্র রিক্সাওয়ালার ওই কন্যা শিশুকে শ্যাম্পু ও বেলুন কিনে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন নির্মল চন্দ্র আইচ (৭২)। এতে শিশুটি রক্তাক্ত হয়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুর অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয়রা নির্মল আইচকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। শিশুর পিতা বাদি হয়ে আকবর শাহ থানায় মামলা দায়ের করেন। শিশুটি সবার সামনে ধর্ষণকারী হিসেবে তাকে শনাক্তও করে।
কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আকবর শাহ থানার এসআই বিকাশ চন্দ্র শীল ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মূল আসামিকে বাদ দিয়ে ভিন্ন একটি থানা এলাকায় নিহত সন্ত্রাসী বেলাল হোসেনকে শিশু ধর্ষক সাজিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। বেলাল ঘটনার দুই মাস পর পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়।
বাদির নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত ডিবি পুলিশকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বন্দর জোনের পরিদর্শক প্রিটন সরকারও আগের প্রতিবেদন অনুসরণ করে গত বছরের ২৩ নভেম্বর আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন। এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধেও বাদি নারাজি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ বলেন, ঘটনার পর আক্রান্ত শিশুটি নিজেই আসামি চিনিয়ে দিয়েছিল। সে হিসেবে তার পরিবারের সদস্যরা স্থানীয়দের নিয়ে নির্মলকে আটক করে পুলিশের কাছে দিয়েছিল। এরপর আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দিতেও শিশুটি নির্মলকে দায়ি করেছে। এরপরও থানা এবং ডিবি তদন্ত করে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সেটা আমাদের কাছে প্রভাবিত মনে হয়েছে।
বাদিপক্ষও নারাজি দিয়েছে। আমরাও আদালতে বিষয়টি তুলে ধরেছি। আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করেছেন। এখন আদালতেই প্রমাণ হবে নির্মল ধর্ষণ করেছিল নাকি করেনি অথবা বেলাল করেছিল কি না সেটা। বাদির পক্ষে আদালতে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট এ এম জিয়া হাবীব আহসান, এইচ এম জসিম উদ্দিন, মো. সাইফুদ্দিন খালেদ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ