পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার অফিস : চরম হতাশ এখন কক্সবাজার-৪, উখিয়া-টেকনাফের দাপুটে এমপি আব্দুর রহমান বদি। দুর্নীতির মামলায় তিনি এখন কারাগারে। সংসদ সদস্য পদও তিনি হারাতে পারেন। এতে করে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগও হারাতে পারেন। এই দুর্দিনে সুবিধাভোগিরাও কেউ নেই তার পাশে।
দুর্নীতির দায়ে কারাদ-ের পাশাপাশি এবার সংসদ সদস্য পদও হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে আবদুর রহমান বদির। এর ফলে বহুল আলোচিত-সমালোচিত এমপি বদির ভবিষ্যৎ রাজনীতি অন্ধকারে পতিত হলো বলেই মনে করছেন অনেকে।
বুধবার দুদকের মামলায় উচ্চ আদালত তাকে তিন বছর কারাদ- এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদ- দেয়ায় আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারবেন কি না এনিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। বিশেষজ্ঞদের মতে সংবিধান ও জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কারণে দ-প্রাপ্ত হয়েছেন। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ রয়েছে তার।
এপ্রসঙ্গে সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, তিনি যদি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া কমপক্ষে দুই বৎসরের কারাদ-ে দ-িত হন এবং তাহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’
আর জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধিতে বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোন সংসদ সদস্যকে তাহার পদে থাকার অযোগ্য মনে হইলে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ বিষয়ে জানানোর জন্য স্পিকার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে চিঠি দিবেন’।
এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এড. ফজলে রাব্বির উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অনৈতিক কারণে কোন সংসদ সদস্যের সাজা হলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে। তাছাড়া কোনো সংসদ সদস্যের যদি দুই বছরের বেশি সাজা হয় তাহলেও তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হতে পারে।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে তিন বছরের কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে।
তবে জাতীয় সংসদ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এমপি বদির সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে কিনাÑ এটা এখনো বলা যাচ্ছে না। কারণ তিনি যদি আপিল করে জিতে যান তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে না। আপিলে হেরে গেলে কিন্তু তিনি সব হারাবেন।
বুধবার ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহম্মদ জমাদার এ রায় ঘোষণা করেন। বদির ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪২৩ টাকার সম্পদ গোপন করার অপরাধে দুদক আইনের ২০০৪ সালের ২৬(২) ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এই কারাদ- প্রদান করা হয়।
হতাশ বদি পরিবার
জানা গেছে, রায় শোনার পর অপমানে আদালতেই কেঁদেছিলেন সরকারদলীয় এমপি আবদুর রহমান বদি। বুধবার দুদকের দায়ের করা মামলায় তাকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহম্মদ জমাদার। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। এতে চরমভাবে হতাশ হয়েছে উখিয়া-টেকনাফের সরকার দলের দাপুটে এমপি আব্দুর রহমান বদি। সরকারের অনেক বড় বড় নেতা এবং আমলারা নাকি তার কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বিপদের সময় পাশে দাঁড়ায়নি। মামলা শাস্তি হওয়া পর্যন্ত না গড়ানোর কথা দিয়েও নাকি তারা কথা রাখেনি।
বিএনপি ছেড়ে টেকনাফ-উখিয়াতে নিজের মান-সম্মান ও টাকা কড়ি উজাড় করে দিয়ে এমপি বদি নৌকার কা-ারী হয়ে আওয়ামী লীগকেই শক্তিশালী করেছেন। সেই আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা-কর্মীরাও আজ তার পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি উখিয়া-টেকনাফে এমপি বদিকে কেন্দ্র করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে এমন নেতা-কর্মীর সংখ্যাও কম নেই। কিন্তু এখন তাদের কাউকে দেখা যাচ্ছে না বদির পাশে। তার বিপদের সময় বদির পক্ষে কথা বলতেও তাদের কেউ নেই। রায় ঘোষণার পর উখিয়ায় (বদির শ^শুর বাড়ি বলেই) সড়ক অবরোধ হয়েছে। আর টেকনাফে ছোট খাট একটি প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে মাত্র। বৃহস্পতিবার বড়সড় সামাবেশের ঘোষণা দিয়েও পিছিয়ে গেছে যুবলীগ।
এদিকে এমপি বদির পরিবারের সদস্যরা মনে করেন, বদি কোন দুর্নীতি করেননি। দলীয় কোন্দল ও গ্রুপিং এর শিকার হয়ে তাকে আজ কারাগারে যেতে হয়েছে। দলীয় কিছু লোকজন ছাড়া উখিয়া-টেকনাফের সাধারণ জনগণ বদিকে ভালবাসে। তারা এই শাস্তি বদির উপর অবিচার বলে মনে করেন। তারা আরো জানান, তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উচ্চ আদালতে বদি মুক্তি পাবেন।
ওদিকে টেকনাফে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা বদির পক্ষের প্রতিবাদ সভা ও মিছিলে না যেতে দলীয় নেতা-কর্মীদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।