পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ কি চীনের দিকে ঝুঁকছে? এমন পর্যবেক্ষণে কি উদ্বিগ্ন ভারত? বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মন্তব্যে কি সেরকম ইঙ্গিত ছিল?
তবে জার্মানির মিউনিখে ওই বাঁকা কথার পর ফ্রান্সে আবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেছেন। আর সর্বশেষ খবর হলো, সেই বৈঠকেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামী জুনের মধ্যে ভারত সফর করবেন ড. আব্দুল মোমেন।
এদিকে গতকাল বুধবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন দুই দিনের সফরে ভারত গেছেন। তার এই সফরের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে আলোচনা। তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সাথে বৈঠক করবেন। বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনে শেখ হাসিনার চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দিল্লি সফরের কথা রয়েছে। গত বছরের মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে আসেন। তখন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান।
মিউনিখ থেকে প্যারিস : জার্মানির মিউনিখে গত শনিবার মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে আলোচনা চলাকালে চীন যেভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়াড জোটগুলো তেমনটা দিতে পারবে কিনা- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের এমন প্রশ্নের জবাব ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বেশ কড়াভাবেই দেন। তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক নয় এমন অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণে ঋণ নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ভাবতে হবে। এ নিয়ে উদ্বেগ না থাকলে ভংগুর অবকাঠামোই তৈরি হবে।
তিনি শ্রীলঙ্কায় চীনের কিছু বিনিয়োগের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, সেখানে চীনা অর্থায়নে প্রকল্পগুলো তারা চালাতে না পেরে চীনকেই আবার ভাড়া দিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের অনেক দেশের ওপর আমরা এখন দেনার বোঝা চাপিয়ে দিতে দেখছি। যে এয়ারপোর্টে একটি বিমানও অবতরণ করবে না, বা যে বন্দরে একটি জাহাজও আসবে না- বাণিজ্যিকভাবেও টেকসই নয় এমন সব প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
তবে ড. আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন চলছে, এই বাস্তবতায় কী করা উচিত সে সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। জনগণও আরো অবকাঠামো চায়।
তবে এরপর প্যারিসে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় গিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত সোমবার সন্ধ্যার সেই বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘২০২২ সালে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে বলে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি নিষ্পন্ন করার বিষয়ে পুনরায় জোর দিয়ে ড. আব্দুল মোমেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে আলাপ করেন। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি বন্টন নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়।
বাংলাদেশের কূটনীতিকদের মন্তব্য : সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ চীনের কাছে পাকিস্তানের মতোই বন্ধক হয়ে যায় কিনা এটা নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্নতা আছে। বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে তাই তারা কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে আছে। কিন্তু ভারত তো কোনো বিকল্প দিতে পারছে না। তাদের বিনিয়োগ এখানে ১০ বিলিয়ন ডলার। এস জয়শঙ্কর যে বলেছেন অবাস্তব প্রকল্প, ভারতীরাও তো অবাস্তব প্রকল্প দেয়। তারা এমনভাবে প্রকল্প দেয় যে বালু সিমেন্টও তাদের কাছ থেকে নিতে হয়। এর চেয়ে তো অবাস্তব কিছু হতে পারে না। আমাদের চীনারা সেগুলোই দেয় যেগুলো আমাদের এখানে নেই। ভারত তো আমাদের এমনিতে দিচ্ছে না। আমাদের তো ফেরত দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, চীনের ওপর নির্ভরশীলতা ভালো। ভারতকে আমাদের যা দেয়ার দিয়েছি, এখন তাদের উচিত প্রতিশ্রুতি পুরণ করা।
সাবেক রাষ্ট্রদূত শহীদুল হকও একই ধরনের কথা বলেন। তার কথা, ‘ভারত ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা বলছে। কিন্তু বস্তবে বিনিয়োগ করেছে কত? এক বিলিয়ন ডলারের বেশি তারা এখনো দেয়নি। আর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীলঙ্কার যে পোর্টের কথা বলেছেন সেখানে কিন্তু জাহাজ ভিড়ছে। তিনি আসলে এটা বলার জন্য বলেছেন। কোনো এয়ারপোর্টে একটিও বিমান নামে না- তিনি কি তা দেখাতে পারবেন? আর বাংলাদেশে যে চীনা বিনিয়োগ তা কি অবাস্তব?’
ভারত এখন বাংলাদেশকে একটু চাপে ফেলতে চাইছে যাতে চীনের সাথে দূরত্ব বজায় রাখে এমন মন্তব্য করে শহীদুল হক আরো বলেন, ‘ভারত এখন বাংলাদেশকে একটু চাপে ফেলতে চাইছে, যাতে চীনের সাথে দূরত্ব বজায় রাখে। যেহেতু র্যাব-পুলিশের সাত সদস্যের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশকে একটু চাপে ফেলেছে, সেই সুযোগে তারা একটু সুবিধা নিতে চায়।’
ভারতে মৈত্রী সম্মেলন : ভারতের সিমলায় ইন্ডিয়া- বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগে এবার আরএসএসও যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও যোগ দেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা সেখানে যান। এটা ভারতের বিজেপি ও বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের মতবিনিময় মঞ্চ হিসেবেই কাজ করে আসছে। এবারকার এই ডায়ালগের নতুন কোনো গুরুত্ব আছে বলে মনে করেন না সাবেক রাষ্ট্রদূত তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়েই আছে। এখন ভারতের দায়িত্ব হলো এটা ধরে রাখা। তাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে।’ শহীদুল হক বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে আওয়ামী লীগ ও বিজেপির একটা ডায়ালগ ছাড়া আর কিছু না।’
আশুলিয়ায় জুতা কারখানায় ভয়াবহ আগুন নিহত ৩
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় একটি জুতা তৈরীর কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকান্ডে তিন শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০জন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেল আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি বঙ্গবন্ধু রোড এলাকার ‘ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার লিমিটেড-২’ নামের জুতা প্রস্তুতকারী কারখানায় এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন মহিলা রয়েছে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় তাৎক্ষনিক জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে আশুলিয়ার বঙ্গবন্ধু রোড এলাকার ইউনি ওয়ার্ল্ড নামের জুতা তৈরীর কারখানায় আগুন লাগে। প্রথমে কারখানার লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ৩ ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজে যোগদান করেন।
কিন্তু আগুনের তীব্রতা বেশী থাকায় সাভার থেকে দুটি ও টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের দুটিসহ মোট ৭টি ইউনিট প্রায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনে তিন শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০জন।
ডিইপিজেড ফায়ারসার্ভিসের সিনিয়র ষ্টেশন অফিসার জহিরুল ইসলাম বলেন, আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার কাজ করে। কিন্তু কারখানাটিতে বিভিন্ন ক্যামিকেল ও দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ততক্ষনে পুরো কারখানাটি পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। আগুন নেভানোর সময় দমকল সদস্য ও শ্রমিকসহ আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। কারখানার ভিতর থেকে তিনটি লাশ পাওয়া গেছে। আরও ভাল করে অনুসন্ধান চলছে বলেন তিনি।
বস্ত্র ও পোশাক শিল্প লীগেে সাংগঠনিক সম্পাদক সরোয়ার আলম বলেন, কারখানাটিতে ৩০জন শ্রমিক কাজ করে। আগুনে দগ্ধ হয়ে তিন জন মারা গেছে। আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।