পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারাদেশে ৮০ শতাংশ লেভেল ক্রসিংই অবৈধ। এসব লেভেল ক্রসিংয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এজন্য সারাদেশে লেভেল ক্রসিং উন্নয়নে ২০১৫ সালে দুটি প্রকল্প নেয় রেলওয়ে। এগুলোর আওতায় এক হাজার ৬৮০ গেটকিপারও নিয়োগ দেয়া হয়। প্রকল্প দুটির মেয়াদ আগামী জুনে শেষ হতে যাচ্ছে। ফলে চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন এক হাজার ৬৮০ গেটকিপার। আর প্রকল্প দুটি শেষ হলে অরক্ষিত হয়ে পড়বে অধিকাংশ লেভেল ক্রসিং।
এক্ষেত্রে প্রকল্পের আওতায় নিয়োগকৃত গেটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানায় রেলওয়ে। কারণ বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তা সম্ভব নয়। তাই চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে আমরণ অনশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গেটকিপাররা। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৮৮৯ জন গেইট কিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চল এই সংগঠনের পক্ষ থেকে দফতর সম্পাদক মো. আল মামুন জানিয়েছেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বাংলাদেশ রেলওয়ের মান-উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের ১৮৮৯ গেইটকিপারদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু হবে। অনশন কর্মসূচিতে রেলওয়ের গেইটকিপারদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে।
জানা যায়, সারাদেশে দুই হাজার ৮৫৬টি লেভেল ক্রসিং থাকলেও তার মধ্যে রেলওয়ে দেখাশোনা করে এক হাজার ৪৫টি। এরমধ্যে আবার ৩৬২টিতে কোনো গেটকিপার নেই। এর বাইরেও লেভেল ক্রসিং আছে, যার সঠিক হিসাব নেই। সার্বিক বিবেচনায় ৮০ ভাগের মতো লেভেল ক্রসিংয়ে কোনো গেটকিপার নেই, নিরাপত্তাও নেই। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিংগুলোর পুনর্বাসন ও মানোন্নয়ন শীর্ষক দুটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয় ২০১৫ সালে। প্রকল্পের অধীনে পূর্বাঞ্চলে ৩২৮টি লেভেল ক্রসিংয়ের মানোন্নয়ন ও এক হাজার ৩৮ গেটকিপার দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৮২৯ জন নিয়োগ দেয়া হয়। আর পশ্চিমাঞ্চলে ৩২৬টি ক্রসিংয়ের মানোন্নয়ন ছাড়াও ৮৫১ অস্থায়ী গেটকিপার নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। সেখানে সব পদেই নিয়োগ দেয়া হয়।
পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিংয়ের মানোন্নয়ন প্রকল্পে শুরুতে বরাদ্দ ছিল ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। কয়েক দফা বাড়ানোর পর বর্তমানে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলে একই শিরোনামে নেয়া প্রকল্পটির জন্য শুরুতে বরাদ্দ ছিল ৪৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের মেয়াদও ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হতে যাচ্ছে। এজন্য প্রকল্প দুটি চলতি অর্থবছর সম্ভাব্য সমাপ্য প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে। তবে পরিকল্পনা কমিশনের হালনাগাদকৃত সম্ভাব্য সমাপ্য প্রকল্পের তালিকা থেকে এ দুটি বাদ দিতে চাইছে রেলওয়ে। এ নিয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি করেছে রেলওয়ে ও পরিকল্পনা কমিশন।
২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পদ সৃজন করে গেটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রস্তাব আবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তবে রেল মন্ত্রণালয়ের প্রেরিত প্রস্তাবনা সংশোধনের জন্য ২০২১ সালের ১১ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব করা হয়। বর্তমানে তার সংশোধন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রকল্পের আওতায় নিয়োগকৃত গেটকিপারদের বিভাগীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পদায়ন করা হয়েছে। আর রেল দুর্ঘটনা প্রতিরোধসহ ট্র্যাক সুরক্ষা ও ট্রেন পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকার কারণে গেটকিপার অপরিহার্য। তাই প্রকল্প সমাপ্ত হলেও তাদের দ্বারা কাজ চালিয়ে নেয়া প্রয়োজন। আর অধিকাংশ নিয়োগকৃত গেটকিপারের চাকরির বয়স তিন বছর পেরিয়ে গেছে। তাই তারা অস্থায়ীভাবে কাজ করলেও গেটকিপারের দায়িত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করেছেন।
এ অবস্থায় গেটকিপারদের চাকরির ধারাবাহিকতা বজায় না থাকলে ট্রেন পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হবে। আবার পুনর্বাসন/মান উন্নয়নকৃত গেটগুলোর জন্য নতুন পদ সৃষ্টিসহ আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা প্রয়োজন হবে। তবে এতে চাকরির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যাবে না। তাই দুই প্রকল্পের আওতায় পূর্বাঞ্চলে এক হাজার ৩৮টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ৮৫১টি গেটকিপারের পদ রাজস্ব খাতে সৃষ্টি ও বিদ্যমান জনবলকে আইনের ধারা প্রমার্জনপূর্বক রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানোর কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের আগ পর্যন্ত প্রকল্প দুটিতে নিয়োজিত গেটকিপারদের দ্বারা কাজ চালিয়ে নিতে হবে। তাই প্রকল্প দুটি আগামী জুনে শেষ করা হচ্ছে না। এজন্য চলতি অর্থবছর সম্ভাব্য সমাপ্ত প্রকল্পের তালিকা থেকে প্রকল্প দুটি বাদ দিতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার জানিয়েছেন, রেলের জন্য গেটকিপার খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। তাই প্রকল্প দুটিতে নিয়োজিত গেটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুমোদন গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এজন্য আপাতত জুনে প্রকল্প দুটি শেষ করা হচ্ছে না। আশা করা যায়, দ্রুতই এ সমস্যা সমাধান করা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।