পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মাঝে বেড়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। সব ধরনের কার্ড ও অনলাইন লেনদেন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। এতে বেড়েছে কেনাকাটা এবং আর্থিক লেনদেন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার ফলে ই-কমার্সে লেনদেন অনেক কমে গেছে। তারপরও কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে।
এ ব্যাপারে ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার প্রকোপ কমে আসায় জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। আবার অর্থনীতির কর্মচাঞ্চল্যও ফিরে এসেছে। তাই মানুষ খরচও বেশি করছে। এখনো দেশের বড় অংশের মানুষের ব্যক্তিগত লেনদেন নগদ টাকায় হচ্ছে। পাশাপাশি কার্ডের মাধ্যমেও প্রতি মাসে প্রায় ২৫ থেকে ২৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়, যা আর্থিক খাতের মোট লেনদেনের তুলনায় হয়তো সামান্যই। তবে দিনকে দিন কার্ডে লেনদেন বাড়ছে।
জানতে চাইলে মিডল্যান্ড ব্যাংকের হেড অব কার্ডস আবেদ-উর-রহমান বলেন, করোনার প্রকোপ কমে আসায় জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। আবার অর্থনীতির কর্মচাঞ্চল্যও ফিরে এসেছে। তাই মানুষ খরচও বেশি করছে। এখন আর্থিক লেনদেনে এটিএম, পিওএস, সিআরএমসহ বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার বেশি হচ্ছে। এ কারণে বিভিন্ন ধরনের কার্ডে লেনদেন বেড়েছে।
গ্রাহকদের কার্ডের প্রতি আগ্রহের কথা উল্লেখ করে বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে অনেক গ্রাহক কার্ড নিতে চাইতেন না। এখন অনেকে কার্ডে ঝুঁকছেন। সম্প্রতি কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার কারণে ই-কমার্সে লেনদেন অনেক কমে গেছে। সেটি না হলে কার্ডে লেনদেন আরও বাড়ত।
এ ছাড়া ব্যাংকগুলোও গ্রাহকদের কার্ড এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের প্রতি উৎসাহিত করছে। এতে করে মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম, অনলাইন সিআইবি রিপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড কার্ড, ভিসা কার্ড এবং বিভিন্ন প্রযুক্তির এটিএম বুথের দিকে গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়ছে।
পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ২৯১টি। ২০২১ সাল শেষে সেটা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৯টি। এক বছরের ব্যবধানে কার্ড বেড়েছে ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৫৬৮টি।
কার্ড বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনও। ডিসেম্বরে ডেবিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে ২৪ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। এর আগে কখনো ডেবিট কার্ডে এক মাসে এত লেনদেন হয়নি। ২০২১ সালের পুরোটা সময়ে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ও লেনদেন বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জানুয়ারিতে কার্ড ছিল ২ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৫২৬টি। এসব কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ১৮ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। মার্চ শেষে কার্ডের সংখ্যা বেড়ে হয় ২ কোটি ২৪ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭টি। লেনদেনও বেড়ে হয় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর তিন মাস পর জুন শেষে ডেবিট কার্ড ব্যবহার আরও বাড়ে। এ সময় কার্ড ছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭০২টি। এসব কার্ডে ২১ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বর শেষে কার্ডের লেনদেন ও ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। এ সময় কার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ২ কোটি ৪২ লাখ ২৫ হাজার ১৬৪টিতে, লেনদেন হয় ২২ হাজার ৫২২ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে কার্ড আরও বেড়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৯টিতে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৪ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। যদিও ডেবিট কার্ডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন বাড়েনি। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৭৬ হাজার ৮১৬টি। ২০২১ সাল শেষে সেটা বেড়ে ১৮ লাখ ৭৪ হাজার ৩৬২টিতে দাঁড়িয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে কার্ড বেড়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৪৬টি।
অবশ্য ডিসেম্বরে ক্রেডিট কার্ডে রেকর্ড ২ হাজার ২২৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর আগে কখনো ক্রেডিট কার্ডে এক মাসে এত লেনদেন হয়নি। নভেম্বরে লেনদেন হয় ২ হাজার ৯২ কোটি টাকা। তার আগে লেনদেন কখনো দুই হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেনি। ক্রেডিট কার্ডের বিল সময়মতো দিতে না পারলে জরিমানার পাশাপাশি অনেক বেশি হারে সুদ দিতে হয়। ব্যাংকে সুদহার ৯ শতাংশ হলেও কার্ডের সুদ ২০ শতাংশ পর্যন্ত আছে।
২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্য সব ঋণে সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মানে ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ সুদ হওয়ার কথা ১৪ শতাংশ। তবে এই নির্দেশনাও অমান্য করে অনেক ব্যাংকই বিভিন্নভাবে এর চেয়ে বেশি টাকা আদায় করত।
এতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কোনো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে ২০ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না বলে নতুন নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটি ওই বছর ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়। ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি এক বছরে প্রিপেইড কার্ড ব্যবহারকারী বেড়েছে ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭১৭ জন। ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশে প্রিপেইড কার্ডের গ্রাহক ১১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০১ জন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে যা ছিল ৬ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৪ জন। এর মধ্যে কেবল কার্ডে লেনদেন হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা যা অন্যান্য সময়ের থেকে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশে অ্যামেক্সের সেবা দিয়ে ক্রেডিট কার্ড সেবায় শীর্ষে রয়েছে সিটি ব্যাংক। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সরকারের প্রণোদনা ঋণ ও টিকার কারণে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। মানুষ আবার আগের মতো চলাচল ও খরচ করতে শুরু করেছে। কার্ডভিত্তিক লেনদেনের তথ্য থেকে সেটি পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। গ্রাহকদের খরচে আকৃষ্ট করতে আমরাও ক্রেডিট কার্ডে নানা অফার দিচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।