পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপিকে ভয় পায় বলে সমাবেশ করতে দিচ্ছে না
স্টাফ রিপোর্টার
বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন, বিএনপিকে ভয় পায় বলে ৭ নভেম্বরের সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। এভাবে মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখা যায় না। আমরা বের হবো, কর্মসূচি পালন করবো, জনগণকে সঙ্গে পাবো।
দেশের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি কারো শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়ার জন্য নয়। বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম একটা দেশ এটা যারা বুঝে না, তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে যে, এই ১৬ কোটি লোক কারো ডিকটেশনে চলবে না ।
শনিবার রাতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা নেতাদের এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সন এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার আমাদেরকে কোনো কর্মসূচি করতে দেয় না। ৭ নভেম্বর আমরা বরাবর পালন করেছি। এবার আমরা একটা জনসভা করবো, তারা করছে, তারা করতে পারে, আমাদেরকে করতে দিতে চায় না। ভয় পায়। সেখানে জনগণকে তারা ভয় পায়। পয়সা দিয়ে লোক আনতে হয় না, ওইসব গু-া-পা-া আনতে হয় না। দেখেছেন, আমাদের সমাবেশে দলের লোকজন আসে, জনগণ আসে। সেই সমাবেশে এতো বড় হয়, সেটা দেখে তারা ভয় পায়। আমাদের সমাবেশকে ভয় পায় বিধায় আমাদেরকে সমাবেশ পয্র্ন্ত করতে দেয় না।
এই অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে পারে না উল্লেখ বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দীর্ঘদিন মানুষকে ঘরের ভেতরে বন্দি করে রেখে, ঘরের ভেতরে কর্মসূচি সেটাও করতে দেয়া যাবে না। আমাদেরকে বের হতে হবে। আমরা বের হবো। আমরা কর্মসূচি করবো। ইনশাল্লাহ জনগণকে আমাদের সাথে পাবো।
আগামী ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপি ৮ নভেম্বর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছে। যদি পুলিশ এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায় নি।
গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়।
শুক্রবার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউসন মিলনায়তনে মহিলা দলের জেলা প্রতিনিধিদের এই সম্মেলন হয়। সারাদেশ থেকে সংগঠনটির ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর মহিলা দলের আফরোজা আব্বাসকে সভানেত্রী ও সুলতানা আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয় বিএনপি।
সভায় বেগম খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, সরকার প্রতিটি পদে পদে বাঁধা সৃষ্টি করছে, যাতে আমরা কাজ করতে না পারি। কিন্তু আমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে আছি। আপনাদের মনোবল শক্ত আছে, সত্যের জয় হবেই হবে।
চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বী দাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম বেশি। অন্যদিকে কৃষকরা ধানের দাম পায় না। তারা পণ্য উৎপাদন করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। সেখানেও সরকারি দলের লোকেরা মুনাফা নিয়ে যাচ্ছে।
১০ টাকা কেজি দামে হতদরিদ্রদের চাল ক্ষমতাসীনরা লুট করে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি প্রধান।
দেশের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, আমরা কারো কথা শুনে চলার জন্য নয় বা কারো শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়ার জন্য নয়। আমরা স্বাধীন সার্বভৌম একটা দেশ, এটা সকলকে বুঝতে হবে। যারা এটা বুঝে না, তাদের আমাদের বুঝিয়ে দিতে হবে যে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ এখানে ১৬ কোটি লোক আমরা। এই ১৬ কোটি লোক কারো ডিকটেশনে, কারো নির্দেশে চলবে না। শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দেবো বা মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আমরা সব কিছু মেনে নিয়ে যা বলবে, তা করবো, সেটা আমরা মেনে নিতে পারি না, বিএনপি বা জাতীয়তাবাদী শক্তি তা মেনে নিতে পারে না।
মহিলা দলের নেতৃবৃন্দকে সংগঠন শক্তিশালী করার জন্য তাগিদ দেন খালেদা জিয়া। দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠন ও পুনর্বিন্যাসের দাবি জানান।
তিনি বলেন, মানুষ যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঠিক করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠন ও পুনর্বিন্যাস করতে হবে। এরপর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তাহলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে, আইনের শাসন ফিরে আসবে। একটা জবাবদিহী সংসদ হবে যেখানে সুন্দর বির্তক হবে, সরকারি দলও থাকবে, বিরোধী দলও থাকবে। দেশে বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এরা দুর্নীতি করেই যাচ্ছে, করেই যাচ্ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না, জবাবদিহীতা হচ্ছে না। কার কাছে জবাবদিহী করবে। তেনারাই তো সর্বেসর্বা। বিচার বিভাগ আছে, তার কোনো ক্ষমতা নেই। সরকারই সব নিয়ন্ত্রণ করছে।
এ সরকারের আমলে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় মধ্যে চলছেন উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, প্রতিনিয়ত নারী ও শিশুরা নির্যাতিত হচ্ছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত সরকারি মদদে তাদের দলের লোকজনই করছে। ওদেরকে ধরাও হয় না, বিচারও হয় না। বিচারহীনতার কারণে অপরাধীরা ঘুরে বেড়ায়। তাদের শাস্তি দেয়া হয় না। কারণ তারা জানে তাদেরকে ধরা হবে না। সে জন্য তারা একটার পর একটা খারাপ কাজ করে চলেছে।
আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নুরী আরা সাফা, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, নুরজাহান ইয়াসমীন, জেবা খান, হেলেন জরিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।