Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছেলের শোকে বাকরুদ্ধ মা আমেনা বেগম

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২২, ১২:০২ এএম

ইউক্রেনে রকেট হামলায় নিহত ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলের মৃত্যুর খবরে মা আমেনা বেগম বাকরুদ্ধ। কথা বলতেই সে বারং বার মুর্ছা খাচ্ছে আর বুক চাপরাচ্ছে। বলতে গিয়েও কিছুই বলতে পারছে না। বাবার দাবি সন্তানের লাশ দেখতে চাই। হাদিসুর রহমান আরিফ বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। চার ভাই বোনের মধ্যে হাদিসুর রহমান আরিফ মেঝো।

জানা যায়, হাদিসুর সর্বশেষ বাড়িতে এসেছিলেন মাস ছয়েক আগে। তবে পরিবারের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ ছিল তার। সর্বশেষ জানিয়েছিলেন, আটকে থাকা জাহাজ ছাড়া পেলে শীঘ্রই বাড়ি ফিরবেন তিনি। কিন্তু গত বুধবার ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ গোলার হামলার শিকার হয়েছে। ওই দিন স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে এ হামলা হয়। এতে জাহাজে আগুন ধরে নিহত হন হাদিসুর রহমান আরিফ।

এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের নিহত হওয়ার খবর পেয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন হাদিসুরের মা-বাবা। শোকে মুহ্যমান পরিবারের অন্য স্বজনেরাও। বাড়িতে এখন শুধুই শোকের মাতম। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা খবরটা জানতে পারেন। হাদিসুরের মৃত্যুর খবরে এলাকার মানুষের মধ্যেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খুব সকাল থেকেই তার বাড়িতে ভীড় জমাতে শুরু করে মানুষ। বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান বলেন, হাদিসুর রহমান আরিফ ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলো। সে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে পাস করার পর ২০১৮ সাল থেকে ওই জাহাজে ছিল। অবিবাহিত ছেলেটা সর্বশেষ বাড়িতে এসেছিল মাস ছয় আগে।

হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স বলেন, গত বুধবার গোলার আঘাত হানার সময় বড় ভাই বাইরে এসে মুঠোফোনে আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তবে কথার এক পর্যায় হঠাৎ করে একটি গোলা এসে পড়ে জাহাজটিতে। বিকট শব্দের পর আর কিছুই শুনতে পাইনি এবং কোনো কথা হয়নি। হাদিসুর রহমানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাড়িতে এসে ছেলের ঘরের কাজ ধরার কথা ছিল, ছিল বিয়ের কথাও। এখন সব কিছুই শেষ।

জানা যায়, বাংলাদেশের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি গত ২৪ ফ্রেরুয়ারি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। ওই দিনই দেশটিতে রাশিয়ার হামলা শুরু হলে বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে জাহাজে আটকা পড়েন ক্যাপ্টেন জি এম নুর-ই- আলম, চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুকসহ ২৯ বাংলাদেশি নাবিক। ইউক্রেনে হামলা শুরুর সপ্তম দিনে বাংলাদেশি জাহাজটিতে গোলার আঘাতের ঘটনা ঘটল। সমুদ্রগামী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ২০১৮ সালে বিএসসির বহরে যুক্ত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছেলের শোকে বাকরুদ্ধ মা আমেনা বেগম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ