পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাণিজ্যমন্ত্রী ২ মার্চ ঘোষণা দিয়েছেন ভোগ্যতেলের দাম বাড়বে না; ব্যবসায়ীদের দাম বৃদ্ধির দাবি সরকার নাকচ করে দিয়েছে। কিন্তু বাজারে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই সিন্ডিকেট করে সরবরাহ কমিয়ে ভোগ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি এলাকায় ভোগ্যতেলের দাম বেড়েছে।
মূলত পবিত্র রমজান মাস আসন্ন হওয়ায় বাজারে বেশ কিছুদিন ধরে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা এবং আসন্ন রমজান ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ীরা তেল মজুতের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। তাদের অতিমুনাফার লোভে তেলের দামও বাড়ছে হু-হু করে। ভুক্তোভোগীরা বলছেন, বাজারে সরকারের তেমন নজরদারী নেই। মাঝেমধ্যে কোথাও কোথাও ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে দু’চারজনের জরিমানা করে মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। বাস্তবে কোথাও তদারকী নেই।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে দেশি রিফাইনারি কোম্পানিগুলো হঠাৎ করেই তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। কোম্পানি থেকে ডিলার ও পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। বোতলজাত তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ২ ও ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল বাজার থেকে প্রায় উধাও হয়ে গেছে।
সরবরাহ সংকটের কারণে গত বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম গড়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। হাতিরপুল ও নিউমার্কেটে প্রতি লিটার ১৮৫ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২ লিটারের দাম ৩৩৫ থেকে ৩৪০ এবং ৫ লিটারের দাম ৭৯০ থেকে ৮০০ টাকা। তারপরও অনেক দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। যাত্রাবাড়ি, ফকিরের পুল বাজারে একই চিত্র। দোকানের সেলফে তেল না থাকা প্রসঙ্গে নিউমার্কেটের হোসেন স্টোরের বিক্রয়কর্মী মো. আরিফ বলেন, কোম্পানিগুলো চাহিদা মতো তেল দিচ্ছেন না, তাই দোকানে তেল নেই। প্রতিদিন ১, ২ ও ৫ লিটার মিলিয়ে ৮০০ থেকে হাজার লিটারের চাহিদা থাকলেও কোম্পানি থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ লিটারের বেশি দিচ্ছে না। একই দোকানে সদাই করতে আসা সাইদুল নামের একজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, তেল লুকিয়ে রাখা হয়েছে বাড়তি দামে বিক্রির আশায়। ফলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
শনির আখড়ার মসজিদ রোডের মনির স্টরের মালিক মো. মনির হোসেন বলেন, হঠাৎ করে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে চাহিদার তুলনায় পণ্য কম থাকলে দাম বাড়বেই। পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও কমানো নির্ভর করে মোকামে কেমন দাম তার উপর।
জানা গেছে, রমজান আসছে সে কারণে কয়েকদিন ধরে সয়াবিন তেলের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ও পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ঊর্ধ্বমুখী। অথচ এসব বাজারে তেলের সরবরাহে কোনো কমতি নেই।
এদিকে ঢাকার মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তারা প্রতি টন ১ হাজার ৭৩০ ডলারে কিনছেন। এক্ষেত্রে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কেনার মূল্যের পার্থক্য হচ্ছে ২৪৮ ডলার।
গত বুধবার বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের জানান, তার মন্ত্রণালয়ের কাছে তথ্য আছে, মধ্যস্বত্বভোগীরা ভোজ্যতেলের মজুত গড়েছেন। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকারসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। সরকারি একাধিক সংস্থা তদারকিতে নেমেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে রিফাইনারি কোম্পানিগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতি লিটারে খোলা সয়াবিনের দাম ৭ টাকা এবং বোতলজাত তেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা বাড়ানো হয়। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে তারা ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে প্রতি লিটারে আরও ১২ টাকা বাড়ানের প্রস্তাব করে। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়।
তবে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি লিটার তেলে ৮টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সে সময় প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দর নির্ধারণ করা হয় ১৪৩ টাকা, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন ১৬৮ টাকা ও বোতলজাত পাঁচ লিটারের সয়াবিন ৭৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু গত দুতিন দিন থেকে আরো বাড়তি দামে ক্রেতাদের ভোগ্যতেল কিনতে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।