Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রুশ প্রকল্পের আর্থিক লেনদেনে সমস্যার আশঙ্কা রয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০২২, ১২:০১ এএম

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, রাশিয়ার বড় কোম্পানি ও ব্যাংক যদি আরও নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে রুশ প্রকল্পের আর্থিক লেনদেনে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা করছে সরকার। গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ আশষঙ্কার কথা জানান। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যদি আরও ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে বা সুইফটের নিষেধাজ্ঞা আসে, অথবা বড় বড় যে কোম্পানিগুলো আছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা যদি সরাসরি আসে, তখন হয়তো জটিলতা আসতে পারে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জি- সেভেন দেশগুলো ইতোমধ্যে অনেক রাশিয়ার ব্যাংক এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এতে ইতোমধ্যেই রাশিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে।
এদিকে, গ্লোবাল পেমেন্ট মেসেজিং নেটওয়ার্ক সুইফট বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে ৭টি রুশ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন স্থগিত করতে বলেছে। পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাশিয়া। প্রকল্পটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিকে সবকিছু পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছি। গত বৃহস্পতিবার আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা প্রভাব মূল্যায়ন করতে আরও মিটিং করব।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন বলেন, বিভিন্ন পণ্য ও সেবা আমদানি রপ্তানিকারক, আমাদের যে প্রজেক্টগুলো আছে সেখানে রাশিয়ার যে সম্পৃক্ততা সেখানে লেনদেনের বিষয়ে আমরা বিভিন্ন মহলে কথা বলছি, নিজেদের মধ্যে বলছি। কী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, সেগুলোও আমরা নির্ধারণ করবো আগামীতে। তবে এই মুহূর্তে সমস্যা হবে না মনে হচ্ছে। পরিস্থিতির ওপর সব কিছু নির্ভর করছে।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ আছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সারা বিশ্বের জন্যই উদ্বেগের। গত কয়েক দিনে তেলের দাম যতটা বেড়েছে ১০ বছরে সবচেয়ে বেশি। তেল, গ্যাস, জ্বালানির ওপর বড় ধরনের চাপ আসবে। খোদ ইউরোপের অনেক দেশে এই মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। সুতরাং এর জন্য সবাই এখনও উদ্বেগেই আছে।
ইউক্রেনে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নিরাপদ স্থানে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোমানিয়ার মাধ্যমে তাদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। অলভিয়া বন্দরে জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র বা বোমা হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
কোন দল জাহাজে হামলা চালিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে কি না, জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশ রুশ কর্তৃপক্ষের কাছে তা জানতে চেয়েছে। তারা নিশ্চিত হলে বাংলাদেশকে জানাবে। তারা (রাশিয়া) শোক প্রকাশ করেছে, কিন্তু তারা বলেছে যে তারা এই (হামলা) করেনি। যুদ্ধের যে ধোঁয়াশা থাকে, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ‘ফগ অব ওয়ার’। সেখানে কোন পক্ষ কার কাছে কী আছে, কে কোথা থেকে কী করছে এটি অ্যাসারটেইন করা খুব কঠিন। তবে রাশিয়ানরা আশ্বাস দিয়েছে তারা আমাদের জানাবে, ঠিক কী হয়েছিল।
বাংলাদেশ এ বিষয়ে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা এখন ভূখণ্ড রক্ষায় বেশি ব্যস্ত। সুতরাং আমাদের জিজ্ঞাসার সব ধরনের জবাব দেওয়া তাদের পক্ষে হয়তো সম্ভব নয়।
আগের দিন বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর ত্যাগের অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে। পোল্যান্ডের মধ্য দিয়ে ৬০০ বাংলাদেশি ক্রস করে গেছে। আমাদের ধারণা মতে, আর ১০০ জনের মতো আছে। তবে তাদের অনেকেরই হয়তো ইউক্রেনে পরিবার আছে বা ইউক্রেনীয় স্ত্রী আছে। তারা হয়তো এতটা ঝুঁকিতে নেই। ঝুঁকিতে যারা ছিলেন তারা মোটামুটি সবাই বেরিয়ে গেছে। তবে যাদের পরিবার ইউক্রেনে আছে, এমন প্রায় ১০০ জন হয়তো রয়ে গেছেন। কিছু ভারতীয় এখনো ইউক্রেনে রয়ে গেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সেখানে ভারতীয় দূতাবাসকে বাংলাদেশিদের যদি কেউ থেকে থাকে, তাদের সরিয়ে নিতে সাহায্য করতে আমরা অনুরোধ করেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ