Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কাজেই আসছে না বন্ধের সিদ্ধান্ত

রাজধানীর দোকানপাট বিপণিবিতান

একলাছ হক | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

কোন কাজেই আসছে না দোকানপাট-বিপণিবিতান বন্ধের নির্ধারিত দিনের সিদ্ধান্ত। যেসব এলাকায় বন্ধ থাকার কথা সেসব এলাকায় গতকালও ছিলো খোলা। কিন্তু শপিংমল ও বিপনিবিতানগুলো নির্ধারিত বন্ধের দিনেও খোলা রাখা যেন ব্যবসায়ীদের নিয়মে পরিণত হয়েছে। কোন কোন মার্কেট প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাস্তার দুইপাশে সারিবদ্ধ খোলা রাখা হয় দোকান। ব্যবসায়ীদের ভাব দেখে এমন মনে হয় যেন, তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে একদিন পূর্ণ দিবস ও একদিন অর্ধদিবস বন্ধ রাখার নিয়ম তা যেন তারা জানেনই না।
যানজট নিরসন ও বিদ্যুতের সাশ্রয়ের জন্য সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধের দিন নির্ধারণ যেন কাগজে কলমেই রয়ে গেলো। নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট ও বিপণিবিতান এলাকাভিত্তিক আলাদা আলাদা দিন বন্ধ থাকার ব্যবস্থা করা হয়। প্রতি সপ্তাহে এক দিন পূর্ণ দিবস ও আরেক দিন অর্ধদিবস বন্ধ থাকবে দোকানপাট ও শপিংমল। দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধের দিন নির্ধারণ করার প্রস্তাবটি ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় পাস হয়।
গতকাল শুক্রবার পূর্ণদিবস বন্ধ থাকার কথা পুরান ঢাকার বাংলাবাজার, পাটুয়াটুলী, ফরাশগঞ্জ, জুরাইন, করিমউল্লাহবাগ, পোস্তগোলা, শ্যামপুর, মীরহাজীরবাগ, দোলাইপাড়, টিপু সুলতান রোড, ধুপখোলা, গেণ্ডারিয়া, দয়াগঞ্জ, স্বামীবাগ, ধোলাইখাল, জয়কালী মন্দির, যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ, ওয়ারী, আহসান মঞ্জিল, লালবাগ, কোতোয়ালী থানা, বংশাল, নবাবপুর, সদরঘাট, তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, শাঁখারী বাজার, চানখারপুল, গুলিস্থানের দক্ষিণ অংশসহ বেশকিছু এলাকার মার্কেট ও দোকানপাট।
নবাবপুর রোড ও নর্থসাউথ রোডের দোকানপাট, ফুলবাড়িয়া মার্কেট, জাকের সুপার মার্কেট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট ও সুন্দরবন স্কোয়ার মার্কেট, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স, স্টেডিয়াম মার্কেট সাপ্তাহিক শুক্রবার বন্ধ থাকার নির্ধারিত দিন। তবে এদিন স্টেডিয়াম মার্কেটের বেশিরভাগ দোকানই খোলা থাকে। কিন্তু এসব এলাকায় ঘুরে বেশিরভাগ দোকান ও শপিংমল খোলা থাকার দৃশ্যই চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্ধরিত বন্ধের দিনেও এসব এলাকার বেশিরবাগ দোকানই খোলা ছিলো। ক্রেতারা যে যার মতো পণ্য কিনছেন। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় জুমআর নামাজের পর থেকেই ক্রেতাদের মার্কেট ও বিপনিবিতানগুলোতে আসতে শুরু করেছেন। অনেক এলাকায় শুক্রবার রাস্তা ফাঁকা থাকার কারণে ক্রেতাদের তাদের গাড়ি রাস্তায় পার্ক করে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। ওয়ারী এলাকায় প্রত্যেকটি শপিংমল ছিলো খোলা এসব দোকান ও মেগামলে ভিড় দেখা গেছে।
এলাকার একে ফেমাস টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় মেগা শপিংমল আড়ং-এর একটি বিশাল শোরুম। এতে অন্য দিনের মতো ক্রেতাদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। আড়ং-এর এক নারী বিক্রয়কর্মী বলেন, তাদের শোরুম সপ্তাহের প্রত্যেকদিনই খোলা থাকে। তাদের কোন নির্ধারিত বন্ধ নেই। শুক্রবারও তাদের এখানে ক্রেতাদের চাপ থাকে।
তবে গতকাল দোকান খোলা ও বন্ধ করা নিয়ে লুকোচুরি খেলা দেখা গেছে গুলিস্তান এলাকায়। গুলিস্তান এলাকার ট্রেড সেন্টার, সুন্দরবন শপিং কমপ্লেক্স, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স বন্ধ থাকলেও বাইরে ছিলো ফুটপাথ ও রাস্তা দখল করে দোকান বসানোর হিড়িক। মাঝে মাঝে পুলিশ এসে ভ্রম্যমাণ দোকনগুলো সরিয়ে দিলেও আবার বসে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। আর গুলিস্তান থেকে ফুলবাড়িয়া রাস্তা জুতা ব্যবসায়ীরা দখল করে রাখতে দেখা গেছে। গুলিস্তান কমপ্লেক্সের সামনের রাস্তাটিও গোলাপশাহ মাজার পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা যানচলাচল বন্ধ করে দিয়ে সাজিয়েছেন দোকান। এতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে পথচারীদের। এছাড়াও ওয়ারীর রোজভ্যালি শপিং কমপ্লেক্স, ইহসান প্লাজা, নবরূপা, নবঞ্জেলা, হ্যান্ডিবাজারসহ সব ধরনের ফ্যাশন হাউজগুলো ছিলো যথারীতি খোলা।
ওয়ারী এলাকার বাসিন্দা রমিজ উদ্দিন বলেন, এই এলাকায় শুক্রবার বন্ধ থাকার কথা থাকলেও কোন নির্ধারিত বন্ধ নেই। সপ্তাহের প্রতিদিনই এলাকার দোকানপাট খোলা থাকে। মাঝে মাঝে গাড়ি ও রিকশার ভিড়ের কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে সপ্তাহে একদিন বন্ধ থাকলে ভলো হতো।
সদরঘাট এলাকার অবস্থা ছিলো অন্য এলাকার মতোই। বিভিন্ন কাপড় ও অন্য সামগ্রীর মার্কেটের মূল ফটকে তালা লাগানো থাকলেও বাইরে দোকানদাররা বসেছেন নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে। এতে করে যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে বাধা।
ব্যবসায়ী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে প্রতি সপ্তাহের একদিন শুক্রবার বন্ধ থাকে। কিন্তু আমাদের পণ্য বিক্রি ও ক্রেতাদের কথা বিবেচনা করে আমরা বাইরে দোকান খোলা রাখি। এতে আমারা আর্থিকভাবে কিছুটা লাভবান হচ্ছি। ক্রেতারা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসটি পেয়ে থাকেন। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজধানীর দোকানপাট

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ