Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্রোধের আগুন ঢেলে দিন জিহাদ দুর্বল করা যাবে না

ইন্টারনেটে বাগদাদির সমর্থকদের প্রকাশ করা অডিও বার্তায় আহ্বান

প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মসুলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মত এক অডিও বার্তায় বিজয়ের আত্মবিশ্বাসের কথা বলেছেন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদি। তিনি বলেন, কোনভাবেই জিহাদকে দুর্বল করা যাবে না, ক্রোধের আগুন ঢেলে দিন, লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইন্টারনেটে বাগদাদির সমর্থকদের প্রকাশ করা ওই অডিও বার্তায় তিনি তুরস্ক দখল করার জন্য আইএস যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানান। বাগদাদি বলেন, এই উন্মত্ত লড়াই ও পূর্ণ যুদ্ধ এবং যে মহান জিহাদে আজ ইসলামি রাষ্ট্রটি লড়াই করছে তা শুধু আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস বাড়িয়ে তুলছে, আল্লাহর ইচ্ছায় এবং আমাদের বিবেচনায় এর সবই বিজয়ের পূর্ব লক্ষণ। তবে ৩১ মিনিট দীর্ঘ রেকর্ডকৃত এই বার্তাটির সত্যাসত্য নির্ধারণ করা যায়নি। এর আগে বাগদাদির বলে দাবি করা সর্বশেষ বার্তাটি ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই বার্তায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা সিরিয়ায় আইএসকে দুর্বল করতে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে নিজের অনুসারী ও সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি। এবারের বার্তায় তিনি আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদকে দুর্বল হতে না দিতে নিনেভ প্রদেশের (মসুল এই প্রদেশের প্রধান শহর) জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। আইএসের আত্মঘাতী যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিশ্বাসীদের রাতগুলোকে দিনে পরিণত করুন, তাদের ভূমিকে মরুভূমিতে পরিণত করুন এবং তাদের রক্তে নদী বইয়ে দিন। গত ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের স্থল ও বিমান হামলার সমর্থন নিয়ে মসুল অভিযান শুরু করে ইরাকি বাহিনীগুলো। ২০০৩ সালে ইরাকের মার্কিন অভিযানের পর থেকে দেশটিতে এটিই বৃহত্তম সামরিক অভিযান। দুই বছর আগে ইরাক ও সিরিয়ার অনেকগুলো শহর দখল করে নেয় আইএস। এগুলোর মধ্যে মসুল অন্যতম। শহরটিতে ১৫ লাখ মানুষের বাস। আইএসের দখলকৃত অন্য যে কোনো শহরের চেয়ে এখানে অনেক বেশি মানুষ বাস করে। সিরিয়ায় আইএসের সঙ্গে লড়াইরত তুর্কি বাহিনীর ওপর ক্রোধের আগুন ঢেলে দিতে এবং লড়াই তুরস্ক পর্যন্ত নিয়ে যেতে যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানান বাগদাদি। তিনি বলেন, তুর্কি আজ আপনাদের কার্যক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে এবং জিহাদকে লক্ষ্যস্থল বানিয়েছে, তাই তুরস্ক দখল করুন এবং তাদের নিরাপত্তাকে আতঙ্কে পরিণত করুন। নিজের অনুসারীদের সউদি আরবে একের পর এক হামলা চালানোর আহ্বান জানান তিনি। এসব হামলায় নিরাপত্তা বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন আল সউদ পরিবারের সদস্য এবং গণমাধ্যমগুলোকে লক্ষ্যস্থল করার নির্দেশ দেন তিনি। আবু মুহম্মদ আল আদনানি এবং আবু মুহাম্মদ আল ফুরকানের মতো আইএসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মৃত্যুতে খিলাফত ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। গত বছর ইরাক ও সিরিয়া, উভয় দেশে বিভিন্ন বাহিনীর অভিযানের মুখে পিছু হটতে শুরু করে আইএস। এখন ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ইরাকি সরকারি বাহিনী, কুর্দি পেশমেরগা বাহিনী ও ইরানি সমর্থিত শিয়া বেসামরিক বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। অপরদিকে সিরিয়ায় গোষ্ঠীটি, রাশিয়া ও ইরান সমর্থিত সিরীয় সেনাবাহিনী এবং বিদেশি শিয়া বেসামরিক বাহিনী, তুর্কি সমর্থিত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী এবং যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ডিপিএ,ওয়েবসাইট।                                                               
মসুলেই আছেন বাগদাদি
ইনকিলাব ডেস্ক :  ইরাকের মসুল শহরেই ইসলামিক স্টেটের শীর্ষ নেতা ও স্বঘোষিত খলিফা আবু বকর আল বাগদাদি আছেন। গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে এক ঊর্ধ্বতন কুর্দি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গত বুধবার মসুল শহরের ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে ইরাকি সেনা ও কুর্দি পেশমারগা বাহিনী। তবে শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে এখনো অনেক সময় লাগবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গত ১৭ অক্টোবর ইরাকি সেনা ও কুর্দি পেশমারগা বাহিনী মসুল অভিযান শুরু করেছে। আর তাদেরকে বিমান হামলার মাধ্যমে সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট। কুর্দি প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানির চিফ অব স্টাফ ফুয়াদ হুসেইন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্টকে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাগদাদি মসুলে আছেন এবং তাকে হত্যা করা সম্ভব হলে আইএসের গোটা খিলাফত ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। বাগদাদির মৃত্যু হলে আইএসকে যুদ্ধের মাঝেই নতুন খলিফা নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু বাগদাদির মত কর্তৃত্ব ও মর্যাদাসম্পন্ন কোনো উত্তরসূরি তাদের মিলবে না। ২০১৪ সালের জুনে মসুল শহর দখলে নিয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছিলেন বাগদাদি। ফুয়াদ হুসেইন জানান, বাগদাদি গত ৮/৯ মাস ধরে আত্মগোপন করে আছেন। মসুল ও এর পশ্চিমের তাল আফার শহরের কমান্ডারদের ওপর খলিফা অনেক বেশি নির্ভরশীল। ২০১৪ সালের যুদ্ধে উত্তর ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের প্রাথমিক জয়ের পর সংগঠনের প্রভাবশালী বিশেষ করে সিরিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা নেতারা নিহত হয়েছেন। মসুলে বাগদাদির অবস্থানের কারণে এ লড়াই আরও দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল হওয়ার আশঙ্কা আছে। কারণ বাগদাদির সমর্থকরা তাকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টায় লড়ছে। তিনি বলেন, তারা হারবে এটি পরিষ্কার। তবে এর জন্য কত সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না। ইন্ডিপেনডেন্ট।
                     



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রোধের আগুন ঢেলে দিন জিহাদ দুর্বল করা যাবে না
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ