পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উবায়দুর রহমান খান নদভী : পাকিস্তান আমলে যখন আইয়ুব খানের সামরিক শাসন চলছিল তখনই প্রথম এ দেশে শরীয়তের আইন পাল্টে অন্যায়ভাবে ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ নামে এক ধরনের আইন জারি করা হয়, যার অশুভ প্রভাব স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও শেষ হচ্ছে না। ‘কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন করা হবে না’, এমন অঙ্গীকার ও নির্বাচনী ইশতেহার দেয়া দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও তার এবারকার প্রায় আট বছরের শাসনামলে স্বৈরাচারী আইয়ুব খান ও পরাজিত পাকিস্তানের অভিশপ্ত এ আইন সংশোধন করেনি। আশা করি এ বিকৃত ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ অবিলম্বে সংশোধন করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের শতকরা ৯৩ জন মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় আইনকে কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক সযতেœ সুরক্ষিত রেখে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা, আইন ও সংবিধান পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। প্রতিবেশী ভারতের কিছু পক্ষের সর্বশেষ কিছু অনধিকার চর্চা, অহেতুক ইস্যু তৈরি ও অনভিপ্রেত মন্তব্যের আলোকে একটি বিষয় আলোচনা করা জরুরি মনে হচ্ছে। যা বাংলাদেশের বাস্তবতায়ও বিশেষ প্রণিধানযোগ্য।
একটি অনলাইন পত্রিকায় জনৈক বাঙালি ব্লগার তরুণীর একটি লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর আরো, অনেকেই এ বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেছেন। ভারতীয় এ তরুণী লিখেছেন, চমক দেখানোয় পটু আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন একে একে কেবল ব্যর্থতাই অর্জন করছেন, যখন দেশব্যাপী নির্বাচনে তার দল কেবলই হারছে, তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির তুলনায় সাম্প্রদায়িক চেহারাই দিন দিন উন্মোচিত করছেন, তখন হঠাৎ করেই তার মুসলিম পার্সোনাল ল’ নিয়ে বক্তৃতা যে নিছক ফাঁপা বুলি এতে কোন সন্দেহ নেই। পাকিস্তান বিরোধী সার্জিক্যাল অপারেশন তিনি প্রমাণ করতে পেরেছেন কী? দিল্লির আপ নেতা কেজরিওয়ালের চ্যালেঞ্জ তো তিনি গ্রহণ করতে পারলেন না। নানা চক্করে, শুধু আমাদের জওয়ানরা মারাই যাচ্ছে। আতঙ্কীরা মারছে, গুলিতে মরছে, গলাকেটে মারা হচ্ছে। গোয়া সম্মেলনেও তো প্রধানমন্ত্রী মোদীর চেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি। তিনি সারা ভারতের উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোর রাশ টেনে ধরতে পারেননি গত কয়েক বছরেও। বন্ধ হয়নি গণধর্ষণ, নারী-শিশু ও বিদেশিনী নির্যাতন। এতসব বাস্তবতার দিকে চোখ না ফিরিয়ে মোদীজি কেন মুসলিমদের পারিবারিক আইন, বিয়ে, তালাক ইত্যাদি নিয়ে সোচ্চার হলেন এটা কোটি কোটি তরুণ-তরুণীর মতই আমাকেও বিস্মিত করেছে।
এ লেখাটির বক্তব্য নিয়ে আমার আলোচনা নয়। কথা হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান তথা উপমহাদেশের ৮০ কোটি মুসলমানের নিজ ধর্ম ও ধর্মীয় অনুশাসন পালনের অধিকার নিয়ে। বিশেষ করে গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদী ভারতের সেক্যুলার সরকার কর্তৃক মুসলমানদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে এ বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রসঙ্গে। ভারত স্বাধীনের পর থেকে ৭০ বছর ধরেই সেক্যুলার ভারত সরকার চেষ্টা করেছে সকল নাগরিকের জন্য অভিন্ন আইন করতে। কিন্তু হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান প্রভৃতি জাতি বা সম্প্রদায় এক এবং অভিন্ন রাষ্ট্রীয় আইন মানতে পারলেও একই রকম ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক তথা ধর্মীয় আইন তারা কীভাবে মানতে পারে, এ বিষয়টি সরকার বোঝার চেষ্টা করেনি। নেহরু, ইন্দিরা, বাজপেয়ী আর মোদী কোন সরকারের আমলেই ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড’ চালুর চেষ্টা থেমে থাকেনি। কোন সরকার যখন সেক্যুলার ও ডেমোক্রেটিক হয়, তখন তার জন্য কি উচিত নাগরিকদের ধর্মীয় বিষয়কে নিয়ে খোঁচাখুঁচি করা বা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার বিনষ্টের উদ্যোগ নেয়া?
ভারত স্বাধীনের পর থেকেই বরং হিন্দু-মুসলমানদের নিজ নিজ ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। যা বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের যুগেও করতে হয়নি। ইংরেজরা ভারতীয়দের নিজ নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে কেবল রাজা ও রাণীর আনুগত্য করেই টিকে থাকতে দিয়েছে। ’৪৭ এর পর শিখদের বলতে হয়েছে যে, আমরা স্বাধীন ভারতের নাগরিক, তবে নিজেদের ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে স্বকীয় পরিচয়ে বেঁচে থাকা আমাদের মানবাধিকার ও সাংবিধানিক সুযোগের মধ্যে পড়ে। তাই তারা রাষ্ট্র ও সমাজের সকল অঙ্গনে তাদের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য নিয়েই বহাল তবিয়তে রয়েছে। পাগড়ি, দাড়ি, কাছা, কাংগন আর কৃপাণ। বড় সেনা অফিসার, আমলা, এক্সিকিউটিভ বা জননেতা যেই হোন শিখ হলে তিনি পাগড়ি, দাড়ি, নেট, কাংগন, কৃপাণ আর কাছা ব্যবহার করতে চাইলেই পারেন। কিন্তু ভারতে একজন ব্রাহ্মণ তার ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সব ক্ষেত্রে চলতে পারেন না। মুসলমান তার ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে, পোশাক নিয়ে, দাড়ি নিয়ে সব ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধাসহ চলতে পারেন না। অথচ স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে না চললে একটি ধর্ম সম্প্রদায় বা জাতি তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না।
হিন্দুদের ব্যক্তিগত পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ধর্মাশ্রয়ী যেসব প্রথা, সংস্কৃতি বা রীতি-রেওয়াজ রয়েছে তার অনুসরণ করা অপর কোন ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। যেমন, মূর্তিপূজা, আরতি, ঠাকুরকে প্রণাম করা, আগুনকে ভক্তি করা, সাতপাক দেয়া, মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো, ফুল ও নানা উপাচার দিয়ে অঞ্জলি প্রদান ইত্যাদি খ্রিস্টান, শিখ, মুসলিম বা অন্য কোন ধর্মে বিশ্বাসী নাগরিকরা করতে পারবে না। ঠিক তেমনি একজন হিন্দুর পক্ষে তার কাজ-কর্মে ওজু করা, নামাজ পড়া, মিলাদ ও দোয়া পড়া, জিকির-তসবি ও তিলাওয়াত করা, গরুর গোশত দিয়ে তৈরি তাবারুক গ্রহণ, আল্লাহর গুণগান করা, রাসূল (সা.)-এর শানে সালাত, সালাম ও দুরূদ পেশ করা সম্ভব নয়। তাই রাষ্ট্র ও সরকার পর্যায়ে ইউনিফর্ম আইন সম্ভব হলেও হতে পারে, কিন্তু ব্যক্তিগত পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ভারতের সকল নাগরিকের জন্য একই আইন চালু কোনদিনও সম্ভব নয়। এটি যৌক্তিক বা স্বাভাবিকও নয়।
প্রায় হাজার বছর যখন মুসলমানরা ভারত শাসন করেছেন, তখন তারা নাগরিকদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে শরীয়তের আইন চাপিয়ে দেননি। এটা ইসলামের রীতিও নয়। সিংহভাগ মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্রেও অমুসলিম নাগরিকদের জন্য রাষ্ট্রীয় সার্বজনীন বিধি-বিধান ছাড়া ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয়সহ অন্যান্য সব ক্ষেত্রে তাদের স্বতন্ত্র ধর্মীয় ও সামাজিক নিয়ম পালনের অধিকার সুনিশ্চিত। সে জন্য ইসলামী রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থায় অমুসলিম নাগরিকদের জন্য তাদের নিজস্ব কম্যুনিটিতে মদ, মূর্তি, শূকরের মাংস, সুদী লেনদেন, এমনকি ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যান্য অবৈধ বিষয়ও অনুমোদিত রয়েছে। অন্যের ধর্মীয় বিষয়ে বাধা-নিষেধ প্রদান বা এসব পরিপালনকারীদের হত্যা, দমন-পীড়ন আধুনিক যুগেও ভারত ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে দেখা যায়। কিন্তু ইসলাম তার দেড় হাজার বছরের ইতিহাসে কোনদিন অমুসলিম নাগরিকদের কোন অধিকারে হস্তক্ষেপ করেনি। মুসলমানরাও বিশ্বের সর্বাপেক্ষা অধিক উদার ও অসাম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে ইতিহাসে এবং বাস্তবক্ষেত্রে প্রমাণিত। আধুনিক ভারতে গরু জবাই তথা মুসলমানদের অবশ্যপালনীয় ইবাদত কোরবানী করার ক্ষেত্রে যে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, ধর্মীয় বাধা এর নজির মুসলিম বিশ্বের কোথাও পাওয়া যাবে না। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা পার্বণ ও অন্যান্য রীতি-সংস্কৃতি যে শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পালনের ঐতিহ্য রয়েছে তা বিশ্বধর্মীয় সম্প্রদায়ের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার উপযুক্ত। যে কোন নীতিবান, ন্যায়নিষ্ঠ, বাস্তববাদী মানুষই এ বিষয়ে একমত হবেন। যদিও মূর্তিপূজা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিকট এটি পূণ্যের কাজ হওয়ায় প্রকৃত মুসলিমরা এর পথে কোন বাধা-বিপত্তির চিন্তাও করে না।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ক্ষেত্রে সব ধর্মাবলম্বী নিজস্ব নীতি-নিয়ম ও ধারা-সংস্কৃতি পালনের অধিকার গণতন্ত্র ও সেক্যুলারিজমের প্রবক্তা ভারতে নিশ্চিত হওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু মুসলমানদের পার্সোনাল ল’ বা শরীয়া আইন নিয়ে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ বারবার প্রায় ৪০ কোটি ভারতীয় মুসলমানদের জন্য চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। সর্বশেষ মুসলমানদের দাম্পত্য জীবনের অবসান আইন তথা তালাক প্রথা নিয়ে স্বয়ং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী জবরদস্তিমূলক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার পক্ষে বক্তব্য দিয়ে বিশ্বমুসলিমের অন্তরে আঘাত দিয়েছেন। যা ভারত রাষ্ট্রের কর্ণধারের মুখে বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমান আশা করেনি।
কোন কোন ধর্ম এমন আছে, যেখানে বিয়ে-শাদি একটি চিরন্তন বন্ধন। যা মৃত্যু ছাড়া ছিন্ন হয় না। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, অমিল জুটি ও অসফল দম্পতি একে অপরকে প্রতারিত করছে, বিষময় জীবনযাপন করে নিজেদের কষ্ট দিচ্ছে কিংবা একে অপরকে কৌশলে প্রাণে মেরে ফেলার মধ্য দিয়ে মুক্তি লাভের চেষ্টা করছে। বিবাহবন্ধন ছিন্ন করার ব্যবস্থা রাখা হয়নি এমন ধর্ম ও সংস্কৃতিতে অসফল অসুখী দাম্পত্যের পরিণাম এসব ছাড়া আর কী হতে পারে? যেসব দেশে কেরোসিন ও পেট্রোল ঢেলে কোটি নারীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হয়, সেখানে ইসলামের তালাক পদ্ধতি হতে পারে অপূর্ব মানবিক ব্যবস্থা। কেবল নারী শিশু জন্মরোধ করার জন্যে এখন কোটি কোটি ভ্রুণ হত্যা করা হয়। এক সময় স্বামীর চিতায় নারীর সহমরণ বা জীবন্ত কন্যা শিশু মাটিচাপা দিয়ে হত্যার পথ এখন লোকেরা ছাড়লেও নারীকে আগুনে জ্বালিয়ে মারা আর ভ্রুণ হত্যা সেই পৈশাচিকতার স্থান দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, শত সহস্র গুণ বেশি সংখ্যায় এসব সংঘটিত হচ্ছে। মুসলমানদের বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ইত্যাদি পার্সোনাল ল’ নিয়ে বিরূপ সমালোচনার আগে সংশ্লিষ্টদের আলোচিত প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে।
ভারতে বহু বছর আগে শাহবানু মামলা নিয়ে ব্যাপক হইচই হয়। তালাক প্রাপ্তা নারীকে আজীবন খোরপোশ দেয়ার আইন ও হাইকোর্টের রায় নিয়ে মুসলমানরা সোচ্চার হন। লাখো নারী প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। যে ব্যক্তির সাথে একজন নারীর সংসার করা হয়ে ওঠেনি, আমৃত্যু তার খোরপোশ খেয়ে যাওয়া কোন আত্মমর্যাদাশালী নারীর পক্ষে শোভা পায় না। এ ধরনের একটি বক্তব্যেই শাহবানু মামলা তখন ডিসমিস হয়ে যায়। এখন চলছে তিন তালাক দিলেও তালাক পূর্ণ হবে না। স্বামী ঘৃণাকরে পরিত্যাগ করলেও নারী জোর করেই তার ঘর করতে থাকবে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে এক ধরনের ইসলামবিরোধী এনজিও ও সরকারের ভেতরকার একটি সংকট সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী। ইসলামের তালাকের পদ্ধতি সুস্পষ্ট। এনিয়ে মুসলমানদের মধ্যে কোন বিভ্রান্তি বা সংশয় নেই। ভারতের হায়দারাবাদে ২৫ হাজার পর্দানশীন নারী তালাক প্রথার উপর ভিন্নদর্শীদের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। মুসলমানদের বিয়ে, তালাক কী ভাবে হবে তা ঠিক করবেন মুসলমানরাই। শরীয়ত তাদের স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে। এ নিয়ে রাষ্ট্র, সরকার, বিচারালয় বা সুশীল সমাজের কী বলার থাকতে পারে, এটাই মুসলমানদের সামনে স্পষ্ট নয়। এ ধরনের একটি স্রোত শতকরা ৯৩ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত বাংলাদেশেও উঠতে দেখা যাচ্ছে। যারা বলতে চাইছেন, বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য একই ধরনের সামগ্রিক আইন চালু করতে হবে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সব ক্ষেত্রেই সব নাগরিক এক রকম বিধান মানতে বাধ্য। এরই নাম ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড’। এ ধরনের নিবর্তন মূলক অন্ধকার আইন কোন গণতান্ত্রিক সমাজে চিন্তাও করা যায় না। এ সব আইন স্বৈরতন্ত্র, অতীতের নাস্তিক্যবাদী ধর্মহীন সমাজতন্ত্র, সাধারণতন্ত্র বা ফেরাউনী আইনে দেখা গেছে। বিপ্লবের মাধ্যমে সব নাগরিককে একই সংস্কৃতিতে জবরদস্তি দাখিল করার নির্যাতনমূলক আইনে এমন চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সর্বত্রই তা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক ও সেক্যুলার ব্যবস্থায় কেন এমন অবাস্তব চিন্তা, সেটাই জিজ্ঞাস্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।