Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হতাশায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী : ২ বছর ধরে বন্ধ ডাচ বাংলা বৃত্তি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২২, ১২:০২ এএম

প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন স্তরের দরিদ্র, অসচ্ছল, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে দেশের বেসরকারি ব্যাংকসহ নানান আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক (করপোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটি- সিএসআর) কার্যক্রমের অধীনে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে থাকে। তাদের মধ্যে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বিবেচনায় অনন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক ফাউন্ডেশন (ডিবিবিএফ)। এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রাখা শিক্ষার্থীদের মাসিক ভিত্তিতে প্রতিবছরই মোটা অংকের টাকা প্রদান করে থাকে ব্যাংকটি। এসএসসি উত্তীর্ণদের আড়াই হাজার টাকা করে ২ বছর, এইচএসসি উত্তীর্ণদের ৩ হাজার টাকা করে ৩ থেকে ৫ বছরের জন্য এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১ থেকে ২ বছরের জন্য ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়। এছাড়াও শিক্ষা উপকরণ কেনার জন্য বাৎসরিক আড়াই হাজার টাকা এবং ড্রেসের জন্য এক হাজার টাকা দেওয়া হয় এসএসসি উত্তীর্ণদের। অন্যদিকে এইচএসসি উত্তীর্ণ অনার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বছরে এককালীন দেয়া হয় ছয় হাজার টাকা এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। এসব টাকা দিয়ে অসচ্ছল কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের পরবর্তী পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেন। তবে করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে বন্ধ রয়েছে তাদের এই কার্যক্রম। বিভিন্ন স্তরে বৃত্তিপ্রাপ্ত প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থীদের ২০২০ সালের শুরু থেকে এ যাবতকাল দুই বছরের অধিক সময়ের বৃত্তির টাকা আটকে আছে। ফলে হতাশায় রয়েছে এসব শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বৃত্তির টাকা পায় শিক্ষার্থীরা।
আগামী এক মাসের মধ্যে করোনাকালের এক বছরের টাকা পরিশোধসহ ৩ দাবিতে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের একাংশ।
এসময় শিক্ষার্থীরা করোনা মহামারীর শুরু থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের নানা অসংগতি তুলে ধরে আগামী এক মাসের মধ্যে করোনাকালীন এক বছরের প্রাপ্ত টাকা পরিশোধ করা, এক সপ্তাহের মধ্যে ২০২২ সালের তিন মাসের টাকা নবায়ন করা ও বৃত্তি পেতে ন্যূনতম ৩.০৫ জিসি’ র আনঅফিশিয়াল শর্ত বাতিলের দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রাইম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক সহ অন্যান্য বেসরকারি ব্যাংকের বৃত্তি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা দেয়া বন্ধ রেখেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বললে তারা জানায়, ডাচ-বাংলা ব্যাংক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য বৃত্তি দেয়। তবে করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তির টাকা দেয়াও বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মতে তাদের বৃত্তি বন্ধ করা হয়েছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে বৃত্তি। করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ক্রমান্বয়ে অন্যান্য ব্যাংক বৃত্তি চালু করলেও করছে না ডাচ বাংলা। করোনাকালে যারা স্নাতক চতুর্থ বর্ষে ছিল তারা এক বছরের টাকা টাকা পায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেন, ডাচ বাংলা ব্যাংকে আবেদন করার কারণে আমরা অন্য কোনো জায়গায় আবেদন করতে পারিনি। আবেদন করলেই আমরা শর্ট লিস্টেড হয়ে গিয়েছি। আমাদের ডিসকোয়ালিফাই করা হয়েছে। এখন মাঝপথে বৃত্তিটা বন্ধ করে দিয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। ফলে আমরা অন্যান্য ব্যাংক থেকেও কোনো বৃত্তি নিতে পারছি না। এদিকে ডাচ বাংলার বৃত্তিও বন্ধ। ব্যাংক আমাদের শুরুতে প্রতিমাসে ২ হাজার ৫০০ এবং পরে ৩ হাজার টাকা করে বৃত্তি দিতো। কিন্তু এখন মাঝপথে বৃত্তিটা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়াও ২০১৯ সালে দেওয়া বৃত্তির চুক্তিপত্রে ৩.৫০ সিজিপিএ রাখার কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু তারা এখন এটা সংযুক্ত করেছে। এর কারণেও অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বাদ পড়ে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্মারকলিপি প্রদান ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় প্রতারণার মামলা করার কথা জানান তারা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ