Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সরকার গণতন্ত্র-ভিন্নমতে বিশ্বাস করে না বলেই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি -মির্জা ফখরুল

নয়া পল্টনের অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে চিঠি

প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টফ রিপোর্টার : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার গণতন্ত্র ও ভিন্ন মতে বিশ্বাস করে না বলেই জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা জারির মধ্য দিয়ে তারা তাদের স্বরূপ উন্মোচিত করেছে। তারা একদলীয় সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাচ্ছে তারই প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। আমরা অবশ্যই এর বিকল্প জায়গাও চাইব। আমরা আশা করি, সেখানে সভা করার অনুমতি পাব। একই সঙ্গে নাসিরনগরের ঘটনার স্ষ্ঠুু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের শাস্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। গতকাল শুক্রবার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বেলা ১২টায় শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। গত ২৭ অক্টোবর বাবু ও জুয়েলের নেতৃত্বে আংশিক কমিটি বিএনপির অনুমোদন পায়।
শ্রদ্ধা জানানোর সময়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নবগঠিত কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরাজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসীন আলীসহ সহস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়ি-ঘরে হামলা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা একটা সুপরিকল্পিত ঘটনা। দেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে, তাকে বিনষ্ট করা এবং সেই সঙ্গে একটি মহল যারা বাংলাদেশে সমস্যা তৈরি করতে চায়, এই ধরনের ঘটনাগুলোকে জনগণের যে মূল দাবি গণতন্ত্রের দাবি তার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দিতে চায় তারা এই ধরনের হীন কার্যকলাপের সাথে জড়িত হয়েছে।
নাসিরনগরের ঘটনার সাথে সরকার জড়িত কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সরকার জড়িত আছে কিনা, এটা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। আমরা দেখতে পারছি প্রশাসনের যে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ ছিলো, তারা নেয়নি। এই ধরনের ঘটনাগুলো সব সময় একটা মহল বিশেষের উদ্দেশ্যে প্ররোচিত হয়।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের এমন ঘটনা বার বার কেনো ঘটছে-জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আগেই বলেছি, গণতন্ত্র যেহেতু নেই এবং সরকার যেহেতু একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে এগিয়ে চলেছে এবং জনগণের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে এই ধরনের অবস্থা স্বাভাবিক। কারণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তীব্রভাবে নিচের দিকে নেমেছে। মানুষের সমস্যা সমাধান না করে তারা (সরকার) রাজনৈতিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে, যারই ফলশ্রুতিতে আমরা দেখতে পারছি, এধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে।
নয়া পল্টনের অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে চিঠি
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় এবার ৮ নভেম্বর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ফের আবেদন করেছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার বিকালে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের এক সভায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একথা জানান।
তিনি বলেন, আমরা জাতীয় একটি ঐতিহাসিক দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবো, আপনারা (পুলিশ) দিলেন না। তাহলে আমাদেরকে পার্টি অফিসের সামনে দিন, আমরা দরখাস্ত করেছি।
আমাদের বিশ্বাস আপনারা (পুলিশ) যে অজুহাত দিয়ে বলেছেন, যেখানে অন্যান্য রাজনৈতিক দল দরখাস্ত করেছে, সেজন্য আমরা দিতে পারলাম না। ঠিক আছে, তাহলে ৮ তারিখে আমাদেরকে পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি দিন, আমরা সেখানে সমাবেশ করবো জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে। আমাদের সেই বিশ্বাস নিয়ে আগামী ৭ নভেম্বর যে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি সফল করবো ৮ নভেম্বর দলীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে রিজভী বলেন, ৭ নভেম্বরকে সরকার ও আওয়ামী লীগ ভয় পায় বলেই তারা বিএনপিকে সমাবেশ করতে অনুমতি দেয়নি। আওয়ামী লীগ অন্ধকারের দল, গণতন্ত্র হত্যাকারীর দল। তারা জনগণের কাতার দেখলে ভয় পায়। রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা শহরকে দখল করে এয়ারপোর্ট থেকে যাত্রাবাড়ী, যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী আপনারা মরিচ বাতি জ্বালিয়ে যে কাউন্সিল করলেন, এটার উত্তর আছে। সড়ক দ্বীপ করে, লাইট পোস্ট দখল করে কাউন্সিলের প্রচার করলেন, এটার উত্তর আছে। আর আমরা সামান্য একটু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবো, সেটা আপনারা করতে দিলেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সরকার গণতন্ত্র-ভিন্নমতে বিশ্বাস করে না বলেই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি -মির্জা ফখরুল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ