Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শরীরকে নিরোগ রাখতে দুধের ভূমিকা

প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

দুধ বেহেস্তের খাবার। প্রাচীনকাল থেকেই দুধকে বলা হয় পৃথিবীর অমৃত। অনেক শিশু এবং বৃদ্ধের দুধই প্রধান খাদ্য। দুধে ভিটামিন সি ছাড়া শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রকারের পোষক তত্ত্বই আছে। দুধ রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে দিয়ে শরীরকে রোগমুক্ত রাখে। দুধ খুবই পুষ্টিকর খাবার। তবে অতিরিক্ত দুধ খাওয়া শরীরের জন্য ততটা ভালো নয়। 

মায়ের দুধের পরে গরুর দুধই শ্রেষ্ঠ। শিশু এবং অসুস্থ লোকদের জন্য টাটকা ফোটানো গরুর দুধ সর্বাপেক্ষা উত্তম। তবে যাদের গ্যাস সৃষ্টি হয় এবং হজমশক্তি ভালো নয়, তারা এলাচ, পিপুল, দারুচিনি প্রভৃতি হজমকারক মশলা মিশিয়ে ফোটানো দুধ খেলে উপকার পাবেন। যাদের হজমশক্তি কম, এ ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বেশি ঘন দুধ খাওয়া উচিত নয়। তাদের উচিত তিন ভাগ দুধে এক ভাগ পানি মিশিয়ে দুধ ফুটিয়ে খাওয়া। প্রসূতি এবং বুকের দুধ খায় এমন শিশুর মায়েদের নিয়মিত দুধ খাওয়া উচিত। কারণ দুধ খেলে মায়েরও বুকে দুধ বাড়ে। এতে দুধের শিশুর খাবারে তেমন ঘাটতি পড়ে না। এ ছাড়া যেসব বয়স্ক নিয়মিত দুধ পান করেন, তাদের বুড়ো বয়সের অসুখ অনেকাংশে কমে যায়। গরুর দুধ মল পরিষ্কার করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের কষ্ট দূর করে। টাটকা গরম গরুর দুধ শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে, খিদে বাড়িয়ে দেয়, ত্রিদোষ (কফ, পিত্ত ও বাত) দূর করে। গরু, মহিষ এবং ছাগলের দুধের মাঝে গরুর দুধই সবচেয়ে বেশি উপকারী। মোষের দুধ বেশি ভারী ও শক্ত। তবে মোষের দুধের তৈরি দই খুবই সুস্বাদু। মোষের দুধ নিদ্রাকারক তাই এই দুধ খেলে ঘুম ভালো হয়। ছাগলের দুধ সবচেয়ে সুপাচ্য। যারা পেটের অসুখে ভুগছে এমন বাচ্চাদের জন্য ছাগলের দুধ খুবই উপকারী।
দুধের গুণাগুণ
আয়ুর্বেদ মতে, দুধের অনেক গুণ। দুধ বল ও বীর্য বৃদ্ধি করে। শরীরের শক্তি সামর্থ্য বৃদ্ধি করে। ভাঙা হাড় জোড়া লাগাতে সাহায্য করে এবং এটি রসায়ন। রসায়ন অর্থ শরীরের সপ্তধাতু অর্থাৎ রস, রক্ত, মেদ, মজ্জা, মাংস, অস্থি, বীর্য প্রভৃতির পুষ্টিতে দুধের ভূমিকা অতুলনীয়।
জ্বাল দেয়া গরুর দুধ খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়। গরুর দুধে ঘি, শুকনো আদা, কালো আঙুর মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে খেলে পুরনো জ্বর সেরে যায়। গরম দুধে সামান্য চিনি মিশিয়ে খেলে শরীর পুষ্ট হয়, বল ও বীর্য বৃদ্ধি পায়। দুধ অনেকক্ষণ ফুটিয়ে ঢাকনা ছাড়া ঠা-া করলে উপরে মোটা সর পড়ে। এই সরই হলো দুধের মালাই। দুধের মালাই দশ মিনিট মুখে মালিশ করুন। তারপর বেসন দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন, দ্রুত মুখের ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
গরুর টাটকা দোহা দুধে সামান্য ঘি ও মিশ্রি মিশিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ালে হাম, বসন্ত, জলবসন্তের জন্য যে জ্বর হয় তাতে উপকার পাওয়া যায়।
আজকাল শহরে টাটকা গরুর দুধ প্রায় পাওয়াই যায় না। এখন পাওয়া যায় ডেইরি ফার্মের প্লাস্টিকের মোড়কে ভরা দুধ। এসব প্যাকেটজাত দুধ থাকে পাস্তুরাইজ করা অর্থাৎ দুধের জীবাণু নষ্ট করা। এই দুধও শরীরের জন্য বেশ উপকারী। কারণ পাস্তুরাইজকৃত প্যাকেটজাত এসব দুধে ঘি বা মাখন জাতীয় পদার্থের একটা সমতা রাখা হয়। যা খাটালের দুধে ঠিকমতো হয় না। পুষ্টিতত্ত্ববিদদের মতে, দুধকে পরিপূর্ণ আহার মনে করা না হলেও দুধের অনেক গুণ আছে এবং দুধ একটি পুষ্টিকর শ্রেষ্ঠ পানীয়। কাজেই নিয়মিত দুধ পান করুন। শরীর সুস্থ রাখুন।
য় নাজনীন পায়েল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শরীরকে নিরোগ রাখতে দুধের ভূমিকা
আরও পড়ুন