Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ওবায়দুল কাদেরসহ ৯ নেতার সংবর্ধনা ১২ নভেম্বর

আ’লীগের নতুন কমিটির নেতাদের ঘিরে চট্টগ্রামে মেরুকরণ শুরু

প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া নয় নেতাকে ঘিরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে শুরু হয়েছে নয়া মেরুকরণ। পদ প্রত্যাশী নেতাদের প্রায় সবাই কাক্সিক্ষত পদ পেয়েছেন। এতে খুশি ওইসব নেতা ও তাদের অনুসারীরা। আগে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন তাদের প্রায় সবাই নতুন কমিটিতে বহাল রয়েছেন। এতে তাদের অনুসারীরাও দারুণ খুশি।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রাম থেকে এবার বিপুলসংখ্যক নেতা কেন্দ্রে ঠাঁই পেয়েছেন। এর ফলে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও বেশি সুসংহত হবে। কেউ আবার নেতায় নেতায় চলমান কলহ-বিরোধ বাড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। কয়েকজন নেতা কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়া নিয়েও তৃণমূলে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ দু’টি এখনও শূন্য। ওই পদে চট্টগ্রাম থেকে মহিউদ্দিন চৌধুরী আসতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে তার অনুসারীদের মধ্যে। প্রবীণ এ আওয়ামী লীগ নেতা আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী ফোরামে ঠাঁই পাবেন এমন প্রত্যাশা তার সমর্থকদের। তবে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পাওয়ায় খুশি মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক ও অনুসারীরা। দীর্ঘদিন পর তাদের মধ্যে ফিরে এসেছে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য।
এদিকে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নয় সদস্যকে আগামী ১২ নভেম্বর লালদীঘির ময়দানে সংবর্ধনা দেয়া হবে। সংবর্ধনা সফল করতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সংবর্ধনাকে ঘিরে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী সমর্থকদের সমবেত করতে চায় আওয়ামী লীগ।
বড় ধরনের শোডাউনের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটির নেতাদের অভিনন্দন জানানো হবে। আর সেইসাথে কাউন্সিলে দেয়া দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনমুখী কর্মকা-েরও সূচনা করতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, সংবর্ধনা সভাকে জনসভায় পরিণত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে। প্রথমবারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা জানানো হবে। তার সামনে নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য আর জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেখাতে চান মহানগর ও জেলা নেতারা। আর এ লক্ষ্যে নিজ নিজ অনুসারী ও কর্মী-সমর্থকদের ওইদিন লালদীঘি ময়দানে জড়ো করার নানা প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন তারা।
আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির উপদেষ্টা পরিষদে এবারও স্থান পেয়েছেন তিনজন। গত কমিটিতেও তারা উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন। তারা হলেন- বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ ইসহাক মিঞা, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন এবং ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া। সভাপতিম-লীতে দ্বিতীয়বারের মত স্থান পেয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এবারের কমিটিতেও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। আগের কমিটিতেও তিনি একই পদে ছিলেন। আগের কমিটির সদস্য পদ থেকে এবার পদোন্নতি পেয়ে উপ-প্রচার সম্পাদক হয়েছেন আমিনুল ইসলাম আমিন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদ পেয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার ও তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে নগর কমিটির সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
গত কমিটিতে সদস্য পদে থাকা ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ নতুন কমিটিতে ঠাঁই পাননি। সম্মেলনের আগে তার অনুসারীদের প্রত্যাশা ছিল তিনি গুরুত্বপূর্ণ কোন পদে আসতে পারেন। কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় তারা এখন হতাশ। কেন্দ্রীয় কমিটিতে তার ঠাঁই না হলেও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।
দক্ষিণ জেলার বর্তমান সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন জাবেদ। দলীয় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তার বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেন তিনি। এ নিয়ে দলের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি রয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের ধারণা আগামী সম্মেলনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে পরিবর্তন আসতে পারে। গত কমিটির বিভাগীয় সম্পাদক বীর বাহাদুর নতুন কমিটিতে স্থান পাননি।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র নওফেল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা দারুণ চাঙ্গা। তবে তার বিরোধী হিসেবে পরিচিতদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নওফেলকে ঘিরে নগর আওয়ামী লীগে নতুন মেরুকরণ হচ্ছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বিরোধ দীর্ঘদিনের। নওফেলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়াকে ভালোভাবে নিতে পারছে না মেয়রের অনুসারীরা। আবার মেয়রের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। গত কয়েকদিনে নগরীর আগ্রাবাদ ও আন্দরকিল্লায় দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। আগ্রাবাদের ঘটনায় প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেছে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। ঢাকায় হকার উচ্ছেদের ঘটনায় প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার ও মামলার মুখে পড়ে দুই ছাত্রলীগ নেতা। চট্টগ্রামে যারা এমন অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র কি ব্যবস্থা নেয় সেদিকেই এখন দৃষ্টি সবার।





 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৯ নেতার সংবর্ধনা ১২ নভেম্বর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ