Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রংপুরে ৪ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার রিমান্ডের আবেদন

প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রংপুর জেলা সংবাদদাতা : রংপুরে জাপানী নাগরিক হোশি কোনিও হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি সাদ্দাম হোসেনের প্রশিক্ষক বেলালসহ জেএমবির চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে রংপুর মহানগরীর অদূরে চন্দনপাট শাহবাজপুর গ্রামের চাপড়ার বিল নামক এলাকার একটি পরিত্যক্ত ইটভাটা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
গতকাল দুপুরে রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তার সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, জাপানী নাগরিক হোশি কুনিও হত্যার পর এই অঞ্চলের জেএমবি সদস্যরা গা ঢাকা দেয়। আমাদের কাছে কিছুদিন থেকে খবর ছিল জেএমবি সদস্যরা আবারো সক্রিয় হচ্ছে এই এলাকায় নাশকতার জন্য। এরই মধ্যে শনিবার রাতে জেএমবি সদস্যরা নগরীর অদূরে শাহবাজপুর এলাকার এসএমবি ইটের ভাটায় বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।
খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে জেএমবি সদস্যরা গুলি ও ককটেল ছুড়তে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় এসআই মাসুদ রানা, মামুনুর রশিদ, কনস্টেবল আসাদ ও আব্দুল খালেক আহত হন। এক পর্যায়ে জেএমবি সদস্যদের পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এসময় একটি দেশি পিস্তল, স্টিলের চাপাতি চারটি, চাইনিজ কুড়াল ১টা, রাম দা একটি, ছোট কুড়াল, একটি লোহার পাইপ, চারটি ককটেল, জিহাদী বই এগারটি, পাটের বস্তা ৪টি, মোবাইল সেট ৪টি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো বেলাল হোসেন (৪৬), এরশাদ আলম (২৭), আশরাফুল আলম (২৩) ও আল আমিন (২০)। এদের মধ্যে বেলাল-এর বাড়ি রংপুরের পীরগাছার দুর্গাপুর গ্রামে। আর বাকি তিন জনের বাড়ি পীরগাছার পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়া গ্রামে। আহত পুলিশ সদস্যদের রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো জানান, গ্রেফতারকৃত বেলাল হোসেন হোশি কুনিও মামলার চার্জশটভুক্ত আসামি সাদ্দামের দীক্ষাগুরু। তার কাছেই সে জেএমবির শিক্ষা নেয়। সে ১৯৯১ সাল থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত শিবির করত। ৯৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত জামায়াত করত। ২০১৪ সালে সে জেএমবিতে যোগ দেয়। অপর গ্রেফতারকৃত এরশাদ আলমও আগে শিবির করত। পরে ২০১৪ সালে জেএমবিতে যোগ দেয়। বাকিরা শুরু থেকেই জেএমবির সক্রিয় সদস্য।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতরা হোশি কুনিও মামলার আসামি নয়, তবে তারা এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। এজন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়েছে সন্ত্রাস ও নাশকতা, অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে তিনটি মামলা করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ৩ অক্টোবর রংপুর মহানগরীর অদূরে কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারী এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন জাপানী নাগরিক হোশি কোনিও। এ ঘটনায় কাউনিয়া থানার ওসি বাদী হয়ে ৩ অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা করে।
গত ৭ আগস্ট রংপুর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফুর রহমানের আদালতে জাপানী নাগরিক হোসি কোনিও হত্যাকা-ের ১০ মাস ৭ দিন পর ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন। এরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য।
এদের মধ্যে মাসুদ রানা (২১), এসহাক আলী (২৩), লিটন মিয়া (২৩), আবু সাঈদ (৩৫) গ্রেফতার হয়ে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলায়। সাদ্দাম হোসেন (২১), গাইবান্ধার নজরুল ইসলাম (২৮) এবং পঞ্চগড়ের সাখাওয়াত হোসেন (৩৩), রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসানুল্লাহ আনছারী (২৮) পলাতক রয়েছে। এখন মামলাটি রংপুর স্পেশাল জজ আদালতে বিচারাধীন আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রংপুরে ৪ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার রিমান্ডের আবেদন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ