Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রিন্সিপাল শাহান আরাকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের পাঁয়তারা

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ড. শাহান আরা বেগমের মেয়াদ শেষ হবে চলতি মাসের ২৮ তারিখ। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবারো তাকে প্রিন্সিপাল পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছে ম্যানিজিং কমিটি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ অভিভাবকরা।

তারা বলছেন, প্রিন্সিপাল ড. শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য ও এসএসসির ফরম পূরণে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠায় তা তদন্ত করছে দুদক। কয়েক দফা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অবৈধ সম্পদের খোঁজে ৫৮ ব্যাংকসহ ৬৮ প্রতষ্ঠানে চিঠিও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে ভর্তি পরীক্ষার খাতা ঘষামাজা করে নম্বর বাড়িয়ে ফেল শিক্ষার্থীকে পাস করানোর অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তার এমপিও স্থগিত করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। তাই তাকে বাদ দিয়ে নতুন প্রিন্সিপাল নিয়োগের দাবি জানিয়েছে অভিভাবকরা।
জানা যায়, শাহান আরা বেগম আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রিন্সিপাল থাকাকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ২০১৯ সালে মতিঝিল শাখায় এসএসসি ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। টেস্ট পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হন তাদের কাছ থেকে বিষয়প্রতি ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করে ফরম পূরণের সুযোগ দেন শাহান আরা বেগম। পরে বিশেষ বিবেচনায় ওই পরীক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা হয় বলে জানা গেছে। এছাড়া আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল শাখা, বনশ্রী ও মুগদা শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে টাকা নেয়ারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিশেষ ক্লাসের নামে বাধ্যতামূলক অর্থ আদায়ের অভিযোগ পেয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় অভিযান চালায় দুদকের একটি দল। প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার ও উপ-সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত দল অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। ওই সময় অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত জব্দ করে দুদক। ২০১৯ সালের মে মাসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র ঘষামাজা করে নম্বর দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রিন্সিপাল শাহান আরা বেগমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড। সঠিক জবাব দিতে না পারায় তার এমপিও (মান্থলি মেমেন্ট অর্ডার) সাময়িক স্থগিত করে মন্ত্রণালয়।
এদিকে শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন প্রিন্সিপাল নিয়োগের দাবি জানিয়েছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরাম। সম্প্রতি ফোরামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান প্রিন্সিপাল মেয়াদ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। অভিভাবক ফোরাম তাদের সভায় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নতুন প্রিন্সিপাল নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির কাছে দাবি জানানো হয়েছে। তারা বলেন, প্রিন্সিপাল পদে চুক্তিভিত্তিক কোনো নিয়োগ এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ২৭ হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের ৫৪ হাজার অভিভাবক কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ড. শাহান আরা বেগমের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ