পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের ঐতিহাসিক অবদান বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না এবং তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক এখন অনন্য উচ্চতায়› উল্লেখ করেন তিনি। গতকাল বুধবার সকালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন আয়োজিত এ উৎসব উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে। ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বাংলাদেশের মমতাজ বেগম এমপি, সাইমুম সারওয়ার কমল এমপি, তথ্য ও সম্প্রচারসচিব মো. মকবুল হোসেন, ভারতে বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার নুরাল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
উৎসব উদ্বোধক তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের এককোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো এবং বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকারের ফাঁসির আদেশের পর বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য তৎকালীন ভারত সরকার পৃথিবীর দেশে দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছিলো। ভারতের এ অবদান আমরা কখনো ভুলতে পারবো না। ত্রিপুরার মানুষ তাদের রাজ্য এবং মনের দুয়ার দুটিই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অবারিত করে দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ থেকে আসা লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, যা তারা বোঝা মনে করেন নাই› উল্লেখ করে ত্রিপুরার মানুষ এবং তৎকালীন রাজ্য সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।
ড. হাছান বলেন, ত্রিপুরাকে নিয়ে আমার আবেগ এবং উচ্ছ্বাস রয়েছে। আমরা দুই দেশের মানুষ হলেও আমাদের ভাষা এক, সংস্কৃতিরও মিল রয়েছে, আমরা একই পাখির কলতান শুনি। ত্রিপুরার অনেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছে তাদের অনেককেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে তাদের মধ্যে জীবিত এবং মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান সম্প্রচারমন্ত্রী।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে বলেন, ‹বিশ্বে আজ বাংলাদেশের মানুষের বুক টান করে হাঁটে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে দু›দেশের শত্রুরা কখনো সফল হতে পারবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বছর একাত্তর সালেই আমার জন্ম। সেকারণে বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে আমার জন্মের একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম বিদেশ সফর হবে বাংলাদেশে।
আলোচনা শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জীবনভিত্তিক শেখ হাসিনা ‘আ ডটার›স টেল’ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় এবং বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এর আগে সকালে ড. হাছান মাহমুদ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে তার সাথে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সংস্কৃতি ও বাণিজ্য সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। এসময় ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়ন এবং বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর নানা উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার তথ্যমন্ত্রী গৌহাটিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করবেন।
আগরতলা ও গৌহাটি দুই শহরে দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন ছাড়াও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গতকাল বুধবার থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত সফরে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সাথে বৈঠক, গৌহাটিতে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধু কেন্দ্র ও আসাম নেপাল মন্দিরে ইন্দো-বাংলা জামদানী প্রদর্শনী কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন।
এ দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও আখাউড়া উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টায় ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় ও গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে যাওয়ার আগে আখাউড়া স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্টে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আ.লীগ সরকারের সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সারা দুনিয়া দেখলেও ফখরুল সাহেবরা তা দেখেন না। জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও উন্নয়ন দেখছেন। এত কিছুর পরও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা কিছুই দেখতে পারেন না। তারাই (বিএনপি) মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন নিজেদের আখের গুছিয়েছে। হাওয়া ভবন পরিচালনা করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে লুপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছে। যেই টাকা দিয়ে তারেক জিয়া এখন বিদেশে বসে বিলাশ বহুল জীবন যাপন করছে। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা যদি অরাজনীতি না করতো তাহলে দেশ ১৩ বছরে অনেক দূর এগিয়ে যেত।
তিনি আরও বলেন, ভারত আমাদের অত্যন্ত বন্ধুপ্রতিম দেশ। দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় রয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সম্প্রচার হচ্ছে। ত্রিপুরাতেও বাংলাদেশের অনেকগুলো টিভি চ্যানেল দেখা যায়। সমস্যা হচ্ছে পশ্চিম বাংলায়। যদিও ভারত সরকারের পক্ষে কোনো সমস্যা নেই। সেখানকার কেবল অপারেটররা বেশি ফি চাচ্ছে বলে সেখানে বাংলাদেশের বেসরকারি চ্যানেলগুলো দেখানো যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।