Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অ্যালার্ট সিস্টেম চালুর নির্দেশ হাইকোর্টের

বিপজ্জনক বায়ু থেকে রক্ষা দেশে বছরে মারা যায় ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুূষ গড় আয়ু কমেছে সোয়া ৫ বছর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৫ এএম

বায়ুদূষণের প্রধান উৎসসমূহ চিহ্নিতকরণ, বায়ুদূষণ হ্রাসে সময়ানুগ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং অস্বাস্থ্যকর, অতি অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক বায়ু থেকে জনসাধারণকে রক্ষায় এ অ্যালার্ট সিস্টেম চালুর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে পোড়া ইটের বিকল্প কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রতিবেদন আদেশ পাওয়ার ৪ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের ডিভিশন বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

রুলে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা সংবিধান ও প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হওয়ায় কেন বেআইনি ও জনস্বার্থবিরোধী ঘাষণা করা হবে না- জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া একটি সময়ানুগ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং বায়ুর মানোন্নয়নের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়েরকৃত রিটের শুনানি শেষে উপরোক্ত আদেশ ও রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রিটের শুনানিতে ‘বেলা’র পক্ষে বলা হয়, ২০২২ সালের শুরু থেকেই বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা প্রায়ই উঠে আসছিল বিশ্বের শীর্ষে। শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত ‘এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে প্রায় পাঁচ বছর চার মাস। ঢাকায় কমেছে প্রায় ৭ বছর সাত মাস। বায়ুর মান বা একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তা খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং তা স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়।

এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। বায়ুর মান ৩০০-এর বেশি থাকা মানে ওই স্থানের বায়ু ‘বিপজ্জনক’, যা সবার জন্য ক্ষতিকর। ডিসেম্বর, ২০২১ এবং জানুয়ারি ২০২২-এ ২-২৩ ঘণ্টা বায়ুর মান ৩০০ থেকে ৪৪৯-এ ছিল। বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়াল অনুযায়ী, জানুয়ারিতে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান শীর্ষে ছিল ৮ দিন। জানুয়ারি, ২০২২-এ ২০ দিনের মধ্যে ১১ দিনই ঢাকা বায়ুদূষণের তালিকায় এক নম্বরে ছিল। এমন পরিস্থিতিতেও কোনোরকম স্বাস্থ্য সতর্কতা ছাড়াই নগরবাসী স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দূষিত বায়ুই সেবন করছে। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) তথ্যমতে, বিগত ৬ বছরে মোট ৩৮ দিন বিশুদ্ধ বাতাস পাওয়া গেছে। অর্থাৎ বছরে ৭ দিনেরও কম বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করতে পারছে ঢাকার মানুষ। বায়ুদূষণ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করে থাকলেও, এ দেশে কখনও কোনো রূপ স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি হয়নি। ফলে বছরে বায়ুদূষণজনিত রোগে অন্তত ১.৫৩ লাখের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।

‘বেলা’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
বিবাদীরা হলেন- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, অর্থ বিভাগের সচিব, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ১৫ জন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্টের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ