পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভোলার স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর ফয়েজ উল্লাহ জীবিকার তাগিদে ১৯৯২ সালে ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর মিরপুরের ১৪ নম্বরে শুরু করেন কনস্ট্রাকশনের কাজ। এক পর্যায়ে কাফরুলের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফিল্ড অফিসার পদে চাকরি। ২০২১ সালে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা করেন। তবে এই সমিতির নাম বেআইনিভাবে পরিবর্তন করে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে শুরু করেন প্রতারণা। ফুটপাতের বিক্রেতা, হকার, রিকশা ও ভ্যানচালক এমনকি ভিক্ষুকসহ শ্রমজীবীদের টার্গেট করে গত ৫ মাসে কোম্পানির ৩০০ সদস্যের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৫০ লাখের বেশি টাকা আত্মসাৎ করে প্রতারক ফয়েজ উল্লাহ। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মিরপুরের শাহ আলীর মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়ে প্রতারক ফয়েজ উল্লাহসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলো-মুন্সীগঞ্জ জেলার আফরিন আক্তার (২৪) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোছা. তাসলিমা বেগম (৩৩)। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, অভিযানে সেখান থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ফরম, ঋণ গ্রহীতার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের জীবন বৃত্তান্ত, লিফলেট, সিলসহ বিভিন্ন কাগজপত্র এবং ফয়েজ উল্লাহর নামে কমিউনিটি ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির নানা সার্টিফিকেট, চেক বই, মনিটর, সিপিইউ উদ্ধার করা হয়। শিবপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেডের নাম পরিবর্তন করে তৈরি করা ভুয়া সমিতিতে ২০ জন সদস্য অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে ৩০০ জন সদস্য রয়েছে। এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানের কোনো রক্ষিত জামানত নেই। প্রতারণার কৌশল হিসেব সদস্য সংগ্রহ করা হতো। এই চক্র মাঠ পর্যায়ের কর্মী/সদস্যদের মাধ্যমে রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন বস্তি এলাকার প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, সেলুনের কর্মচারী, মনোহারি ও ফুটপাতের দোকানদার, গৃহকর্মী ও নিম্নআয়ের মানুষদের টার্গেট করে ঋণের লোভ দেখিয়ে সঞ্চয়ের নামে তাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ/ডিপিএস করতে উদ্বুদ্ধ করতো। পরে তারা ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ ও বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করে নানান কৌশলে ভুলিয়ে প্রতারক চক্রের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতো। ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ প্রতিদিন আনুমানিক ৩০০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ করে।
তিনি আরো বলেন, পরে শ্রমজীবী মানুষদের ভুল বুঝিয়ে ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প প্রচার করে যেমন-মুদারাবা ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা কোটিপতি বিশেষ সঞ্চয়, মুদারাবা লাখপতি ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা মিলিওনিয়ার ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা পেনশন ডিপোজিট। প্রতারক ফয়েজ উল্লাহ ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে অল্প সময়ে ঋণ দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে সঞ্চয়/বিনিয়োগ/ডিপিএস করতে আগ্রহী করতেন। ভুক্তভোগীদের বলা হতো ১০-১৫ দিন ঠিকমতো নির্দিষ্ট হারে সঞ্চয় দিলে তাদের ঋণ দেয়া হবে, যা দিয়ে তারা সুন্দরভাবে ব্যবসা করতে পারবেন। ভুক্তভোগীদের দুই-একজনকে ঋণ দিলেও কেউ সঞ্চয় থেকে ঋণ পেতেন না।
তিনি বলেন, এই কোম্পানির কিছু সদস্য দৈনিক ভিত্তিতে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে সঞ্চয়/ডিপিএসের টাকা সংগ্রহ করতেন। ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হতো, তারা যদি সময়মত সঞ্চয়/ডিপিএসের টাকা না পরিশোধ করেন তাহলে তাদের সঠিক সময়ে ঋণ দেয়া হবে না। অথবা মেয়াদ শেষে তারা মুনাফা কম পাবেন এবং জরিমানাও করা হবে।
চক্রটি ফ্ল্যাট/জমি দেয়ার আশ্বাস দিয়েও প্রতারণা করে আসছিলো বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, প্রতারণার আর একটি কৌশল হিসেবে ভুক্তভোগীদের বোঝানো হতো যে, দৈনিক মাত্র ২০০/৩০০ টাকা করে জমা করলে একসময় ঢাকা শহরে তাদের একটি করে ফ্ল্যাট বা জমি দেয়া হবে। এছাড়াও প্রতারক চক্রটি শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড এবং ভুয়া ও অনুমোদনবিহীন মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনকে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বলে মিথ্যা আশ্বাস দিতো। সমিতির সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ নিজে। সহ-সভাপতি বানিয়েছেন তার বন্ধু সিরাজুল ইসলামকে। এ সমিতির সম্পাদক তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম, যুগ্ম-সম্পাদক শ্যালক আলাউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ ছেলে আরিফ হোসেন ও সদস্য তার আরেক বন্ধু মো. জামিল হোসেন ওয়াদুদ। তারা সবাই এখন পলাতক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।