পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নীলক্ষেত বইবাজারের আগুনে নিউ বুক গার্ডেন একরকম ছাই হয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত তাই দাঁড়িয়ে থেকে দেখেছেন দোকানের মালিক মো. জহির। গতকাল বুধবার তাকে দেখা গেল সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর বসে বই বিলাতে। তিনি বলেন, এই যে এই দিকে ম্যানেজমেন্ট ফার্স্ট ইয়ার, ফার্স্ট ইয়ার। চোখে চোখ পড়তে বললেন, অনেক বইয়ের চারপাশটা পুড়ে গেছে, কোনোটা ভিজে গেছে। একটু রোদে শুকিয়ে নিলে ব্যবহার করা যাবে। তাই বিনা মূল্যে দিয়ে দিচ্ছেন।
জহিরসহ আরও বেশ কিছু বই বিক্রেতাকে ঘিরে ধরেছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। তাদের একজন দীপ বক্সি। পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেছেন। বোনকে ইডেন কলেজে ঢুকিয়ে নীলক্ষেতে এসেছেন দীপ। বেশ বড় একটা গাঁট্টি দেখিয়ে তিনি বললেন, কিছু বই নীলক্ষেত থেকে কিনেছেন, বিনা মূল্যের কিছু বই ছোট ভাইবোনদের জন্য নিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার নীলক্ষেতের বইবাজারের দোতলার একটি বইয়ের দোকান থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৪৩ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে আরও বেশ কিছু দোকানে। ১০টি ইউনিটের চেষ্টায় ৮টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, ৩৫-৪০টি দোকান পুড়েছে। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
গতকাল বইবাজারে আগুন না থাকলেও ছিল ধোঁয়ার গন্ধ। বিক্রেতারা পুড়ে যাওয়া ও পানিতে ভিজে যাওয়া বই এক জায়গায় জড়ো করে দোকানপাট পরিষ্কারের কাজ করছিলেন। এ কাজে কত দিন লাগবে বুঝতে পারছেন না। আলম বুক সেন্টারের মালিক মো. সাব্বির আগুন থেকে শ খানেক বই বাঁচাতে পেরেছেন। বাকি সব নষ্ট হয়ে গেছে।
সাব্বির বলেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিল। আর আমি সোমবার রাতে ২০ লাখ টাকার বই তুললাম। আমরা ছোট পুঁজির দোকানদার। এই বাজারে এমন দোকানদার আছে যাদের বই বিক্রি হলে বাজার হয়, না হলে হয় না। ক্ষতিপূরণ বা কোনো সাহায্য চান কি না জানতে চাইলে বলেন, তারা জানেন না কোথায় সাহায্য চাইতে হয়। তার যতটা ক্ষতি হয়েছে, ততটা পূরণ হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় আছে।
সাদ্দাম হোসেন নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, করোনার পর তিনি অনেক টাকা ঋণ নিয়ে দোকানটা গুছিয়ে ছিলেন। নিজে খাবেন কী, ঋণ শোধ করবেন কী করে, বুঝে উঠতে পারছেন না।
হযরত শাহজালাল মার্কেট উন্নয়ন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও জেনুইন বুক সেন্টারের কর্ণধার গিয়াস উদ্দীন সকাল থেকেই বইয়ের বাজারে। তার নিজের দোকানও পুড়ে গেছে। তিনিও বলেন, নিজেরাই নিজেদের মতো করে সকালে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবারদাবারের ব্যবস্থা করেছেন। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে হযরত শাহজালাল মার্কেটের ২৭টি, সিটি করপোরেশনের ৩টি, বাবুপুরাক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির ১০টি ও ইসলামিয়া মার্কেটের ১৫টি দোকান পুড়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা।
এদিকে নীলক্ষেতের বইয়ের বাজারের আগুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বেদনাতুর করেছে। তাদের অনেকেই দুর্ঘটনাস্থলের ছবি শেয়ার করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টও দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।